রিজওয়ানুর কাণ্ডের ছায়া কোচবিহারে! ভিন ধর্মে বিয়ের পর নিখোঁজ যুবক

কোচবিহার জেলার (Cooch Behar) সহেবগঞ্জ থানার আওতায় সেউটি গ্রামের বাসিন্দা বাবন বর্মণের একটি ঘটনা বর্তমানে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। হিন্দু যুবক বাবন বর্মন একজন মুসলিম…

Hindu Youth Missing After Interfaith Marriage, Sparks Love Jihad Deba

কোচবিহার জেলার (Cooch Behar) সহেবগঞ্জ থানার আওতায় সেউটি গ্রামের বাসিন্দা বাবন বর্মণের একটি ঘটনা বর্তমানে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। হিন্দু যুবক বাবন বর্মন একজন মুসলিম মেয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। এই ঘটনাটি রাজ্যের বিভিন্ন কোণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন এই ধরনের ঘটনাগুলোকে “লাভ জিহাদ” হিসাবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

বাবন বর্মণের মা তাঁর পুত্রের অদৃশ্য হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, মেয়ের বাবা আমিনুল হক এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরা বাবনকে এক মাস ধরে বন্দী করে রেখেছেন এবং তাকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন। বাবন একমাত্র সন্তান, এবং তাঁর মা সহেবগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন, কিন্তু পুলিশ এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

   

এই ঘটনাটি রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। বাবনের মা একটি ভিডিওতে দাবি করেছেন যে, তাঁর পুত্রকে বন্দী করে রাখা হয়েছে এবং তাকে মুসলিম হওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তিনি তাঁর পুত্রের কোথায় আছেন তা জানেন না, এবং সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। এই ঘটনাটি রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সংহতির উপর প্রশ্ন তুলে ধরেছে, বিশেষ করে যখন রাজনৈতিক দলগুলো এই ধরনের ঘটনাকে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।

কোচবিহার জেলায় এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। অতীতে এখানে সাম্প্রদায়িক সংঘাত এবং ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটেছে, যা রাজ্যের সামগ্রিক শান্তি ও স্থিতির উপর প্রভাব ফেলেছে। বাবনের মা সহেবগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ২২ জুন, ২০২৫-এ, কিন্তু পুলিশের অলসতার কারণে এখনো কোনো উন্নতি ঘটেনি। এই অবহেলার মুখে বাবনের পরিবার তাঁদের সন্তানের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এই ঘটনাটি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিজেপি এই ধরনের ঘটনাকে “লাভ জিহাদ” হিসাবে চিহ্নিত করে তাঁদের রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়, যা রাজ্যের ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরনের অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সরঞ্জাম হিসাবে দেখছে, যা রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্পর্ককে আরো জটিল করে তুলছে।

Advertisements

কোচবিহারের এই ঘটনাটি রাজ্যের শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক সম্পর্ককেই প্রভাবিত করছে না, বরং এটি রাজ্যের আইন ও শৃংখলার উপরও প্রশ্ন তুলে ধরেছে। পুলিশের অলসতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস হারানোর কারণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বাবনের পরিবারের জন্য সাহায্যের জন্য আবেদন জানানোর সাথে সাথে রাজ্যের সাধারণ মানুষও ন্যায্যতার জন্য কণ্ঠ তোলার দরকার।

এই ঘটনাটি রিজওয়ানুর কাণ্ডের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে নিখোঁজ হন তিলজলার যুবক রিজওয়ানুর রহমান। পরে কাঁকুরগাছিতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। মুসলিম যুবক রিজওয়ানুরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান প্রিয়াঙ্কা টোডি। তাঁরা বিয়ে করেছিলেন বলেও শোনা যায়। অভিযোগ ওঠে, রিজওয়ানুরের মৃত্যুর পিছনে প্রিয়াঙ্কার পরিবারের হাত ছিল। এ নিয়ে চারদিকে তোলপাড় হয়। আসরে নামে তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস। অনেকেই বলেন, বাম সরকারের পতনের অন্যতম কারণ রিজওয়ানুরের মৃত্যু। রহমানের জন্য পথে নেমেছিল সুশীল সমাজ। বর্মণের জন্য কী করবে? উত্তরের অপেক্ষায় বাং