কসবা কলেজে সিট গঠন, বিরোধীর চাপ!

কলকাতা: সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এবার বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে পাঁচ…

কসবা কলেজে সিট গঠন, বিরোধীর চাপ!

কলকাতা: সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় এবার বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এসি (এসএসডি) প্রদীপ ঘোষাল থাকবেন এই SIT-এর নেতৃত্বে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের (Kasba Law College) প্রাক্তন ছাত্রনেতা মনোজিৎ মিশ্র, জায়েদ আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়াও কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

   

ঘটনার নিরিখে জানা গিয়েছে, গত ২৫ জুন গড়িয়াহাটের সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের (Kasba Law College) ক্যাম্পাসের মধ্যেই ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর সামনে আসতেই প্রবল চাঞ্চল্য ছড়ায় শহর জুড়ে।

প্রথম দফায় তিন অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর চতুর্থ অভিযুক্ত অর্থাৎ কলেজের (Kasba Law College) নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আইনি নিয়ম মেনেই চলছে। যথাযথভাবে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং ফরেনসিক টিম কলেজ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে।

কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত নিরপেক্ষ এবং দ্রুত গতিতে চলছে। তবে পুলিশের অভিযোগ, কেউ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনার সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যে তথ্য ছড়াচ্ছেন। কলকাতা পুলিশ স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছে যে, কেউ যদি ভুয়ো তথ্য ছড়ান বা এই ঘটনাকে বিভ্রান্তিমূলকভাবে উপস্থাপন করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ঘটনার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নারী নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি সহ বিরোধী দলগুলি।

Advertisements

শুক্রবার কসবা থানার সামনে বিক্ষোভে নামেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয়। শেষপর্যন্ত সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এই ঘটনার নিন্দা করে বিজেপি দাবি করেছে, রাজ্যে নারী নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন সরকারের চাপের কাছে মাথা নত করছে।

বিজেপি নেতাদের দাবি, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। অন্যদিকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, সরকার ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ করছে এবং আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষ তদন্তকারী দল এখন সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কলেজের অন্যান্য কর্মী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে খবর। কলকাতা পুলিশের দাবি, খুব শিগগিরই তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দ্রুত দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনার পর সাউথ কলকাতা ল কলেজের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা ভয় এবং উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। কলকাতা পুলিশের ওপর এখন বড় দায়িত্ব— দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে এই ঘটনার তদন্ত শেষ করা এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।