ফুটবল বিশ্বে নেমে এল শোকের ছায়া, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রয়াত জাতীয় দলের ফুটবলার

স্পেনের (Spain) জামোরা প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পর্তুগাল (Portugal National Football Team) এবং লিভারপুল (Liverpool) ক্লাবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইকার দিয়োগো জোটা (Diogo Jota)।…

Liverpool & Portugal National Football Team forward Diogo Jota passes away at 28 in road accident

স্পেনের (Spain) জামোরা প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পর্তুগাল (Portugal National Football Team) এবং লিভারপুল (Liverpool) ক্লাবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইকার দিয়োগো জোটা (Diogo Jota)। মাত্র ২৮ বছর বয়সে অকালে ঝরে গেল ফুটবলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১২.৪০ নাগাদ সের্নাদিলা এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে (Road Accident)। জোটার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন তাঁর ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভা, যিনি পর্তুগালের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব এফসি পেনাফিলের ফুটবলার। দু’জনকেই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁদের মৃত্যু হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, একটি সুপারকারে করে দুই ভাই যাত্রা করছিলেন। চলার পথে ওভারটেকের চেষ্টা করার সময় হঠাৎই গাড়ির একটি চাকা ফেটে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে ছিটকে পড়ে যায় গাড়িটি। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আগুনে গাড়িটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। দমকল এবং অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত পৌঁছলেও ততক্ষণে সব শেষ।

   

দু’সপ্তাহ আগেই দীর্ঘদিনের বান্ধবী রুতে কার্দোসোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দিয়োগো জোটা। তাঁদের রয়েছে তিন সন্তান। নতুন জীবনের শুরুতেই এমন এক মর্মান্তিক পরিণতি গোটা ফুটবল বিশ্বকে স্তম্ভিত করেছে।

দিয়োগোর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন। ফেডারেশনের প্রধান পেদ্রো প্রোয়েঙ্কা এক বিবৃতিতে বলেন, “এই মৃত্যু শুধু পর্তুগালের ফুটবল নয়, গোটা বিশ্ব ফুটবলের এক অপূরণীয় ক্ষতি। জাতীয় দলের হয়ে প্রায় ৫০টি ম্যাচ খেলেছে সে। সতীর্থ এবং প্রতিপক্ষ সকলের কাছেই সম্মানিত ছিল।” লিভারপুল ক্লাব ও এফসি পেনাফিলও পৃথক বিবৃতি দিয়ে শোক প্রকাশ করেছে। ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থা উয়েফার কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে, মহিলাদের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালনের জন্য।

Advertisements

পোর্তোয় জন্মগ্রহণকারী দিয়োগো জোটার ফুটবল যাত্রা শুরু হয়েছিল স্থানীয় ক্লাব পাকোস দে ফেরেরার হয়ে। ২০১৫ সালে তাঁর অভিষেক হয়। ২০১৬ সালে যোগ দেন স্পেনের জায়ান্ট ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। যদিও সেখান থেকে তাঁকে লোনে পাঠানো হয় এফসি পোর্তোয়। ২০১৭ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ক্লাব উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সে যোগ দেন, প্রথমে লোনে এবং পরে স্থায়ীভাবে। উলভসের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে নজরে আসেন এবং ২০২০ সালে ৪৫ মিলিয়ন পাউন্ড ট্রান্সফারে লিভারপুলে নাম লেখান।

লিভারপুলের প্রাক্তন কোচ জুর্গেন ক্লপের অধীনে তিনি দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। গত পাঁচ বছরে ইপিএলে ৪৭টি গোল করেছেন, তার সঙ্গে এফএ কাপ ও দু’বার লিগ কাপ জিতেছেন। সদ্যসমাপ্ত নেশনস লিগেও পর্তুগালের স্কোয়াডে ছিলেন এবং ফাইনালে পরিবর্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন।

জোটার মৃত্যুতে স্তম্ভিত লিভারপুলের সহ খেলোয়াড়রাও। তাঁর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেই বিয়ের ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন তিনি। সেই ছবিতে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন লিভারপুলের সতীর্থ অ্যালিসন বেকার, ডারউইন নুনেজ সহ আরও অনেকে। জোতা লিখেছিলেন, “আমি দুনিয়ার সবচেয়ে ভাগ্যবান পুরুষ।”

Liverpool & Portugal National Football Team forward Diogo Jota passes away at 28 in road accident