ভুবনরেশ্বরে ওএএস কর্মকর্তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, কাজে ফিরছেন কর্মকর্তারা

ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) কমিশনার রাজেশ প্রভাকর পাটিল আজ ঘোষণা করেছেন যে, সিনিয়র ওডিশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (OAS-Officers) কর্মকর্তা এবং বিএমসি’র অতিরিক্ত কমিশনার রত্নাকর সাহুর উপর…

OAS-Officers beaten

ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) কমিশনার রাজেশ প্রভাকর পাটিল আজ ঘোষণা করেছেন যে, সিনিয়র ওডিশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (OAS-Officers) কর্মকর্তা এবং বিএমসি’র অতিরিক্ত কমিশনার রত্নাকর সাহুর উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে কর্মকর্তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব এবং সমস্ত কর্মকর্তারা কাজে ফিরতে সম্মত হয়েছেন।” (OAS-Officers) এই ঘোষণার মাধ্যমে ওডিশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ‘গণ ছুটি’র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে, এবং বিএমসি’র কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।

   

গত সোমবার (৩০ জুন) বিএমসি’র সদর দফতরে এক সাপ্তাহিক জনশুনানির সময় অতিরিক্ত কমিশনার রত্নাকর সাহু ছয় থেকে সাতজন ব্যক্তির দ্বারা নৃশংসভাবে আক্রান্ত হন। (OAS-Officers)এই ব্যক্তিরা স্থানীয় বিজেপি নেতা জগন্নাথ প্রধানের সমর্থক বলে অভিযোগ। হামলাকারীরা সাহুকে তাঁর কক্ষ থেকে টেনে বের করে মারধর করা এবং মুখে লাথি মারার অভিযোগ ওঠে ।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। বিজেডি নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক (OAS-Officers) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিকে তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই হামলা শুধু একজন কর্মকর্তার উপর নয়, গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর আঘাত।”

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিএমসি’র কর্মচারী এবং কর্মকর্তারা মঙ্গলবার (১ জুলাই) কালো ব্যাজ পরে কাজ বন্ধ করে এবং ধর্মঘট পালন করে। ওডিশা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও ‘গণ ছুটি’র ঘোষণা করেছিল।

এই ধর্মঘটের ফলে ভুবনেশ্বরের জনপথ রোডে বিক্ষোভের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিএমসি’র মেয়র সুলোচনা দাস এই ঘটনার নিন্দা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়েরের দাবি জানান। তিনি বলেন, “একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে প্রকাশ্যে হামলা করা অগ্রহণযোগ্য।”

কমিশনার পাটিল পুলিশ কমিশনার এস দেব দত্ত সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এই ঘটনা সকলের দ্বারা নিন্দিত হয়েছে। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশ অন্যান্য অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর। আমরা পুলিশের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছি।”

খারভেলা (OAS-Officers) নগর পুলিশ তিনজন অভিযুক্ত—কর্পোরেটর জীবন রাউত, রশ্মি মহাপাত্র এবং দেবাশিস প্রধানকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, জীবন রাউত হামলার প্ররোচনা দিয়েছিলেন, এবং অন্যরা সাহুকে আক্রান্ত করেছিল। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অন্য অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

Advertisements

পাটিল আরও জানান, তিনি সিসিটিভি ক্যামেরার ত্রুটির বিষয়টি তদন্ত করবেন। তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত করব ক্যামেরাগুলি কাজ করছিল কিনা। যদি ত্রুটি পাওয়া যায়, তবে তার কারণ খুঁজে বের করা হবে।” তিনি কর্মকর্তাদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করে বলেন, “তদন্ত চলছে, সেবা থেকে নিবৃত্ত হবেন না।” এই আশ্বাসের পর ওএএস কর্মকর্তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফিরেছেন।

এই ঘটনা ওডিশায় আইন-শৃঙ্খলার (OAS-Officers) অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। কংগ্রেস নেত্রী এবং বারাবাটি-কটকের বিধায়ক সোফিয়া ফিরদৌস বলেন, “যদি রাজধানীতে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নিরাপদ না হন, তবে সাধারণ নাগরিকদের কী নিরাপত্তা থাকবে? এটি পুরো প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর আক্রমণ।” বিজেডি নেতারা অভিযোগ করেছেন যে এই হামলার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। নবীন পট্টনায়েক বলেন, “এই ঘটনা রাজধানী ভুবনেশ্বরে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটেছে। সরকারের উচিত দায়ী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”

রাজেশ প্রভাকর (OAS-Officers) পাটিল, ২০০৫ ব্যাচের আইএএস কর্মকর্তা, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএমসি’র কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি সহযোগিতা বিভাগের কমিশনার-কাম-সচিব এবং হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট বিভাগের বিশেষ সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে বিএমসি স্যানিটেশন, পানীয় জল এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মতো নাগরিক পরিষেবা উন্নত করার উপর জোর দিয়েছে। এই ঘটনার পর তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শার্দুলের জায়গায় এই ক্রিকেটার? দ্বিতীয় টেস্টে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত কোচের

এই ঘটনা ভুবনেশ্বরে (OAS-Officers) সরকারি দফতরে নিরাপত্তা প্রোটোকল নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিএমসি’র কর্মচারীরা জানিয়েছেন, এই হামলা তাদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে। তবে, কমিশনার পাটিলের আশ্বাস এবং পুলিশের দ্রুত ব্যবস্থার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে, এবং পুলিশ অন্যান্য জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য তৎপর। এই ঘটনা ওডিশার প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নিরাপত্তা ও দায়বদ্ধতার গুরুত্ব পুনরায় তুলে ধরেছে।