কসবা-কাণ্ডে বড় সিদ্ধান্ত, বরখাস্ত শিক্ষাকর্মী মনোজিত, ফেরত দিতে হবে বেতন

কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। ঘটনার তদন্তে নামার পাশাপাশি দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার। সোমবার কলেজের…

monojit mishra to returned money

কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের ছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। ঘটনার তদন্তে নামার পাশাপাশি দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার। সোমবার কলেজের অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী মনোজিত মিশ্রকে বরখাস্ত করেছিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। তার ঠিক পরদিন, মঙ্গলবার কলেজের পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে-চাকরির মেয়াদে কলেজ থেকে যেটুকু বেতন পেয়েছেন মনোজিত, তা সম্পূর্ণ ফেরত দিতে হবে।

ক্যাম্পাসেই গণধর্ষণ

এই ঘটনার সূত্রপাত কলেজ ক্যাম্পাসেই এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তিন জন অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে অন্যতম মনোজিত মিশ্র, যিনি অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী হিসেবে ২০২৪ সালে কলেজে নিয়োগ পান। প্রথমে ৪৫ দিনের জন্য নিয়োগ হলেও, একাধিকবার মেয়াদ বাড়িয়ে কলেজে তার কাজ চালু ছিল।

   

বহিষ্কৃত প্রমিত ও জইব monojit mishra to returned money

এই ঘটনায় মনোজিৎ ছাড়াও অভিযুক্ত প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জইব আহমেদ নামে দুই ছাত্রকেও বরখাস্ত করা হয়েছে কলেজ থেকে। মঙ্গলবার পরিচালন সমিতির বৈঠকে জানানো হয়, এই দুই ছাত্র যাতে আর কোনও কলেজে ভর্তি হতে না পারে, সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পরিচালন সমিতির সভাপতি ও বজবজের তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব জানান, “এই ধরনের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে কলেজের কেউ যুক্ত থাকলে, তার কোনও রকম রেহাই হবে না। মনোজিতের বার কাউন্সিলের সদস্যপদ বাতিলের জন্য আবেদন করা হবে। তদন্তে যাতে কোনও রকম গাফিলতি না হয়, সেই জন্য কলেজ পুলিশের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।”

নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত

ঘটনার পর কলেজ চত্বরে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত একগুচ্ছ নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, এখন থেকে কলেজ সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে। দুপুর ২টার পর ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা আর কলেজে থাকতে পারবে না। কলেজে ঢোকার সময় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আই-কার্ড৷ পাশাপাশি, কলেজে প্রবেশ করা যাবে না কোনও বহিরাগতের।

Advertisements

এই ঘটনায় কলেজের নিরাপত্তা রক্ষায় নিযুক্ত বেসরকারি সংস্থাকে শোকজ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, কলেজ চত্বরে আগে থেকেই কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, তবে ঘটনার সময় সেই নজরদারি ছিল একেবারেই অকার্যকর। সিসিটিভি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায়, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নতুন করে সারা কলেজে সিসিটিভি লাগানোর জন্য সম্প্রতি টেন্ডার ডাকা হয়েছে।

এতদিন কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি বা আইসিসি থাকলেও, সেটি কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল। মঙ্গলবারের বৈঠকে একটি নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাশ হয়েছে। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, এবার থেকে কলেজে মহিলা নিরাপত্তারক্ষীও নিযুক্ত করা হবে।

ঘটনার জেরে আপাতত কলেজের পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ চলায় অফিস খোলা রাখা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা দপ্তর ও পুলিশের সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত পঠনপাঠন চালু হবে না বলে জানানো হয়েছে।