কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কে.এস. অনিল কুমারের সাসপেনশনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SFI-Protest)-এর কর্মীরা আজ তিরুবনন্তপুরমে রাজভবনের দিকে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে এগিয়ে যান।
এই ঘটনায় রাজভবনের কাছে ভারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে। এই মিছিল এবং সংঘর্ষ কেরালার রাজনৈতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার পটভূমি
গত ২৫ জুন কেরল (SFI-Protest) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জরুরি অবস্থার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ‘ভারত মাতা’র ছবি প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে এসএফআই-এর প্রতিবাদের পর রেজিস্ট্রার অনিল কুমার অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করেন। এই ঘটনায় গভর্নর রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকার, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, উপস্থিত ছিলেন।
রেজিস্ট্রারের এই পদক্ষেপকে রাজভবন “গভর্নরের অপমান” এবং “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের বিরুদ্ধে” বলে বিবেচনা করে। ফলে, ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মোহন কুন্নুম্মল ২ জুলাই রেজিস্ট্রারকে সাসপেন্ড করেন। এসএফআই এই সাসপেনশনকে “অন্যায়” এবং “সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদের প্রতি সমর্থন” হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবাদে নামে।
প্রতিবাদ মিছিল ও সংঘর্ষ
এসএফআই, (SFI-Protest) যিনি শাসক সিপিআই(এম)-এর ছাত্র সংগঠন, রেজিস্ট্রারের সাসপেনশনের বিরুদ্ধে রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ মিছিল ডাকে। মিছিলে শত শত ছাত্র অংশ নেন, যারা “রাজভবন আরএসএস-এর সম্পত্তি নয়” এবং “ভারত মাতার ছবি সরাও” বলে স্লোগান দেন।প্রতিবাদকারীরা রাজভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান ব্যবহার করে।
এসএফআই নেতা সঞ্জীব পি.এস. এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “রেজিস্ট্রার মতো সৎ কর্মকর্তারা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে কাজ করেন, তখন তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এটা আরএসএস-এর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন।”
রাজনৈতিক বিতর্ক
এই ঘটনা কেরল রাজনীতিতে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এসএফআই (SFI-Protest) এবং কেরল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (কেএসইউ) দাবি করেছে, ভারত মাতার ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রদর্শিত হয়েছিল, কারণ এটি ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
অন্যদিকে, বিজেপি এবং আরএসএস-সমর্থিত সংগঠনগুলি রেজিস্ট্রারের পদক্ষেপকে “জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে” বলে সমালোচনা করেছে। বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, এসএফআই-এর প্রতিবাদ “ভারত মাতার অপমান” এবং “বামপন্থীদের দেশবিরোধী মনোভাব” প্রকাশ করে।
রাজভবন ও সরকারের প্রতিক্রিয়া
রাজভবন রেজিস্ট্রারের সাসপেনশনের পক্ষে থাকলেও,(SFI-Protest) রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর. বিন্দু এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে কাজ করেছেন। সাসপেনশনের অভিযোগ মিথ্যা।”
এলডিএফ-নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট সদস্যরাও বলেছেন, ভাইস-চ্যান্সেলরের এককভাবে সাসপেনশনের ক্ষমতা নেই, এবং এটি সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়া অবৈধ। রেজিস্ট্রার অনিল কুমার আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ইরাককে ৫-০ উড়িয়ে এশিয়ায় কাপের টিকিট নিশ্চিত করতে এক ম্যাচ দূরে ভারত
কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের (SFI-Protest) রেজিস্ট্রারের সাসপেনশন এবং এসএফআই-এর প্রতিবাদ রাজ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। এই ঘটনা ভারত মাতার ছবি এবং আরএসএস-এর প্রভাব নিয়ে বামপন্থী ও ডানপন্থী গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বকে আরও প্রকট করেছে।
পুলিশের জলকামান এবং ভারী মোতায়েন সত্ত্বেও, এসএফআই তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগামী দিনে এই ঘটনার আইনি ও রাজনৈতিক ফলাফল কেরালার শিক্ষা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে।