শনিবার হতে চলেছে ভারতীয় মহিলা ফুটবলের (Indian Football Team) এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ অস্ট্রেলিয়া ২০২৬ (AFC Womens Asian Cup 2026 Qualifier) যোগ্যতা অর্জন পর্বে থাইল্যান্ডের (Thailand) বিরুদ্ধে মুখোমুখি হবে ভারত। এই ‘ফাইনালসম’ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে চিয়াং মাই শহরের স্টেডিয়ামে, ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়।
এদিন ম্যাচের মাধ্যমে ইতিহাস গড়ার এক সুবর্ণ সুযোগ ব্লু টাইগ্রেসদের। এখন পর্যন্ত কখনও এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি ভারত। ২০০৩ সালে শেষবার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ভারত। ২০২২ সালে স্বাগতিক হিসেবেও অংশ নিয়েছিল, কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কারণে প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার পরই দলকে নাম প্রত্যাহার করতে হয়। সেই হতাশার স্মৃতি পেছনে ফেলে এবার নিজেদের যোগ্যতায় মঞ্চে পৌঁছনোর লক্ষ্যে অবিচল ভারতের মহিলা দল।
ভারতের কোচ ক্রিসপিন ছেত্রী বলেন, “এই মুহূর্তে যদি কোয়ালিফাই করতে পারি। তাহলে শুধু মহিলা ফুটবলের জন্যই নয়, গোটা ভারতীয় ফুটবলের জন্য এটা এক বড় জয় হবে। আমাদের ফুটবলের এই সংকটময় সময়ে এটা একটা আশার আলো জ্বালাবে। দেশের আরও অনেক মেয়ে ফুটবলকে পেশা হিসেবে নিতে অনুপ্রাণিত হবে।”
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে থাইল্যান্ড রয়েছে ৪৬ নম্বরে, যা ভারতের থেকে ২৪ ধাপ উপরে। কিন্তু যোগ্যতা অর্জন পর্বের শেষ ম্যাচে দুই দলই সমানভাবে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। ভারত পরপর হারিয়েছে মঙ্গোলিয়া (১৩-০), তিমোর লেস্তে (৪-০) ও ইরাককে (৫-০)। থাইল্যান্ডও সমানভাবে হারিয়েছে ওই তিন দলকে যথাক্রমে ১১-০, ৪-০ এবং ৭-০ গোলের ব্যবধানে। ফলে দুই দলের গোল পার্থক্যই দাঁড়িয়েছে +২২। এখন শনিবার যে দল জিতবে, তারাই যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ম্যাচ ড্র হলে ফলাফল নির্ধারিত হবে টাইব্রেকারে।
কোচ ছেত্রী জানান, “আমরা চাই ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করতে। পেনাল্টির চিন্তা না করে আমরা জয়ের জন্য খেলব। প্রথম ম্যাচ থেকে একই মনোভাব নিয়ে খেলেছি এবং শেষ ম্যাচেও তা বজায় রাখব।”
ভারতের মিডফিল্ডার অঞ্জু তামাং বলেন, “থাইল্যান্ড একটি কঠিন প্রতিপক্ষ। এশিয়ান গেমসে ২০২৩ সালে ওদের সঙ্গে খেলে আমরা হেরেছিলাম মাত্র ১-০ গোলে। কিন্তু ম্যাচটা খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। ওরা পাসিং ফুটবল খেলতে পছন্দ করে, আমরা তা আটকানোর পরিকল্পনা করছি।”
অন্যদিকে, সঙ্গীতা বাসফোর বলেন, “এই ম্যাচটাই আমাদের কাছে ‘ফাইনাল’। আমাদের ভুলের সুযোগ নেই। আমরা জানি থাইল্যান্ড শক্তিশালী, কিন্তু আমরা এই ম্যাচটা জিততেই মাঠে নামব।”
থাইল্যান্ডের কোচ জাপানের ফুতোশি ইকেদা। চাবাকাও দলের লক্ষ্য ১০ম বারের মতো এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন। সেই সঙ্গে তারা ইতিমধ্যেই দু’বার (২০১৫ ও ২০১৯) বিশ্বকাপে খেলেছে। তুলনায় ভারত এখনো বিশ্বকাপে খেলেনি। তবে সঙ্গীতার মতে, “এই সময়টাই সঠিক সময় থাইল্যান্ডকে হারানোর। আমাদের দল অনেক পরিশ্রম করেছে, এবার জয়ের পালা।”
শনিবার রাতে শুধু একটি ম্যাচ নয়, বরং ভারতীয় মহিলা ফুটবলের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণকারী সন্ধিক্ষণ হতে চলেছে। জয়ই একমাত্র পথ, ইতিহাস রচনার সুযোগ একেবারে দরজায়।
Indian Football Team and Thailand set for ultimate showdown to reach AFC Womens Asian Cup 2026