জলমগ্ন ঘাটাল, হিরণের কণ্ঠে উদ্বেগ— মোদিকে চিঠি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে

বর্ষা এলেই আতঙ্ক ঘাটাল ও সংলগ্ন এলাকায়। মেদিনীপুরের (Hiran chatterjee)  বিস্তীর্ণ অংশ এখন কার্যত জলমগ্ন। প্রতি বছরের মতো এবারও পরিস্থিতি বদলায়নি। সাধারণ মানুষের কষ্ট চরমে।…

Hiran Chattopadhyay Leads Tiranga Yatra in Keshiary to Honour Indian Army’s Bravery

বর্ষা এলেই আতঙ্ক ঘাটাল ও সংলগ্ন এলাকায়। মেদিনীপুরের (Hiran chatterjee)  বিস্তীর্ণ অংশ এখন কার্যত জলমগ্ন। প্রতি বছরের মতো এবারও পরিস্থিতি বদলায়নি। সাধারণ মানুষের কষ্ট চরমে। ঘরবাড়ি ডুবে যাচ্ছে, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাচ্ছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ। হাসপাতালে পৌঁছানো কঠিন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ ব্যাহত। সব মিলিয়ে একটা দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঘাটাল-সহ আশেপাশের এলাকায়।(Hiran chatterjee)  

এই জলযন্ত্রণার যেন কোনও শেষ নেই। অথচ বহু প্রতীক্ষিত(Hiran chatterjee)  ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ কিছুদিন আগেই শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেই কাজ কতদূর এগোল? বাস্তব ছবি বলছে, মাঠে-ময়দানে এখনো তেমন চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি হয়নি। নদী খনন, জলনিকাশি, বাঁধ নির্মাণ— এসবের কোনওটাই এখনও সেভাবে দৃশ্যমান নয়। ফলে ঘাটালবাসীর প্রশ্ন, “আর কত বছর আমাদের এই কষ্ট সহ্য করতে হবে?”(Hiran chatterjee)  

   

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক চাপানউতোর তীব্র হয়েছে। শাসক তৃণমূল এবং কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে একে অপরকে দায় চাপানোর খেলা শুরু হয়েছে। রাজ্যের তারকা সাংসদ দেব সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট ভাষায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের অসহযোগিতার জন্যই ঘাটালের মানুষ বারবার জলবন্দি হয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে, এই জলবন্দি পরিস্থিতিতে বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন। সেই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ঘাটাল পুরোপুরি জলের তলায়। বহু মানুষ ন্যূনতম ত্রাণসামগ্রী পাচ্ছেন না। তাঁরা সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন। চিঠিতে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।

এই প্রেক্ষিতে, মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিস্তৃত মন্তব্য করেন। তাঁর অভিযোগ, এই প্রকল্প বহু বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজও তা পূর্ণ হয়নি। তিনি বলেন,

Advertisements

> “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করার কথা অনেক আগেই উঠেছিল। কেন্দ্র করেনি। আমরাই কাজ শুরু করেছি। এতে খরচ হবে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। কাজ শেষ হতে দু’ থেকে তিন বছর সময় লাগবে।”

তিনি আরও জানান, “মানসদা (মানস ভুঁইঞা) তো কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পের জন্য অন্তত ২০ বার আবেদন করেছেন, চিৎকার করেছেন। তাও কেন্দ্র করে দেয়নি। আমরা শেষ পর্যন্ত কাজ করেছি। এখন ঘাটালের কাজও করছি। এতে মেদিনীপুরবাসীর উপকার হবে। বর্ষায় আর জলমগ্ন হয়ে থাকতে হবে না।”

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্য সরকার যখন নিজেই কাজের দায়িত্ব নিয়েছে, তখন সেই কাজের অগ্রগতি কেমন? স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এখনও বহু এলাকায় বাস্তবায়নের কোনও ছাপ নেই। খাল ও নদীগুলোর সংস্কার হয়নি। বর্ষার জলে প্লাবনের রূপ নিয়েছে পুরো এলাকা।

সব মিলিয়ে, পরিস্থিতি এমন যে মানুষ এখন আর আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারছে না। তারা চাইছে বাস্তব পদক্ষেপ। বর্ষায় ভেসে যাওয়ার এই যন্ত্রণা যেন আর না ফিরে আসে, সেই চাওয়া আজ ঘাটালবাসীর মুখে মুখে। কেন্দ্র-রাজ্য একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল না তুলে যদি বাস্তবিক অর্থে সমন্বয় করে কাজ করে, তাহলেই হয়তো ভবিষ্যতে ঘাটাল মুক্ত হবে জলদু:খ থেকে।