BJP: নিঃশব্দে সরানো নাকি প্রত্যাবর্তন, কোথায় দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ?

দলীয় গুজগুজানি শমীকদা কে দায়িত্বে এনে আদৌ কিছু লাভ হল? তিনি তো কবিতা প্রেমিক এবং বান্ধবীদের নজরে ভালোবাসার ‘বাবু’! মন নরম স্বভাব নিয়ে আগামী বিধানসভা…

BJP: নিঃশব্দে সরানো নাকি প্রত্যাবর্তন, কোথায় দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ?

দলীয় গুজগুজানি শমীকদা কে দায়িত্বে এনে আদৌ কিছু লাভ হল? তিনি তো কবিতা প্রেমিক এবং বান্ধবীদের নজরে ভালোবাসার ‘বাবু’! মন নরম স্বভাব নিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই চালানো সম্ভব হবে না বলে ধারণা ছড়িয়েছে বঙ্গ বিজেপি (BJP) কর্মীদের মধ্যে। (Analysis of Dilip Ghosh’s political position within the BJP)

রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের কাঁধে তার দলকে বিরোধী আসন থেকে ট্রেজারি বেঞ্চে নিয়ে যাওয়া। এর মধ্যে আছে বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেলেও সিপিআইএমের সাংগঠনিক তৎপরতা। এই অঙ্ক ধরে ধর্মীয় মেরুকরণের ভোট করানোর পক্ষেই সিংহভাগ বিজেপি নেতার রায়।

   

রাজ্য সভাপতি হয়ে শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে টানার জন্য সাংগঠনিক বার্তা দেন। তিনি বলেছেন বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। রাজ্যে মহররম এবং দুর্গা পূজার শোভাযাত্রা একসঙ্গে হোক। কটাক্ষ করে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায় লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কিছু নেতার একটা hoping against hope গোছের মানসিকতা আছে – যদি আমরা একটা অন্য কোনো পন্থা নিই, অন্য কোনোভাবে মুসলমানদের তোয়াজ করি তাহলে তারা আমাদের ভোট দিলেও তো দিতে পারে! নতুন সভাপতি এই মানসিকতা থেকে পার্টিকে যত তাড়াতাড়ি ছাড়াতে পারেন ততই মঙ্গল।”

বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে দ্রুত লঙ্কা কাণ্ড হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দলটির কর্মীরা চাইছেন তীব্র হিন্দু রাজনীতি। তাদের দাবি, এরকম করতে পারবেন না শমীক ভট্টাচার্য। শমীকের নরম বার্তায় বাংলার রাজনীতিতে বদলে যাচ্ছে বিজেপির কণ্ঠস্বর?

বঙ্গ বিজেপির পূর্বতন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘গরম’ ইমেজ কি নিভে যাচ্ছে? (Analysis of Dilip Ghosh’s political position within the BJP)

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত মুখ ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর রাজনৈতিক ভাষ্য, আক্রমণাত্মক স্টাইল, এবং রাস্তায় নেমে রাজনীতি করার মানসিকতা তাঁকে আলাদা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল। একাধিক বিতর্কিত গরম উক্তি রাজ্য রাজনীতিতে হইচই ফেলে দিয়েছিল। বিরোধীরা যতটা নিন্দা করতেন, ততটাই উজ্জীবিত হতেন বিজেপি দলীয় কর্মীরা।

Advertisements

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কি দিলীপ ঘোষ সেই আগুন হারিয়েছেন? চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দিলীপ ঘোষকে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে প্রার্থী করা হয়। তিনি হেরে যান। বিজেপির কৌশলগত সিদ্ধান্তে এই স্থানান্তরই অনেকের চোখে ‘পিছু হটানো’। তারপর থেকেই রাজ্য রাজনীতির মূল মঞ্চ থেকে তিনি দূরে।

‘বৃদ্ধস্য তরুণী ভার্যা’ অর্থাৎ বেশি বয়সে আচমকা বিবাহ করার পর থেকে আরএসএসের প্রচারক দিলীপ ঘোষ রাজনীতিতে অনেকটা নি:সঙ্গ!  দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তাঁকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। মোদী-শাহর মঞ্চে এখন আর ঠাঁই না হলেও দিলীপ ঘোষ আছেন জনসংযোগে। তিনি গরম কথা বলছেন। তবে রাজ্য বিজেপির প্রধান নেতা শুভেন্দু  অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, অগ্নিমিত্রা পল বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন।

বিজেপির অভ্যন্তরে কট্টরপন্থীদের ক্ষোভ, দিলীপ ঘোষের মতো স্পষ্টভাষী ও শক্তপোক্ত রাজনীতিবিদ আজকের বিজেপিতে ব্রাত্য।  কিছু পর্যবেক্ষকের মতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন বাংলায় চাইছে এক নতুন, ‘অ্যাক্সেপ্টেবল’ মুখের রাজনীতি যেখানে দিলীপ ঘোষের ধাঁচ কিছুটা অচল। তবে বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের এক বড় অংশ এখনও তাঁকে নেতা হিসেবে মানেন। তারা বলছেন, দিলীপদা ছিলেন মাঠের নেতা, যিনি শূন্য থেকে দলকে দাঁড় করিয়েছেন।

দিলীপ ঘোষ ও শমীক ভট্টাচার্যকে নিয়ে বাংলার বিজেপির তুলনামুলক আলোচনা বাড়ছেই। প্রশ্ন উঠছে নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় গরম দিলীপ কি এবার নরম হবেন। তিনি বলছেন না ডাকলে আমি কোথাও যাই না।