সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার চ্যালেঞ্জ শান্তনুর

পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিলের কঠোর সিদ্ধান্তে দুই বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ এবং চিকিৎসক শান্তনু সেনের (Shantanu) ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন । তাঁর…

Shantanu challenges sudipta roy

পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিলের কঠোর সিদ্ধান্তে দুই বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ এবং চিকিৎসক শান্তনু সেনের (Shantanu) ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন । তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ভুয়ো বিদেশি মেডিকেল ডিগ্রি ব্যবহার করে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

শান্তনু (Shantanu) অভিযোগ করেছেন তার এই রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবার পিছনে পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিলের সদস্য ডা. সুদীপ্ত কুমার রায়ের ভূমিকা রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে শান্তনু সেন ডা. সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের এবং আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। শান্তনু সেন বিস্ফোরক দাবি করেছেন যে সুদীপ্ত রায় তার ব্যাক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছেন।

   

তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ ভুল। আমার এমবিবিএস ডিগ্রি পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিলে নথিভুক্ত। আমি বহু বছর ধরে রেডিওলজিস্ট হিসেবে প্র্যাকটিস করছি। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে ডা. সুদীপ্ত কুমার রায় আমার পিছনে লেগেছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করব এবং আদালতের দ্বারস্থ হব।

তারা আমাকে দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে, এমনকি পাঁচ বছরের প্রস্তাবও পাঠিয়েছিল। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করছি, আমাকে পাঁচ দিনের জন্যও নিষিদ্ধ করে দেখাক।”শান্তনু সেনের (Shantanu) বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর প্রফেশনাল লেটারহেডে ‘এফআরসিপি (গ্লাসগো)’ ডিগ্রি ব্যবহার করেছেন, যা পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিলে নথিভুক্ত নয়।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল কাউন্সিল অ্যাক্ট, ১৯৫৬ এবং বেঙ্গল মেডিকেল অ্যাক্ট, ১৯১৪ অনুযায়ী, কোনও ডিগ্রি ব্যবহারের আগে তা মেডিকেল কাউন্সিলে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। তবে শান্তনু সেন দাবি করেছেন, তাঁর এমবিবিএস এবং ডিএমআরডি (DMRD) ডিগ্রি মেডিকেল কাউন্সিলে রেজিস্টার্ড, এবং তিনি রেডিওলজিস্ট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে প্র্যাকটিস করে আসছেন।

তিনি (Shantanu)আরও বলেন, এফআরসিপি একটি সাম্মানিক ডিগ্রি, যা রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করা যায়। তবে মেডিকেল কাউন্সিল তাঁর এই যুক্তি গ্রহণ করেনি।পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে, শান্তনু সেনের সার্টিফিকেটে ‘ডিপ্লোমা অফ ফেলোশিপ এফআরসিপি (গ্লাসগো)’ উল্লেখ থাকলেও, তিনি লেটারহেডে শুধুমাত্র ‘এফআরসিপি (গ্লাসগো)’ ব্যবহার করেছেন, যা রোগীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

এই কারণে মেডিক্যাল কাউন্সিল মনে করেছে তিনি চিকিৎসার মত পেশায় অসৎ উপায় গ্রহণ করেছেন। ঠিক এই কারণেই কাউন্সিল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। গত ১৪ জুন, মেডিকেল কাউন্সিল তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেছিল। শান্তনু সেনের দেওয়া জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁর রেজিস্ট্রেশন দুই বছরের জন্য বাতিল করা হয়েছে।

Advertisements

এমনকি, প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের সাসপেনশনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল, যা পরে কমিয়ে দুই বছর করা হয়।শান্তনু সেন এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “ডা. সুদীপ্ত কুমার রায় ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন। আমি আইনি লড়াই চালিয়ে যাব এবং এর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করব।”

তিনি (Shantanu) আরও দাবি করেন, তিনি মেডিকেল কাউন্সিলে সরকারি নমিনি হিসেবে কাজ করেছেন এবং তাঁর পেশাগত সততা নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি।এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক ও চিকিৎসা মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শান্তনু সেন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট নেতা। তাঁর সমর্থকদের একাংশ এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন। তবে মেডিকেল কাউন্সিল স্পষ্ট জানিয়েছে, তাঁদের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ পেশাগত নীতিমালার ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে এবং এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।

ইলেকট্রনিক্স ক্ষেত্রে চিনা কর্মী প্রত্যাহারে সরকারের সতর্ক দৃষ্টি

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভুয়ো ডিগ্রির ব্যবহার একটি গুরুতর অপরাধ। এটি রোগীদের জীবনের সঙ্গে খেলা করে এবং চিকিৎসা পেশার প্রতি মানুষের ভরসাকে ক্ষুণ্ণ করে। মেডিকেল কাউন্সিলের এই পদক্ষেপ পেশাগত সততা এবং জনসাধারণের প্রতি দায়বদ্ধতার উপর জোর দিয়েছে। তবে শান্তনু সেনের আইনি পদক্ষেপের হুমকি এই ঘটনাকে আরও জটিল করে তুলেছে।

তিনি বলেন, (Shantanu) “আমি এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়ব। আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি আদালতে এর জবাব দেব।”জনসাধারণের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। একদিকে, মেডিকেল কাউন্সিলের কঠোর পদক্ষেপকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছেন, অন্যদিকে শান্তনু সেনের সমর্থকরা এটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। আগামী দিনে এই ঘটনার পরিণতি কী হয়, তা দেখার জন্য সবার দৃষ্টি এখন আইনি প্রক্রিয়ার দিকে।