বাংলা জুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার বাতাবরণ (Domjur)। মোথাবাড়ি, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা সর্বত্রই সাম্প্রদায়িক হিংসা প্রত্যেকদিনের রোজনামচা। ঠিক এরকমই আরেকটি ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল ডোমজুড় (Domjur)। হাওড়ার ডোমজুড়ের সলপ এলাকায় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার উপর হামলার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণ রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বারবার আক্রান্ত হচ্ছে এবং পুলিশ ও প্রশাসন এই ধরনের ঘটনায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।
শনিবার সন্ধ্যায় হাওড়ার সলপ (Domjur) এলাকায় শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রার সময় একদল ব্যক্তি, যাদের শুভেন্দু অধিকারী ‘বিধর্মী’ বলে উল্লেখ করেছেন, বিনা প্ররোচনায় রথের উপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আক্রমণকারীরা লাঠি, বাঁশ, ইঁট, পাথর এবং টিউব লাইট নিয়ে রথযাত্রার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এই হামলায় রথের কিছু অংশ ভাঙচুর (Domjur) হয় এবং কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন যে, এই ঘটনা ঘটার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারী ভক্তদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি এই ঘটনাকে প্রশাসনের ‘দলদাস’ মনোভাবের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স পোস্টে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “মমতা ব্যানার্জীর ভোটব্যাঙ্কের তোষণ রাজনীতির শিকার হয়ে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা নিজেদের ধর্মাচরণ করতে গিয়ে বারবার আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রশাসন সম্পূর্ণ দলদাসে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন যে, গত ৪০ বছর ধরে সলপের (Domjur) একই রাস্তা দিয়ে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে হয়ে আসছে, কিন্তু এবারের এই হামলা রাজ্যের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার উপর কলঙ্ক লাগিয়ে দিয়েছে । তিনি হিন্দু সম্প্রদায়কে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রাজ্যে অবিলম্বে হিন্দুরা একজোট না হলে সমূহ বিপদ।”
এই ঘটনাকে (Domjur) তিনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মুসলিম তোষণ’ নীতির ফল হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা তাঁর মতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকারের উপর আঘাত হানছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলার সময় রথযাত্রায় অংশগ্রহণকারী ভক্তরা হতবাক হয়ে পড়েন। অনেকে এই ঘটনাকে ধর্মীয় উৎসবের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ হিসেবে দেখছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরে রথযাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়ে আসছে, কিন্তু এবারের ঘটনা ভীতি উদ্রেককারী ।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং, ভক্তদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এই ঘটনা (Domjur) রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিজেপি নেতারা এই হামলাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ‘পরিকল্পিত আক্রমণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা দাবি করছেন যে, তৃণমূল সরকারের তোষণ নীতির কারণে হিন্দু ধর্মীয় উৎসবগুলি বারবার হামলার শিকার হচ্ছে।
অন্যদিকে, (Domjur) তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে, এই ধরনের ঘটনা স্থানীয় স্তরে বিশৃঙ্খলার ফল এবং এর সঙ্গে সরকারের নীতির কোনও সম্পর্ক নেই।সামাজিক প্রভাব ও হিন্দু ঐক্যের আহ্বানএই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে উল্লেখিত ‘হিন্দু একজোট’ এর আহ্বান সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। অনেকে মনে করছেন যে, এই ধরনের ঘটনা রাজ্যে ধর্মীয় সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। হাওড়ার সলপে জগন্নাথ দেবের রথে হামলার ঘটনা কেবল একটি ধর্মীয় উৎসবের উপর আক্রমণই নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি জটিল চিত্র তুলে ধরেছে।
ভারতের ‘গাইডেড পিনাকা’-র ভক্ত এই বড় দেশগুলি, বহরে যুক্ত করে শত্রুদের অহংকার করবে দূর
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ এবং তাঁর তোষণ রাজনীতির সমালোচনা রাজ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। (Domjur) এই ঘটনার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জোরালো হয়েছে, এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।