চিনের হয়ে আমেরিকায় গুপ্তচরবৃত্তি! ধৃত ২, তীব্র প্রতিক্রিয়া বেজিংয়ের

ওয়াশিংটন: মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সম্প্রতি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই চিনা নাগরিক-ইউয়ান্সে চেন (৩৮) ও লিরেন ‘রায়ান’ লাই (৩৯)-কে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চিনের…

FBI Chinese Spies Arrested

ওয়াশিংটন: মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সম্প্রতি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই চিনা নাগরিক-ইউয়ান্সে চেন (৩৮) ও লিরেন ‘রায়ান’ লাই (৩৯)-কে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চিনের গোয়েন্দা সংস্থা MSS-এর হয়ে মার্কিন নৌবাহিনীর ওপর নজরদারি চালানো ও সেনা সদস্যদের প্ররোচিত করার চেষ্টা চালিয়েছিল।

যুদ্ধের পাতায় লেখা চায়না-ইউএস গুপ্তচর নাটক

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি মন্তব্য করেন, “এই গ্রেফতার প্রমাণ করে, চিন আগ্রাসীভাবে আমেরিকার সামরিক কাঠামোর ভিতর প্রবেশ করে আমাদের জাতীয় সুরক্ষা দুর্বল করতে চায়।”

   

হলফনামায় প্রকাশ, লাই সিরিয়াসভাবে MSS-ই পরিচালিত একটি নেটওয়ার্কের অংশ, যা চিন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গোপন যাতায়াতের সুবিধা তৈরি করেছিল। ২০২১ সালে লাই চেনকে ‘অ্যাসেট’ হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেন। সেই পর থেকেই চেন নৌবাহিনী কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন। ২০২২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি লকারে ১০,০০০ ডলার নগদ রেখে যান যা তথ্য বিনিময় হয়ে থাকতে পারে।

চেন এমনকি সান ডিয়েগোতে গিয়ে USS অ্যাব্রাহাম লিংকন বিমানবাহী জাহাজের সফর করেন ও নতুন নিয়োজিত একজন নৌসদস্যের সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া ফোন, ইমেইল ও ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট সেনা সদস্যকে চীনের উদ্দেশ্যে প্ররোচিত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল।

বেজিংয়ের বার্তা: সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন রোযানা FBI Chinese Spies Arrested

চিনের বিদেশ মন্ত্রকে সংঘটিত ঘটনায় ‘ভিতিহীন এবং দাঙ্গাবাজী’ অভিযোগ বলে মন্তব্য করেছে। তারা অদূর ভবিষ্যতে আইনি উপায়ে চিনা নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে বলে সংশ্লিষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

Advertisements

FARA আইনে অভিযুক্ত, আমেরিকা লাগাম দিতে প্রস্তুত

‘Foreign Agents Registration Act’ (FARA) অনুযায়ী, বিদেশি সরকারের জন্য কার্যকরী হলে অবশ্যই নিবন্ধন করতে হয়—যা এফবিআই-এর তদন্তে চেন ও লাই-এর আলোচনায় উঠে এসেছে। তদন্তকারীরা বলেন, ‘চিনের MSS-এর অবৈধ আর্থিক লেনদেন ও গুপ্ত কার্যক্রম’ এই মামলা তৎকালীন প্রমাণ।

দক্ষিণ চিন সাগরের আধিপত্য নিয়ে লড়াই-গোপন তথ্যই দখলের অস্ত্র

হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য আনতে চিন তাদের নৌবাহিনী আধুনিক করছে; আর MSS নতুন অস্ত্র হিসেবে গোপন তথ্য সংগ্রহে টার্গেট করছে মার্কিন নৌদলকে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই গ্রেফতার শুধু দু’জন গুপ্তচর নয়—এটা দুই বিশ্বশক্তির নিয়ে গোপন কূটনৈতিক যুদ্ধের প্রধান ধাপ। যুদ্ধে সভ্যতার নিরাপত্তা এখন ‘চিপ-টিপ’, স্যুট-কেস নয়, তথ্য-প্রবাহই নির্ধারণ করবে বিজয়ী।