হেডিংলেতে পাঁচ উইকেটের হার ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) আত্মবিশ্বাসে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে ঠিকই। তবে এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টের (Edgbaston Test) আগে নিজেদের প্রস্তুতিতে বিন্দুমাত্র ঢিলেমি রাখছেন না কোচ গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) ছেলেরা। শুক্রবার বার্মিংহামের এজবাস্টনে ছিল ভারতীয় দলের পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন সেশন, যেখানে শুরু থেকেই ছিল তীব্র মনোযোগ ও কঠোর পরিশ্রমের ছাপ।
প্রথমে দিনের শুরুতে এক ঘন্টাব্যাপী ফিল্ডিং সেশন, যেটিতে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় সবাই। স্লিপ ক্যাচিং, ফ্ল্যাট ক্যাচিং থেকে শুরু করে ডাইরেক্ট হিটের অনুশীলন সবকিছুতেই ছিল নিখুঁত মনোযোগ। হেডিংলেতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফেলার কারণে ম্যাচের মোড় ঘুরে গিয়েছিল, তাই দ্বিতীয় টেস্টের আগে ফিল্ডিং অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে দল।
তবে নজর কেড়েছে যে বিষয়টি, তা হল প্রধান পেসার জসপ্রীত বুমরাহ এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের অনুপস্থিতি বোলিং অনুশীলনে। তাঁরা অবশ্য পুরো সময়টা ব্যস্ত ছিলেন ফিটনেস এবং রানিং ড্রিল নিয়ে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মহম্মদ সিরাজও, যিনি একটু ব্যাটিং অনুশীলনের পর ফিটনেস সেশনে অংশ নেন। কোচিং স্টাফ রায়ান টেন ডসকাটের সঙ্গে সিরাজের একটি বিশেষ ব্যাটিং সেশন হয়, যেখানে শুধু শর্ট বলের বিরুদ্ধে কৌশল নিয়ে কাজ হয়।
স্পিনারদের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে বাড়তি গুরুত্ব। রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব এবং ওয়াশিংটন সুন্দর এই স্পিন ত্রয়ী ঘণ্টাখানেক একটানা বোলিং করেন নেটে। অনুশীলন উইকেটেই দেখা গেছে ভালো টার্ন পাচ্ছেন কুলদীপ ও সুন্দর, বিশেষ করে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ঋষভ পন্থকে বেশ কয়েকবার বিপদে ফেলেন তাঁরা। যদি এজবাস্টনের উইকেট শুষ্ক ও ফ্ল্যাট হয়, তাহলে ভারতের প্রথম একাদশে দুটি স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে পেস বোলিং অনুশীলনে ছিলেন আর্শদীপ সিং, আকাশ দীপ, শার্দুল ঠাকুর এবং নীতিশ কুমার রেড্ডি। এঁদের মধ্যে আর্শদীপ এবং আকাশ দীপ নতুন এবং পুরনো দু’ধরনের বলেই অনুশীলন করেন। নতুন বলে সুইং করে শুভমন গিল, যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল এবং পন্থকে বেশ কয়েকবার বিপদে ফেলেন তাঁরা। যদি প্রথম টেস্টের কোনো পেসার বিশ্রামে যান, তাহলে দ্বিতীয় টেস্টে আর্শদীপ বা আকাশ দীপের অভিষেক দেখা যেতে পারে।
ব্যাটসম্যানদের মধ্যে গিল, জয়সওয়াল, রাহুল এবং পন্থ তাঁদের স্বাভাবিক ব্যাটিং পজিশন অনুযায়ী রোটেশনে নেটে ব্যাট করেন। তবে কিছুটা চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে সাই সুদর্শন ও করুণ নায়ার। ব্যাটিং অর্ডারে রেড্ডিকে অন্তর্ভুক্ত করতে গেলে তাঁদের মধ্যে কেউ একজন বাদ পড়তেই পারেন।
প্র্যাকটিস শেষে সাই সুদর্শন এবং ওয়াশিংটন সুন্দর ছিলেন টেন ডসকাটের সঙ্গে অতিরিক্ত নকিং সেশনে। এটি ইঙ্গিত দেয়, দু’জনই দ্বিতীয় টেস্টে একাদশে ঠাঁই পাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
প্রধান কোচ গম্ভীর ও বোলিং কোচ মর্কেল ছিলেন যথেষ্ট উত্তেজিত ও প্রাণবন্ত। গম্ভীর লম্বা সময় কথা বলেন আর্শদীপের সঙ্গে, অন্যদিকে মর্কেল নীতিশ রেড্ডিকে নিয়ে আলাদা করে কাজ করেন। অনুশীলনের শেষে প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকর ও অধিনায়ক গিলের মধ্যে প্রায় ২০ মিনিটের দীর্ঘ আলোচনা নজর কেড়েছে।
দ্বিতীয় টেস্টে ভারত কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? সেটাই এখন কোটি কোটি ভারতীয় সমর্থকের বড় প্রশ্ন। তবে প্রস্তুতি দেখে একটা কথা নিশ্চিত—গম্ভীরদের দল হার মানতে রাজি নয়।
Indian Cricket Team Edgbaston Test preparation