সমবায় সমিতি নির্বাচনে সমস্ত আসনে বিজেপির জয়, খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক শক্তি বাড়াচ্ছে বিজেপি (BJP)। সম্প্রতি একের পর এক সমবায় সমিতি নির্বাচনে জয়লাভ করে…

সমবায় সমিতি নির্বাচনে সমস্ত আসনে বিজেপির জয়, খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক শক্তি বাড়াচ্ছে বিজেপি (BJP)। সম্প্রতি একের পর এক সমবায় সমিতি নির্বাচনে জয়লাভ করে পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি এলাকায় নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করছে গেরুয়া শিবির।

বুধবার ছিল খেজুরি ১ নম্বর ব্লকের কামারদা দেউলবাড় সমবায় সমিতির প্রতিনিধি নির্বাচন। মোট ৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বিজেপি (BJP) ও তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে। সকাল থেকেই ভোটগ্রহণ পর্বে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খেজুরি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সকাল দশটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল তিনটে পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ।

   

ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, বিজেপি (BJP) সমর্থিত ৮ জন প্রার্থীই বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। একটি আসনেও জিততে পারেনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই ফল প্রকাশের পর বিজেপি শিবিরে উচ্ছ্বাসের আবহ তৈরি হয়। খেজুরির বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা শান্তনু প্রামাণিক বলেন, “এই জয় খেজুরির মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। আগামী ২৬শে বিধানসভা নির্বাচনে খেজুরি থেকে বিজেপি আরও বড় ব্যবধানে জয়লাভ করবে।”

তিনি আরও বলেন, “শাসক দলের অপশাসন, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষের প্রতি উদাসীনতার বিরুদ্ধে খেজুরির মানুষ রায় দিয়েছে। এই জয় শুধু সমবায় সমিতির নয়, এটা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জনমতের স্পষ্ট বার্তা।”

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব এই জয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের দাবি, “সমবায় সমিতি নির্বাচনে কোন দলীয় প্রতীক থাকে না। তাই বিজেপির (BJP) এই বিজয় উদযাপন অর্থহীন। জনগণের প্রকৃত রায় জানা যাবে বিধানসভা নির্বাচনে।”

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, খেজুরির মতো তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে বিজেপির (BJP) এই ধারাবাহিক জয় আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Advertisements

উল্লেখ্য, এর আগে গত রবিবার খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের কশতলা দারিকানাথ সমবায় সমিতির নির্বাচনেও ৯টি আসনের সবকটিতে বিজেপি (BJP) সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। টানা দুইটি সমবায় সমিতি নির্বাচনে বিজেপির একতরফা জয়ের ফলে এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে।

স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, “এই জয়গুলি নিছক সমবায় নির্বাচন নয়। এগুলি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এলাকার রাজনৈতিক প্রবাহের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিজেপি (BJP) সংগঠনের তৃণমূল স্তরের মজবুতি এবং ভোটারদের মনোভাব পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে এই নির্বাচনী ফলাফলে।”

বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই আগামী দিনের কর্মসূচি ঠিক করে ফেলেছে। আগামী দিনে আরও বড় আকারে প্রচারাভিযান চালিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

অপরদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস স্থানীয় স্তরে সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করতে উদ্যোগী হয়েছে। একাধিক কর্মীসভা ও বুথভিত্তিক পুনর্গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। খেজুরি ব্লকের রাজনৈতিক ময়দান এখন কার্যত বিজেপি (BJP) বনাম তৃণমূলের সরাসরি লড়াইয়ে পরিণত।