রবিবার মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে (Khidirpur Fire)। সেই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়েছিল প্রায় ৬০০-টিরও বেশি দোকান। সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে তৎপর হয়েছে কলকাতা পুরসভা। সেই ক্ষতিপূরণ পেতে পুরসভায় জমা পড়েছে ৩৮৫টি আবেদন। চলছে স্ক্রুটিনির কাজ। কিন্তু সেই কাজেও একাধিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় বেশ কিছু সমস্যার মুখে পড়েছেন আধিকারিকেরা।
অন্যদিকে বাজার সংলগ্ন ফাঁকা জমিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অস্থায়ী দোকান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। খুব শীঘ্রই এই কাজের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। পরে আরও দোকান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই গোটা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে পুর আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুরসভা সূত্রে খবর, যাঁদের নথিপত্র ঠিকঠাক রয়েছে, তাঁদের নাম দ্রুত অনুমোদন করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও তাঁদের সবার প্রথমে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে অনেক জটিলতাও দেখা যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, জমা পড়া কাগজে দোকানের যাঁর নাম রয়েছে, বাস্তবে দোকান চালাচ্ছেন অন্যজন। কারণ, সময়ের সঙ্গে দোকান হস্তান্তর হয়েছে, অথচ মালিকানা সংশোধনের কোনও সরকারি রেকর্ড নেই। ফলে পুরসভা যে পুরনো তালিকা হাতে পেয়েছে, তার সঙ্গে আবেদনকারীদের পরিচয় মেলাতে গিয়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
শুধু খিদিরপুর নয়, পাশাপাশি শহরের সমস্ত পুর বাজারের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যে কলকাতার ৫৩টি বাজারে শুরু হয়েছে ‘ফায়ার অডিট’। দমকল ও পুরসভার যৌথ দল বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখছে আগুন নেভানোর সরঞ্জাম, জলের উৎস এবং দমকলের প্রবেশপথের বাস্তব পরিস্থিতি। কোথায় রিজার্ভার বা পাম্প বসানো দরকার, কোথায় টিউবওয়েল লাগবে সেসব রিপোর্ট আকারে এক মাসের মধ্যে জমা দেবে দমকল বিভাগ।
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, কলকাতার বহু পুরনো বাজার অপরিকল্পিতভাবে তৈরি। ভেতরের রাস্তা সরু হওয়ায় আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢোকা কঠিন হয়। তাই নির্দিষ্ট নির্দেশিকা মেনে পরিকাঠামো বদলের পরিকল্পনা চলছে। তার নির্দেশ, বিভিন্ন পরিকল্পনার পাশাপাশি পুর বাজারগুলিতে নিয়মিত ফায়ার মক ড্রিল করার।
প্রসঙ্গত, আগামী সাত জুলাই এই বিষয় নিয়ে হাই পাওয়ার কমিটির দ্বিতীয় দফার বৈঠক বসবে। সেখানে বহুতলে ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে অগ্নি সুরক্ষার নিয়ম আরও কড়াভাবে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।