কলকাতা: বিগত এক বছর ধরেই জল্পনা চলছিল-লোকসভা ভোটে দ্বিতীয়বার জয়ী হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব পাওয়া সুকান্ত মজুমদার কি রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ ছাড়বেন? ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির প্রেক্ষিতে সেই জল্পনা আরও জোরদার হয়। সূত্রের খবর, সেই জল্পনার অবসান এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
নাড্ডার বাসভবনে আমন্ত্রিত শমীক
সোমবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বাসভবনে রাজ্যসভার সাংসদ ও রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের উপস্থিতি ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়েছে। দিল্লিতে অবস্থান করা শমীকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলি প্রথমে জানিয়েছিল, তিনি গিয়েছেন একটি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে। কিন্তু পরে জানা যায়, সন্ধ্যায় তিনি নাড্ডার বাসভবনেও আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
এই আমন্ত্রণের প্রকৃত উদ্দেশ্য ঘিরে শুরু হয় জল্পনা। বিজেপির একাংশ প্রথমে দাবি করে, বিদেশে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সংক্রান্ত সফরে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের ডেকেছিলেন নাড্ডা। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই সেই প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতা সেরে নিয়েছেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে শুধুমাত্র সেই কারণেই কি বিজেপি সভাপতি তাঁদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাবেন?
হাজির ছিলেন রবিশঙ্কর প্রসাদও West Bengal BJP President
আরও বড় প্রশ্ন, বিদেশযাত্রায় অন্যান্য দলের নেতারাও ছিলেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যেতে পারেন, কিন্তু কেবল বিজেপি নেতারাই যে নাড্ডার বাসভবনে আমন্ত্রণ পাবেন, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। সূত্র বলছে, নাড্ডার ডাকে রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং শমীক ভট্টাচার্য, দু’জনেই হাজির ছিলেন যা পরিস্থিতিকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
রাজ্য বিজেপির অন্দরমহল বলছে, এই আমন্ত্রণ নিছক সৌজন্য নয় বরং শমীককে দেওয়া হয়েছে ‘সুনির্দিষ্ট বার্তা’। মঙ্গলবারই তিনি দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরছেন।
এর আগেই শনিবার রাতে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ নিয়ে আলোচনা করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। সেই বৈঠকেই তিনি রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট জানিয়ে দেন। বিজেপি সূত্র অনুযায়ী, ২ জুলাই মনোনয়ন পেশ এবং ৩ জুলাই সভাপতি বরণ অনুষ্ঠান হবে।
উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত কার্যত চূড়ান্ত
রাজ্য সভাপতি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদকে। তিনি কলকাতায় এসে প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঠিক এই প্রক্রিয়া শুরুর আগেই শমীকের আচমকা দিল্লি যাত্রা এবং নড্ডার বাসভবনে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে বিজেপির একাংশ মনে করছে এই পদক্ষেপ নিছক কাকতালীয় নয়। বরং বঙ্গ বিজেপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে দলীয় উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত কার্যত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা ৩ জুলাইয়ের নাম ঘোষণা এবং দায়িত্ব গ্রহণের।