২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আর এক বছরের অপেক্ষা। তবে নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি (BJP)। এবারের নির্বাচনে শুধু তৃণমূল বিরোধিতা নয়, বরং ইতিবাচক বার্তা ও বিকল্প উন্নয়নের দিশা নিয়েই রাজ্যের মানুষের কাছে যেতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।
সেই লক্ষ্যে পুজোর পরেই প্রকাশিত হতে চলেছে ২০২৬-এর বিজেপির (BJP) নির্বাচনী ইস্তাহার বা ‘সংকল্পপত্র’। সেই ইস্তাহারের প্রচ্ছদ পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদ্য রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরে আসা সুকান্ত মজুমদারকে।
তাঁর উপর এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করে বিজেপি স্পষ্ট করছে, সুকান্ত এখনও দলে সক্রিয় এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দায়িত্ব নিয়েই জানান, “বাংলার মানুষ পরিবর্তন চান, তাই আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
বিজেপির (BJP) দাবি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে রাজ্যের ৯২টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। পাশাপাশি আরও ১০৮টি আসনে বিজেপি মাত্র ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ এই ২০০টি আসনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ভোটের কৌশল রচনা করছে বিজেপি।
এই লক্ষ্যে, আগামী ১০ থেকে ১৩ জুলাই ওই ২০০ বিধানসভা এলাকার জেলা কমিটিগুলিকে বিশেষ বৈঠকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুথ সশক্তিকরণের এই বৈঠকে পর্যালোচনা করা হবে— কোথায় দলের সংগঠন দুর্বল, কোথায় ভোট বাড়ানো সম্ভব, এবং কীভাবে স্থানীয় ইস্যু তুলে ধরে জনমত গড়ে তোলা যায়।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এবার প্রচারে “নেতিবাচক রাজনীতি” নয়, বরং “ইতিবাচক উন্নয়নের রূপরেখা” তুলে ধরার পক্ষপাতী। অর্থাৎ তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুধু অভিযোগ নয়, বরং বিজেপি ক্ষমতায় এলে কী কী উন্নয়ন করা হবে— সেই পরিকল্পনাও থাকবে ইস্তাহারে।
রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, “বিজেপির লক্ষ্য বাংলার মানুষের কাছে একটা উন্নয়নশীল ও শক্তিশালী সরকার গঠনের রূপরেখা পেশ করা।”
এই ২০০টি আসনের প্রতিটিতে স্থানীয় ইস্যু চিহ্নিত করে বিধানসভা ভিত্তিক আন্দোলনের পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে বিজেপির বিভিন্ন সেল, মোর্চা ও পরিচালন কমিটিকে। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে— “জেতা বুথে হার চলবে না।” অর্থাৎ বুথ স্তরে বিজয় ধরে রাখা এবং হারানো বুথ পুনরুদ্ধারই হবে লক্ষ্য।
২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি এখন থেকেই পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। পুজোর পরেই ইস্তাহার প্রকাশ, বুথ শক্তিকরণ এবং ইতিবাচক প্রচারের পরিকল্পনা সামনে এনে দল স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে— রাজ্যে এবার শাসন ক্ষমতার লড়াইয়ে তারা ছাড় দিতে নারাজ।