মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা নিয়ে চলতে থাকা বিতর্ক এবং হিংসাত্মক ঘটনার প্রেক্ষিতে ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “হিংসা ভুল। এটা একেবারেই ভুল। আমাদের দেশে ভাষা নিয়ে কোনও বিতর্ক হওয়া উচিত নয়। প্রত্যেকে নিজেদের ভাষাকে ভালোবাসে। আমাদের দেশের ভাষাগুলি বোনের মতো। কারও মনে যদি কোনও দুরভিসন্ধি থাকে, তবে সেটা ভিন্ন ব্যাপার।”
শর্মার (Chhattisgarh) এই মন্তব্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি বনাম মারাঠি ভাষা বিতর্কের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছে। মহারাষ্ট্রে সম্প্রতি হিন্দি ভাষাকে প্রাথমিক স্কুলে তৃতীয় ভাষা হিসেবে চালু করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ দেখা গেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে মারাঠি ভাষার প্রাধান্য নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে। ভাষা বিতর্ককে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ২০ বছর পর রাজ উদ্ধব কে আবার একসাথে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে দেখা গেছে।
মহারাষ্ট্র (Chhattisgarh) নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) এবং শিবসেনা (ইউবিটি)-এর মতো দলগুলি এই নীতির বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছে। এই বিতর্ক শুধু রাজনৈতিক স্তরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং মুম্বই এবং থানের মতো এলাকায় মারাঠি না বলার জন্য ব্যক্তিদের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, থানের ভাইন্দারে একজন দোকানদারকে এমএনএস কর্মীরা মারাঠি না বলার জন্য মারধর করেছে। এই ঘটনাগুলি ভাষার নামে হিংসার উদ্বেগজনক প্রবণতাকে তুলে ধরেছে।
মহারাষ্ট্রের (Chhattisgarh) মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস এই হিংসার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “মারাঠি ভাষার প্রতি গর্ব করা ভুল নয়, কিন্তু ভাষার নামে গুন্ডামি কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না।” তিনি এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ফড়নবিস আরও বলেন, “ইংরেজি ভাষাকে অনেকে গ্রহণ করে, কিন্তু হিন্দি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। এটা কী ধরনের মানসিকতা?” তিনি মারাঠি ভাষাকে শিক্ষা ও সেবার মাধ্যমে প্রচারের উপর জোর দিয়েছেন।
ছত্তিশগড়ের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে একটি শান্তিপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। তিনি ভাষাগুলিকে ‘বোনের মতো’ তুলনা করে বলেন, ভাষার নামে বিতর্ক বা হিংসা অগ্রহণযোগ্য। তাঁর মতে, ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যে ভাষাগুলি একত্রে থাকার প্রতীক। তিনি এও বলেন, যদি কেউ ভাষার নামে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে, তবে তা তাদের দুরভিসন্ধির প্রকাশ।
শর্মার (Chhattisgarh) এই মন্তব্য ভাষার নামে হিংসা ও বিভাজনের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট অবস্থান তুলে ধরে।রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ামহারাষ্ট্রে এই বিতর্ক রাজনৈতিক রঙ নিয়েছে। শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত স্পষ্ট করেছেন যে, তাঁদের দল হিন্দি ভাষার বিরোধী নয়, বরং প্রাথমিক স্কুলে এটিকে বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “আমাদের লড়াই হিন্দির বিরুদ্ধে নয়, বরং স্কুলে এটি জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে।” তিনি তামিলনাড়ুর হিন্দি-বিরোধী অবস্থান থেকে মহারাষ্ট্রের অবস্থানকে পৃথক করেছেন।
এদিকে, উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে যৌথভাবে একটি ‘বিজয় সমাবেশ’ আয়োজন করে হিন্দি ভাষা নীতির প্রত্যাহারকে মারাঠি ভাষার জয় হিসেবে উদযাপন করেছেন। রাজ ঠাকরে বলেন, (Chhattisgarh) “আমি হিন্দির বিরুদ্ধে নই, কিন্তু মহারাষ্ট্রে মারাঠি ভাষার প্রাধান্য থাকা উচিত।” তিনি উত্তর প্রদেশ বা বিহারের মতো রাজ্যে তৃতীয় ভাষা হিসেবে কী পড়ানো হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তীব্র বিরোধিতার মুখে মহারাষ্ট্র সরকার হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে চালু করার দুটি সরকারি সিদ্ধান্ত (জিআর) প্রত্যাহার করেছে। (Chhattisgarh) মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবিস শিক্ষাবিদ নরেন্দ্র জাধবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা করেছেন, যারা ভাষা নীতি পর্যালোচনা করে মারাঠি ভাষা এবং ছাত্রদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে। এছাড়া, সরকার ৩ অক্টোবরকে ‘অভিজাত মারাঠি ভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা মারাঠি ভাষার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।
মহারাষ্ট্রে (Chhattisgarh) ভাষা বিতর্ক সামাজিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। পুনের দোকানদাররা জানিয়েছেন, তারা মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রাখেন, কিন্তু ভাষা না বলার জন্য হামলার ভয়ে আছেন। এই ঘটনাগুলি ভাষার নামে বিভাজন সৃষ্টি করছে, যা রাজ্যের সামাজিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দেশে ক্রমবর্ধমান আর্থিক বৈষম্য নিয়ে বিস্ফোরক গড়করি
বিজয় শর্মার (Chhattisgarh) মন্তব্য ভারতের ভাষাগত বৈচিত্র্যকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি ভাষাগুলিকে বোনের মতো তুলনা করে এই বিতর্ককে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। মহারাষ্ট্রে হিন্দি-মারাঠি বিতর্ক এবং সংশ্লিষ্ট হিংসা দেশের ভাষাগত সম্প্রীতির উপর প্রশ্ন তুলেছে। সরকার এবং সমাজের উপর এখন দায়িত্ব রয়েছে এই বিভেদ কমিয়ে সকল ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।