পুজোর আগেই রাস্তায় নামছে ২০০ পরিবেশবান্ধব সিএনজি বাস

শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ দফতর। রাজ্যের পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, আসন্ন দুর্গাপুজোর আগেই…

পুজোর আগেই রাস্তায় নামছে ২০০ পরিবেশবান্ধব সিএনজি বাস

শহরের পরিবহণ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ দফতর। রাজ্যের পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, আসন্ন দুর্গাপুজোর আগেই কলকাতার রাস্তায় নামবে একেবারে নতুন পরিবেশবান্ধব সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস)-চালিত এসি বাস (AC Bus)। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম দফায় রাস্তায় নামানো হবে ২০০টি বাস।

এই ‘গ্রিন বাস’ প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে ১২৫ কোটি টাকা। পরিবহণ দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের মতে, “শুধু পরিবেশ নয়, যাত্রীদের আরামদায়ক যাত্রাও এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।”

   

বাসের প্রকারভেদ ও সুযোগ-সুবিধা
এই ২০০টি বাসের মধ্যে থাকবে—

৫০টি স্ট্যান্ডার্ড ডিজেল এসি বাস (AC Bus)

৫০টি সেমি ডিজেল এসি বাস (AC Bus)

১০০টি মিনি এসি বাস (AC Bus)

বড় বাসগুলিতে (AC Bus) থাকবে ৪২টি আসন এবং মিনি বাসে থাকবে ৩১টি আসন। বাসগুলিতে থাকছে আধুনিক এসি ব্যবস্থা, আরামদায়ক আসন এবং ডিজিটাল টিকিটিং সুবিধা। পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন বাসগুলির ভাড়া বর্তমান এসি বাসের মতোই রাখা হবে।

Advertisements

দূষণ রোধে বড় পদক্ষেপ
নতুন এই বাসগুলি চালিত হবে সিএনজি-তে, যা ডিজেল বা পেট্রোলের তুলনায় অনেক কম দূষণ ঘটায়। ফলে শহরের বায়ু গুণমান উন্নত হবে এবং মানুষ স্বাস্থ্যকর পরিবেশে যাতায়াত করতে পারবেন।

কলকাতার বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগের কারণ। এই পরিস্থিতিতে পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। আধিকারিকরা মনে করছেন, এই বাসগুলি চালু হলে ধাপে ধাপে শহরের পুরনো ডিজেল বাসগুলি তুলে নেওয়া যাবে, যা আরও বড় দূষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

যাত্রী অসন্তোষ মেটাতে আধুনিকীকরণ
শহরের এসি বাস (AC Bus) পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তুষ্ট ছিলেন যাত্রীরা। বাসের সময়সূচি মানা না, বাস মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া, পুরনো বাসের খারাপ রক্ষণাবেক্ষণ— এইসব সমস্যার সমাধান করতেই আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাস নামানো হচ্ছে রাস্তায়।

এই ‘গ্রিন বাস’ প্রকল্পের অধীনে নতুন বাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও গড়ে তোলা হচ্ছে আলাদা ব্যবস্থাপনা ইউনিট। নতুন প্রযুক্তি নির্ভর বাস চালানোর জন্য চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ দফতর চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়েছে। পুজোর আগেই অন্তত ৫০টির বেশি বাস শহরের বিভিন্ন রুটে চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, রাজ্যের এই ‘গ্রিন বাস’ উদ্যোগ এক নতুন দিশা দেখাতে চলেছে কলকাতার যাত্রী পরিষেবায়। একদিকে যেমন যাত্রীরা পাবেন আরামদায়ক অভিজ্ঞতা, অন্যদিকে শহরের বায়ু হবে অনেকটাই নির্মল। এই প্রকল্প সফল হলে আগামী দিনে রাজ্যের অন্য শহরগুলিতেও এই মডেল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে পরিবহণ দফতরের।