কলকাতা: পরিবর্তন এল বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বে। আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে রদবদল ঘটল। বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) জায়গায় এবার রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেলেন দলের মুখপাত্র এবং মুখ্য মুখ শমীক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা আনুষ্ঠানিক ভাবে করা হয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে। এই রদবদলের মাধ্যমে দল কার্যত আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের সংগঠনিক রূপরেখায় বড় বদল আনল।
বিদায়ী সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “শমীকদা দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং লড়াইয়ের সঙ্গী। তাঁকে অনেক শুভকামনা জানাই। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, এই লড়াইয়ে কারও অংশগ্রহণে এতটুকু খামতি থাকবে না। আগামী বিধানসভা নির্বাচন হবে বাংলার মানুষের জন্য আরও একটি স্বরাজের সংগ্রাম। অন্ধকার সরিয়ে আলো ফেরানোর শপথে আমরা সকলে একসঙ্গে লড়ব।”
সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ২০২১ সালে দিলীপ ঘোষের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পান। তাঁর নেতৃত্বেই ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। বিদায়ী বার্তায় সুকান্ত লেখেন, “আমার সভাপতিত্বকালে দুটি বড় নির্বাচন হয়েছে। লোকসভা ভোটে আমাদের আসন কমলেও শহর ও গ্রামে বিজেপির ভিত যে শক্ত হচ্ছে, তার প্রমাণ মিলেছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে জমি তৈরি হয়েছিল, তার উপর আরও মজবুত ভিত গড়ে তুলতে পেরেছে দল।”
প্রসঙ্গত, বর্তমানে সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনি লেখেন, “আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি যে, রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন। রাজ্য ও কেন্দ্র, দু’দিক সামলে কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হইনি। বরং দেশমাতৃকার সেবায় থাকাটা আমার কাছে গর্বের।”
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি. নাড্ডার প্রতি। তিনি লেখেন, “আশা করি, আমি আমার দায়িত্ব পালনে সকলের বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পেরেছি। দলের প্রতিটি কর্মী, নেতৃত্ব, সহকর্মীদের নিরন্তর সমর্থন ছাড়া তা সম্ভব ছিল না। আমি নিশ্চিত, আগামীতেও তাঁদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা পাশে থাকবে।”
নতুন সভাপতির ভূমিকা কী হবে?
শমীক ভট্টাচার্যের কাঁধে এখন বড় দায়িত্ব। রাজ্য রাজনীতিতে অভিজ্ঞ এবং সংগঠনের পরিচিত মুখ হলেও তাঁকে সামলাতে হবে বিরোধী দলগুলির চাপ, সাংগঠনিক বিভাজন এবং সবচেয়ে বড় করে দেখতে হবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও চাইছে, রাজ্যে বিজেপির মাটির সংযোগ আরও দৃঢ় হোক। সুতরাং, নতুন নেতৃত্বে কতটা পাল্টাবে বঙ্গ বিজেপির লড়াইয়ের রণকৌশল, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।