সিকিম বিতর্কে রাহুল গান্ধীকে নিশানা সুধাংশু ত্রিবেদীর

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় মুখপাত্র এবং রাজ্যসভার সাংসদ ড. সুধাংশু ত্রিবেদী (Sudhanshu-Tribedi)একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস পার্টি এবং তার নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ…

Sudhanshu-Tribedi slams rahul gandhi

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় মুখপাত্র এবং রাজ্যসভার সাংসদ ড. সুধাংশু ত্রিবেদী (Sudhanshu-Tribedi)একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস পার্টি এবং তার নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা অজয় কুমারের সাম্প্রতিক বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, যেখানে তিনি সিকিমকে ‘প্রতিবেশী দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, কংগ্রেসের জাতীয়তাবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

ত্রিবেদী (Sudhanshu-Tribedi) বলেন, “কংগ্রেস এমন একটি দল, যার নেতৃত্বে রয়েছেন রাহুল গান্ধী, যিনি বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকেন। তাঁর দলের সিনিয়র নেতারা নিজের দেশ এবং অন্য দেশের মধ্যে পার্থক্য করতে পারছেন না। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করতে এতটাই মরিয়া যে, তারা দেশ ও তার স্বার্থের ক্ষতি করছে।

   

তাদের বোঝা উচিত যে সিকিম ভারতের অংশ, এবং অন্ধভাবে মোদীর বিরোধিতা বন্ধ করতে হবে। তবেই তারা নিজের দেশের বাস্তবতা দেখতে পাবে।” এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

সিকিম বিতর্কের পটভূমি

কংগ্রেস নেতা অজয় কুমার, (Sudhanshu-Tribedi) যিনি ত্রিপুরা, ওড়িশা এবং নাগাল্যান্ডের এআইসিসি ইন-চার্জ এবং প্রাক্তন সাংসদ, সম্প্রতি একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সিকিমকে ‘প্রতিবেশী দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্য সিকিমের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং বিজেপি এই মন্তব্যকে কংগ্রেসের ‘টুকডে-টুকডে’ মানসিকতার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছে।

অজয় কুমারের (Sudhanshu-Tribedi) এই ভুল মন্তব্যের জন্য তিনি ইতিমধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন, দাবি করে যে এটি একটি ‘ভাষার ত্রুটি’ (স্লিপ অফ টাঙ্গ) ছিল। কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি বলেন, “সিকিম ভারতের অংশ, এবং এটি কংগ্রেসের কারণেই সম্ভব হয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন যে ১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে সিকিম ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।

তবে, বিজেপি এই ঘটনাকে কংগ্রেসের অজ্ঞতা এবং জাতীয়তার প্রতি অবহেলার প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছে। সুধাংশু ত্রিবেদী (Sudhanshu-Tribedi) বলেন, “কংগ্রেসের এই মনোভাব শুধুমাত্র অজ্ঞতাই নয়, বরং দেশের স্বার্থের প্রতি তাদের উদাসীনতার প্রতিফলন।” তিনি আরও বলেন, “রাহুল গান্ধী বিদেশে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বিষ ছড়ান, এবং তাঁর দলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন যা ভারতের অখণ্ডতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।”

বিজেপির তীব্র সমালোচনা (Sudhanshu-Tribedi)

সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিবেদী কংগ্রেসের ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “কংগ্রেস বারবার ভারতের মানচিত্রের সঙ্গে ছেদাছেদি করেছে। এর আগে রাহুল গান্ধী, শশী থারুর এবং কংগ্রেসের বিভিন্ন সংগঠন পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে) এবং অক্ষয় চিনকে ভারতের মানচিত্র থেকে বাদ দিয়েছে।”

Advertisements

তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০ সালে রাহুল গান্ধীর একটি টুইটে ভারতের মানচিত্র থেকে পিওকে এবং অক্ষয় চিন বাদ দেওয়া হয়েছিল, যা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার তীব্র আপত্তির মুখে পড়ে। ত্রিবেদী বলেন, “কংগ্রেসের এই মানসিকতা দেশকে বিভক্ত করার এবং সমাজে বিভেদ সৃষ্টির।”

কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া

অজয় কুমারের (Sudhanshu-Tribedi) মন্তব্যের জন্য কংগ্রেস তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। কংগ্রেস নেতা রশিদ আলভি এটিকে একটি ‘ভাষার ত্রুটি’ বলে দাবি করলেও, বিজেপি এটিকে কংগ্রেসের ‘বিরোধী-ভারত’ মনোভাবের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছে। বিজেপির দাবি, কংগ্রেসের নেতারা বারবার এমন মন্তব্য করে যা ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং সংহতির প্রতি অবমাননাকর। ত্রিবেদী বলেন, “কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তারা পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বন্ধ করেনি, এমনকি বারবার সন্ত্রাসবাদী হামলা সত্ত্বেও। এটি তাদের দ্বৈত চরিত্রের প্রমাণ।”

সুধাংশু ত্রিবেদীর (Sudhanshu-Tribedi) এই সাংবাদিক সম্মেলন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির ক্রমাগত আক্রমণের অংশ। অজয় কুমারের মন্তব্য কংগ্রেসকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে, এবং বিজেপি এটিকে তাদের ‘বিরোধী-ভারত’ বর্ণনাকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যবহার করছে।

অপরাজিতা বিলের পরও কেন কেন্দ্র নীরব? রাজনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে

ত্রিবেদীর মন্তব্যে কংগ্রেসের নেতৃত্বের জাতীয়তাবোধ এবং দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আগামী দিনে এই বিতর্ক রাজনৈতিক সমীকরণে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা দেখার বিষয়। তবে, এটি স্পষ্ট যে বিজেপি এই ঘটনাকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।