কৃষি উৎপাদন নিয়ে মমতার ‘মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য শুভেন্দুর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৩ জুলাই, ২০২৫-এ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন, রাজ্য ২০২৪-২৫ সালে (suvendu) ২৫৬.৫৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করে ঐতিহাসিক মাইলফলক…

Suvendu slams mamata for agriculture statistics

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৩ জুলাই, ২০২৫-এ তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন, রাজ্য ২০২৪-২৫ সালে (suvendu) ২৫৬.৫৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করে ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জন করেছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই পোস্ট ঘিরে আগেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। আজ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কলম ধরেছেন। তিনি কিছু তথ্য তুলে ধরে এই মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।

মমতা তার পোস্ট এ বলেন, ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে ভুট্টা, ডাল এবং তৈলবীজের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে, শুভেন্দু (suvendu) এই দাবিকে ‘মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে রাজ্যের জ্বলন্ত সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে সমালোচনা করেছে।

   

শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) তথ্য উপস্থাপন করে প্রমাণ করেছেন যে, মমতার দাবি ভ্রান্ত এবং রাজ্যের কৃষি খাতে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতা স্পষ্ট। তিনি এই তথ্য দিয়েছেন ইউনিফায়েড পোর্টাল ফর এগ্রিকালচারাল স্ট্যাটিস্টিক্স (ইউপিএজি)-এর সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে, যা বিভিন্ন রাজ্যের কৃষি বিভাগের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে,

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ২০২৪-২৫ সালে ২৫৬.৫৩ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন করে দেশে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। কিন্তু ইউপিএজি পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের কৃষি বিভাগের রিপোর্টে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ ১৬৪.৯১ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করেছে, যা ধানে রূপান্তরিত হলে (৬৬% রূপান্তর হারে) ২৪৯.৮৬ লক্ষ মেট্রিক টন।

এটি জাতীয় (suvendu) উৎপাদনের মাত্র ১১% এবং দেশের শীর্ষ ১০টি চাল উৎপাদনকারী রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২১-২২ সালে রাজ্যের চাল উৎপাদন ছিল ১৬৭.২৯ লক্ষ মেট্রিক টন (ধানে ২৫৩.৫ লক্ষ মেট্রিক টন) এবং ২০২০-২১ সালে ১৬৫.২৪ লক্ষ মেট্রিক টন (ধানে ২৫০.৪ লক্ষ মেট্রিক টন), যা মমতার দাবির তুলনায় বেশি।

২০১১-১২ সালে, (suvendu) যখন তৃণমূল ক্ষমতায় আসে, রাজ্য জাতীয় উৎপাদনের ১৩.৮৭% অবদান রেখে প্রথম স্থানে ছিল।এছাড়াও, চালের ফলনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ২০২৪-২৫ সালে হেক্টরপ্রতি ২৯৫০ কেজি ফলন নিয়ে শীর্ষ ১০টি রাজ্যের মধ্যে ৮ম স্থানে রয়েছে, যা জাতীয় গড় ফলনের সামান্য উপরে। তুলনায়, পাঞ্জাব (৪৪২৮ কেজি/হেক্টর), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩৮৬৩ কেজি/হেক্টর) এবং হরিয়ানা (৩৭৬৬ কেজি/হেক্টর) অনেক এগিয়ে রয়েছে।

ধান পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ফসল হলেও, রাজ্যের মোট শস্য উৎপাদন জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৬% (১৯৮.৫ লক্ষ মেট্রিক টন), যেখানে উত্তরপ্রদেশ ১৮.৭%, মধ্যপ্রদেশ ১২.৩% এবং পাঞ্জাব ৯.৯% অবদান রাখে। ফলনের দিক থেকেও পশ্চিমবঙ্গ ২০২৪-২৫ সালে হেক্টরপ্রতি ৩২১৩ কেজি নিয়ে ৭ম স্থানে রয়েছে, যেখানে ২০১১-১২ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সময় রাজ্য ৬ষ্ঠ স্থানে ছিল।

শীর্ষ তিন রাজ্য পঞ্জাব (৪৭৭৭ কেজি/হেক্টর), হরিয়ানা (৪০৮০ কেজি/হেক্টর) এবং অন্ধ্রপ্রদেশ (৪০৫২ কেজি/হেক্টর) পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় ৪০-৫০% বেশি ফলন অর্জন করেছে।

Advertisements

ডাল, ভুট্টা ও তৈলবীজ

ইউপিএজি পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত ডাল ২০২৪-২৫ সালে ৪.২৫ লক্ষ মেট্রিক টন, জাতীয় উৎপাদনের (১৩৯.০১ লক্ষ মেট্রিক টন) মাত্র ৩%। ডাল উৎপাদনে শীর্ষ তিন রাজ্য হল মধ্যপ্রদেশ (৫৪.০৯ লক্ষ মেট্রিক টন), মহারাষ্ট্র (৫০.৩৫ লক্ষ মেট্রিক টন) এবং রাজস্থান (৩৮.৭৫ লক্ষ মেট্রিক টন) যা পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে অনেক এগিয়ে।

ইউনিফাইড পেনশন স্কিমে এনপিএসের মতো ট্যাক্স সুবিধা ঘোষণা কেন্দ্রের

ভুট্টা

২৭.৮৯ লক্ষ মেট্রিক টন, জাতীয় উৎপাদনের (৪২২.৮১ লক্ষ মেট্রিক টন) মাত্র ৬.৬%। শীর্ষ তিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশ (৬৭.১০ লক্ষ মেট্রিক টন), কর্নাটক (৬১.৬৩ লক্ষ মেট্রিক টন) এবং বিহার (৪৯.০১ লক্ষ মেট্রিক টন)।

তৈলবীজ

১২.৯৭ লক্ষ মেট্রিক টন, জাতীয় উৎপাদনের (৪২৬.০৮ লক্ষ মেট্রিক টন) মাত্র ৩%। শীর্ষ তিন রাজ্য রাজস্থান (৯১.৮০ লক্ষ মেট্রিক টন), মধ্যপ্রদেশ (৮৭.১১ লক্ষ মেট্রিক টন) এবং মহারাষ্ট্র (৭৮.৩৮ লক্ষ মেট্রিক টন)।

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (suvendu) বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মিথ্যাচার রাজ্যের জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি যদি নৈতিকতার সামান্যতম ধারণা রাখেন, তবে তাঁর উচিত তাঁর পোস্ট সংশোধন করে সঠিক তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা।” তিনি আরও বলেন, তৃণমূল শাসনের ১৪ বছরে রাজ্যের কৃষি খাতে অগ্রগতির পরিবর্তে পতন হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা তৃণমূলের প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং জনগণের আস্থা হারানোর প্রমাণ। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিতর্ক তৃণমূলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। (suvendu) বিজেপি এই তথ্য ব্যবহার করে তৃণমূলের কৃষি নীতির ব্যর্থতাকে তুলে ধরছে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করবে।