লখনউ: ফের মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার (Road Accident) সাক্ষী হল উত্তরপ্রদেশ। বিয়ের আনন্দ মুহূর্তে পরিণত হল বিষাদে। সম্ভল জেলার গোবিন্দপুর থেকে বদায়ুনের শিরটৌল গ্রামে কনের বাড়ি যাচ্ছিল বরযাত্রীদের গাড়ি। সেই সময় ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। একটি এসইউভি আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে একটি কলেজের সীমানা পাঁচিলে। প্রাণ হারালেন ৮ জন, গুরুতর আহত ২।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়িটির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল এবং সম্ভবত চালক হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। গাড়িটি ধাক্কা মারার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর যায় পুলিশ ও মেডিক্যাল টিমে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এবং অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছয় ঘটনাস্থলে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। বাকিদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় আরও তিনজন মারা যান। আহত অবস্থায় রয়েছেন আরও দু’জন। তাঁদের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হওয়ায় আলিগড় মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এই দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পাত্র সুরজ (বয়স ২৪)। সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছে দুটি শিশুও, যাদের বয়স মাত্র ২ ও ৬ বছর। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার জেরে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। যেখানে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল জোরকদমে, সেখানে এখন কান্নার রোল।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রোো তিনি লেখেন,
“উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় মর্মাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, প্রতিটি নিহতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে।
সম্ভল জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ‘‘দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। গাড়িটির ব্রেক ফেল করেছিল কি না বা চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন কি না— সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ গাড়িটিকে উদ্ধার করে ফরেনসিক টেস্টে পাঠানো হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কোনও নতুন ঘটনা নয়, কিন্তু এভাবে বিয়ের মতো আনন্দের মুহূর্তের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। প্রশাসনের তরফে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।