কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হল। জনস্বার্থ মামলা করেছেন বিজয় সিংহল। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে যিনি প্রথম আবেদন করেছিলেন, এবার কসবা ল- কলেজ কাণ্ডে তিনিই ফের আদালতের দ্বারস্থ হলেন।
সোমবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সোমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের সামনে মামলাটি উত্থাপন করেন আবেদনকারী। আদালতের অনুমতি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বিজয় সিংহলের দাবি, এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ কমিশনার এবং কলেজ (Kasba Law College) কর্তৃপক্ষের ভূমিকা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেছেন, নির্যাতিতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক এবং ঘটনাস্থলের ফোরেনসিক তদন্তের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হোক।
মামলায় তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা এবং রাজ্য সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণেই এমন লজ্জাজনক ঘটনা ঘটেছে। তাই আদালতের হস্তক্ষেপ জরুরি।
জানা গিয়েছে, মামলার মূল দাবির মধ্যে রয়েছে—
নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আদালতের মনিটরিং
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট পেশ
নির্যাতিতার পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ
কলেজে (Kasba Law College) স্থায়ী সিসিটিভি ও নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির নির্দেশ
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করেছে। আগামী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা জানান, তদন্ত যথাযথভাবেই এগোচ্ছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছে। কলেজ (Kasba Law College) প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আদালতে এবার সরাসরি জনস্বার্থ মামলা উঠতে রাজ্য সরকারের উপর চাপ আরও বাড়ল বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল।
অন্যদিকে, বিরোধীরা এই মামলাকে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে এবার আদালতেও মামলা। এটা অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ।’’
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সরকার ও পুলিশ যথেষ্ট দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। মামলা চলবে, আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কসবা ল-কলেজের (Kasba Law College) ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ায় এই কাণ্ডে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
এখন সকলের নজর আগামী শুনানির দিকে। বিচারপতি সোমেন সেনের বেঞ্চ কী নির্দেশ দেয়, তার দিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।