বিকৃত মনোজিতের যৌ*ন কাহিনি, সঙ্গ*মের ভিডিওতে গর্ববোধ

কলকাতা: কসবা ল’ কলেজ (Kasba Law College) গণধর্ষণকাণ্ড যত সময় যাচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের (Manojit Mishra) বিকৃত মানসিকতার একের পর এক রোমহর্ষক…

বিকৃত মনোজিতের যৌ*ন কাহিনি, সঙ্গ*মের ভিডিওতে গর্ববোধ

কলকাতা: কসবা ল’ কলেজ (Kasba Law College) গণধর্ষণকাণ্ড যত সময় যাচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রের (Manojit Mishra) বিকৃত মানসিকতার একের পর এক রোমহর্ষক তথ্য। কলকাতার এই আইনের ছাত্রের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে যৌন নির্যাতন, মারধর, ব্ল্যাকমেল এবং ভয়াবহ যৌন অপরাধের একাধিক অভিযোগ।

সূত্রের খবর, মনোজিৎ কলেজ জীবনে বহু ছাত্রীকে হেনস্থা করেছে। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, সে প্রায়শই কলেজের (Kasba Law College) জুনিয়র ছাত্রীদের শরীরের আপত্তিকর ছবি তুলত এবং সেই ছবি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করত। শুধু তাই নয়, নিজের সঙ্গমের মুহূর্তের ভিডিও মোবাইলে তুলে রাখত এবং সেই ভিডিও দেখিয়ে ‘গর্ব’ অনুভব করত মনোজিৎ। তার বন্ধুদের দাবি, সে ‘হিসেব’ রাখত—কতজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছে সে।

   

কলেজ ক্যাম্পাসে কোনও নতুন ছাত্রীকে দেখলেই, বিনা দ্বিধায় বিয়ের প্রস্তাব দিত মনোজিৎ। অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে শুরু হত অশালীন মন্তব্য, মানসিক নির্যাতন এবং মাঝে মধ্যেই শারীরিক নিগ্রহ। অভিযোগ রয়েছে, যে ছাত্রী রাজি না হতেন, তাঁকে ভয় দেখানো হত আগের ভিডিও দেখিয়ে।

শুধু কলেজ (Kasba Law College) ক্যাম্পাসেই নয়, কলেজ ট্রিপেও মনোজিৎ ‘শিকার’ খুঁজে বেড়াত। এক ছাত্রী জানিয়েছেন, তিনি পাঁচ ঘণ্টা ধরে কলেজ ট্রিপে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন মনোজিতের হাত থেকে বাঁচার জন্য। সহপাঠীদের মতে, ‘নোংরা যৌনতা’ এবং ‘শারীরিক যন্ত্রণা’র ভিডিও তোলা এবং দেখানো ছিল মনোজিতের বিশেষ নেশা।

মনোজিতের বিরুদ্ধে শুধু যৌন অপরাধই নয়, রয়েছে ভয়ংকর সহিংসতার অভিযোগও। জানা গেছে, ২০১৩ সালে এক ক্যাটারিং কর্মীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে তাঁর আঙুল কেটে দেয় মনোজিৎ। সেই ঘটনার পরে প্রায় তিন বছর নিখোঁজ ছিল সে। এরপর ফের ফিরে এসে একই ধরনের অপরাধমূলক আচরণ চালিয়ে যায়।

কলেজের (Kasba Law College) একাধিক ছাত্র-ছাত্রী জানিয়েছেন, মনোজিতের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ উঠেছিল, কিন্তু উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি কলেজ প্রশাসন। ফলে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল সে।

Advertisements

সম্প্রতি নির্যাতিত ছাত্রীর সঙ্গে জোর করে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া থেকে শুরু করে, তাঁকে মারধর, যৌন নির্যাতন এবং সেই ভিডিও মোবাইলে তুলে রাখার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে রীতিমতো তোলপাড় রাজ্যের রাজনীতি ও শিক্ষাঙ্গন।

পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজিতের মোবাইল ফোন থেকে ইতিমধ্যে বেশ কিছু আপত্তিকর ভিডিও, ছবি এবং চ্যাট উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। জানা যাচ্ছে, শুধু এই নির্যাতনের ঘটনা নয়, অতীতের একাধিক ছাত্রীকেও একইভাবে টার্গেট করেছে মনোজিৎ।

মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানাচ্ছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। অনেকেই বলছেন, এই ধরনের বিকৃত মানসিকতার অপরাধীর কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত।

তদন্তকারীরা মনোজিতের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ে ব্যস্ত। কলেজ (Kasba Law College) ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ, হোস্টেলের বন্ধুত্বের সার্কেল, মোবাইল ডেটা—সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের অনুমান, এই মামলায় আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে।

সম্পূর্ণ বিষয়টির উপর পুলিশের কড়া নজর। সামাজিক সুরক্ষা এবং শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।