হাসনাবাদ: হাসনাবাদ-শিয়ালদহ শাখার যাত্রীদের জন্য সোমবার সকালটা শুরু হয়েছে চরম দুর্ভোগ নিয়ে। রাস্তার দাবিতে সকাল থেকেই ভাসিলা স্টেশনে রেল (Train) অবরোধে সামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, স্টেশনে পৌঁছানোর রাস্তা বছরের পর বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় রাস্তাটি কার্যত দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে ওঠে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ভাসিলা স্টেশনের রেললাইনের (Train) উপর বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এতে একের পর এক লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। হাসনাবাদ-শিয়ালদহ শাখার গুরুত্বপূর্ণ অফিস টাইম ট্রেনগুলি দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। পরপর ট্রেন বাতিল ও দেরি হওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
স্থানীয়দের বক্তব্য, বারবার রেল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের কাছে রাস্তার দুরবস্থার কথা জানানো হয়েছে। বহুবার লিখিত ও মৌখিক আবেদন করেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। বর্ষার সময় কাদা, জলজমা, এবং বড় বড় গর্তে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। অনেক স্কুল পড়ুয়া, অফিসগামী মানুষ প্রতিদিন এই দুর্দশার শিকার হচ্ছেন।
অবশেষে বাধ্য হয়েই এদিন রেল (Train) অবরোধের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেল আধিকারিকরা। দীর্ঘ আলোচনা ও দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাসের পর প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে অবরোধ ওঠে।
রেল সূত্রের খবর, সকাল ৯টা নাগাদ অবরোধ ওঠার পর ধীরে ধীরে ট্রেন (Train) চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু অবরোধের কারণে পুরো শিডিউল এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ ট্রেন দেরিতে চলছে। ট্রেনের গতিও স্বাভাবিকের তুলনায় কমিয়ে রাখা হয়েছে নিরাপত্তার খাতিরে। ফলে অফিস টাইমে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে যাত্রীদের অসহ্য পরিস্থিতির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
একদিকে রাতভর বৃষ্টি, তার উপর এই রেল (Train) অবরোধ – দুইয়ে মিলে সোমবারের সকালটা কার্যত দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে কলকাতা এবং শহরতলির নিত্যযাত্রীদের জন্য।
এদিকে শুধু উপরের রেল নয়, পাতালপথেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। কলকাতা মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদনি চক ও সেন্ট্রাল স্টেশনের মাঝখানে লাইনের উপর জল জমে যাওয়ায় আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় মেট্রো চলাচল। ফলে মেট্রো রুটের যাত্রীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হন। অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প যানবাহনের খোঁজে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। ফলে রাস্তাঘাটেও প্রচণ্ড ভিড় ও যানজট তৈরি হয়।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব জল অপসারণ করে পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে কখন পুরোপুরি পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তার নির্দিষ্ট সময় এখনও জানানো হয়নি।
যাত্রীদের অভিযোগ, একদিকে রেল (Train) অবরোধ, অন্যদিকে মেট্রো সমস্যার কারণে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে তাঁদের নানারকম সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। অনেকেই সময়মতো অফিস বা স্কুলে পৌঁছতে পারেননি।
স্থানীয় প্রশাসন ও রেল (Train) কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাস্তার সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে আদৌ সেই কাজ শুরু হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান এলাকাবাসী।