ভারতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) কোচের পদ থেকে মানোলো মার্কুয়েজের (Manolo Marquez) পদত্যাগে এক নতুন মোড় নিল দেশের ফুটবল (Football) মহলে। ২০২৪ সালে আশার আলো হয়ে যিনি এসেছিলেন, মাত্র এক বছরের মধ্যেই হতাশা আর ব্যর্থতার ভারে বিদায় নিলেন। এই বিদায় শুধু একজন কোচের নয়, বরং জাতীয় ফুটবল কাঠামোর গভীর সমস্যার ইঙ্গিত দিল।
এএফসি এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন পর্বে ভারতের করুণ পারফরম্যান্সই মূলত মার্কুয়েজের কোচিং জীবনের ইতি টানার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত হংকংয়ের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের পরাজয় ছিল সেই ‘ফাইনাল স্ট্রো’। আট ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় সেটিও ছিল মালদ্বীপের বিরুদ্ধে একক প্রীতি ম্যাচে। সেক্ষেত্রে জাতীয় দলের কোচের জন্য এহেন পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য।
২০২৪ সালের জুন মাসে জাতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্প্যানিশ কোচ মানোলো মার্কুয়েজ। তাঁর পেছনে ছিল আইএসএলের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসিকে গড়ে তোলার কৃতিত্ব এবং এফসি গোয়াকে সুপার কাপ জেতানোর সাফল্য। তিনি ছিলেন তরুণ প্রতিভা তুলে আনার জন্য সুপরিচিত। ভারতীয় ফুটবলের বহুপ্রতীক্ষিত রূপান্তরের আশা তাঁকে ঘিরেই তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু খুব দ্রুতই সেই আশায় ভাটা পড়ে। মাঠে দলের পারফরম্যান্স যাচ্ছিল নিম্নগামী পথে, আর মাঠের বাইরে তাঁর এফসি গোয়ার সাথে দ্বৈত ভূমিকা ঘিরে তৈরি হয় নানা বিতর্ক। অনেকেই অভিযোগ তোলেন যে, জাতীয় দলে খেলোয়াড় বাছাইয়ে পক্ষপাতিত্ব হয়েছে।
২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে যখন ভারত ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯৯ নম্বরে ছিল, তখন অনেকেই মনে করেছিলেন ভারতের ‘স্বর্ন যুগ’ হয়তো শুরু হয়েছে। কিন্তু ২০২৫ সালের জুলাইতে সেই র্যাঙ্কিং এসে দাঁড়িয়েছে ১২৭। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লজ্জাজনক ড্র, এশিয়ান কাপে একটিও ম্যাচ না জিতে গ্রুপ পর্বে সবার নীচে। এইসবই ফুটিয়ে তোলে ভারতীয় ফুটবলের বাস্তবতা।
মার্কুয়েজ নিজেই স্বীকার করেছেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারের পর ড্রেসিং রুমটা যেন শ্মশান হয়ে গিয়েছিল। তবুও আমি বিশ্বাস করতাম আমাদের সুযোগ আছে।” কিন্তু সেই বিশ্বাস আর মাঠে বাস্তবায়িত হয়নি।
সর্ব ভারতীয় ফুটবল সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে মার্কুয়েজের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে এবং নতুন কোচ খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। ফুটবল মহলে গুঞ্জন অনুযায়ী এবার দেশীয় কোচের দিকেই ঝুঁকছে ফেডারেশন। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছে সঞ্জয় সেন ও খালিদ জামিলের নাম। মোহনবাগান ও এটিকে মোহনবাগানে সফল সময় কাটানো সঞ্জয় সেনের অভিজ্ঞতা তাঁকে এগিয়ে রাখছে।