নদিয়া: পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নদিয়ার শান্তিপুরে আরও এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আবারও এক সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer)। মহিলাকে হেনস্থা, অপমান ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। ফলস্বরূপ, আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি মৃতার পরিবারের।
ঘটনা শান্তিপুর থানার অন্তর্গত নৃসিংহপুর মধ্যপাড়া এলাকার। বৃহস্পতিবার ভোরে প্রতিবেশী এক সিভিক ভলান্টিয়ারের (Civic Volunteer) বাড়িতে ফুল তুলতে যান বছর পঁইত্রিশের এক গৃহবধূ। অভিযোগ, তা দেখে ফেলেন সেই ভলান্টিয়ার এবং সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় গালিগালাজ। এখানেই শেষ নয়। মহিলার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে গাছে বেঁধে রেখে কান ধরে উঠবস করানো হয়, যা দেখতে পান স্থানীয়রাও। প্রকাশ্যে এমন অপমানের পর গভীর মানসিক আঘাত পান ওই মহিলা।
পরিবারের দাবি, ওই ঘটনার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। শনিবার ভোরবেলা তাঁকে বাড়ির একাংশে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের লোকজন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় শান্তিপুর থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পরিবারের আরও অভিযোগ, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer) দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় দাদাগিরি চালিয়ে আসছিল। পুলিশের নাম করে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানো, অনৈতিক আচরণ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মৌখিক অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ায় স্থানীয় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার সঙ্গে হুবহু মিলে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার ঘটনা, যেখানে চিপস চুরির অপবাদে এক স্কুলপড়ুয়া খুদের গায়ে হাত তোলে সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer)। সেখানেও অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিল ছেলেটি। দুই ঘটনাতেই পুলিশি ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ।
শান্তিপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের (Civic Volunteer) খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে এখনও অধরা অভিযুক্ত। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। মৃতার পরিবার অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে।
এই ঘটনাগুলি দেখাচ্ছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteer) কিছু অংশের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। যাঁদের দায়িত্ব সমাজ রক্ষা করা, তাঁদের হাতেই যদি হয় অপমান, তা হলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা?
উচ্চ পর্যায়ে নজরদারি ও কড়া ব্যবস্থা না হলে, একের পর এক এই ধরনের ঘটনাই বারবার প্রমাণ করে দেবে, আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই। শান্তিপুরের এই ঘটনার দ্রুত ও কঠোর বিচারই এখন দাবি গোটা জেলার মানুষের।