ব্যারাকপুর পর্যন্ত ছুটবে কি মেট্রো? চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ বৈঠকে

কলকাতা: ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো (Metro) সম্প্রসারণ নিয়ে বহুদিন ধরেই চলছিল জল্পনা। অবশেষে আজ, শুক্রবার সেই জল্পনার অবসান হতে পারে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের…

Kolkata Metro

কলকাতা: ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো (Metro) সম্প্রসারণ নিয়ে বহুদিন ধরেই চলছিল জল্পনা। অবশেষে আজ, শুক্রবার সেই জল্পনার অবসান হতে পারে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ, আরভিএনএল (RVNL), ছয়টি পুরসভার প্রতিনিধি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিবিদ এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। আলোচনার মূল বিষয় — বরাহনগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণ প্রকল্প আদৌ বাস্তবায়নযোগ্য কি না।

এই প্রস্তাবিত মেট্রো (Metro) রুটের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২.৫ কিমি। বরাহনগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে এই করিডোর, যা উত্তর শহরতলির হাজার হাজার বাসিন্দার যাতায়াত সহজতর করবে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। পরে ব্যারাকপুরের বর্তমান সাংসদ পার্থ ভৌমিক রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব-কে প্রকল্পটি চালু করার জন্য চিঠিও লেখেন। সেই পরেই ফের চর্চায় আসে ব্যারাকপুর মেট্রো প্রকল্প।

   

এই প্রকল্পে মূল প্রতিবন্ধকতা হল বিটি রোডের নীচ দিয়ে যাওয়া জলের পাইপলাইন। এই রাস্তায় ৪২ থেকে ৭২ ইঞ্চি ব্যাসের ছ’টি বড় পাইপ রয়েছে, যা কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন অংশে জল সরবরাহ করে। মেট্রোর পিলার বসানোর জন্য অন্তত তিনটি পাইপ সরানো বাধ্যতামূলক। এর পরিবর্তে বসানোর প্রস্তাব রয়েছে দুটি ৯০ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ। কিন্তু এত বড় পাইপ বসানো প্রযুক্তিগতভাবে আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রয়োজনে মাইক্রো-পাইলিং বা অন্য কোনও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হতে পারে।

এই প্রকল্প সফল করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন ফিজিবিলিটি টেস্ট। অর্থাৎ, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রকল্পটি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য, তা নির্ধারণ করতে হবে। আবার এই কাজের জন্য যে বিপুল অর্থ প্রয়োজন হবে, তা কে দেবে, সেই প্রশ্নও রয়েছে। রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, নাকি কোনও যৌথ উদ্যোগে এই অর্থায়ন হবে, তা নিয়েও আলোচনা হবে আজকের বৈঠকে।

Advertisements

বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সহ মেট্রো (Metro) রেল, RVNL, PHE-র আধিকারিক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বিশেষ করে মেট্রো নির্মাণে বিকল্প প্রযুক্তির সম্ভাবনা, রুট অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন এবং পাইপলাইন পুনর্বিন্যাস— এই বিষয়গুলির সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে।

ব্যারাকপুর মেট্রো প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উত্তর ২৪ পরগনার বহু বাসিন্দার যাতায়াতে আমূল পরিবর্তন আসবে। মেট্রোর জাল ছড়িয়ে পড়বে আরও বিস্তৃত অঞ্চলে। কিন্তু তার আগে রয়েছে জলের পাইপলাইন সমস্যা, প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং বিশাল অর্থ বরাদ্দের চ্যালেঞ্জ। আজকের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়, তার উপরই নির্ভর করছে এই স্বপ্নের প্রকল্পের ভবিষ্যৎ।