নয়াদিল্লি: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পকে কার্যত ব্যর্থ বলে দাবি করলেন কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শনিবার দিল্লির নেহরু প্লেসে দু’জন টেকনিশিয়ানের সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি বলেন, ভারতে প্রকৃত অর্থে উৎপাদন হচ্ছে না, বরং বাইরের দেশ, বিশেষ করে চীন থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশ দিয়ে শুধু মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য “Assemble” করা হচ্ছে।
উৎপাদন রেকর্ড নীচে
রাহুল বলেন, “মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি ছিল দেশে ব্যাপক হারে কারখানা গড়ে উঠবে। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা উল্টো। ভারতে এখন উৎপাদন রেকর্ড নীচে, বেকারত্ব রেকর্ড উপরে, আর চীন থেকে আমদানি দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।”
তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “যদি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকৃত অর্থে সফল হত, তাহলে দেশে উৎপাদন জিডিপি-র মাত্র ১৪ শতাংশে নেমে এল কীভাবে?” তাঁর মতে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেবলমাত্র স্লোগান তৈরি করতে পারদর্শী, বাস্তব সমাধান তাঁর হাতে নেই।”
‘আমরা শুধু অ্যাসেম্বল করি, তৈরি করি না’ Rahul Gandhi criticizes Make in India
রাহুল আরও বলেন, “ভারত ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ নয়, ‘অ্যাসেম্বল ইন ইন্ডিয়া’। এর ফলে লাভ হচ্ছে চীনের, ভারতের নয়। মোবাইল-ল্যাপটপ ইন্ডাস্ট্রিতে চীনের দখল একচেটিয়া। আমরা কেবল বিদেশি কোম্পানিগুলোর জন্য assembling কাজ করছি, নিজস্ব উৎপাদনের ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারছি না।”
‘iPhone যত অ্যাসেম্বলই হোক, আসল লাভ যায় বিদেশেই’
এদিন তিনি মোবাইল টেকনিশিয়ান শিবম এবং সাইফের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাহুল বলেন, “iPhone যত অ্যাসেম্বলই করুন না কেন, লাভটা বড় কর্পোরেটদেরই হচ্ছে। এই অ্যাসেম্বলিং কোনও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। কাজ চাই, উৎপাদন চাই, আর চাই প্রকৃত অর্থে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’।”
চায়নার সঙ্গে তুলনা তুলে ধরলেন রাহুল
রাহুল গান্ধীর মতে, চীন যেখানে তাদের দেশের সমস্ত উৎপাদন খাতে পরিকাঠামো, গবেষণা ও নিজস্ব প্রযুক্তির উপর জোর দিয়েছে, সেখানে ভারত এখনও আমদানি নির্ভরতায় চলছে। “আমরা বাজার হয়েছি, নির্মাতা নই। যতদিন না আমরা নিজেদের দেশে উৎপাদনে জোর দিই, ততদিন আমরা পিছিয়েই থাকব,”— টুইটারে লেখেন তিনি।
‘স্লোগান নয়, চাই বাস্তব সংস্কার’
রাহুল গান্ধীর পরামর্শ, “ভারতকে এখনই একটি মৌলিক পরিবর্তনের পথে হাঁটতে হবে, যেখানে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদকদের আর্থিক সহায়তা, প্রকৃত সংস্কার ও স্বনির্ভরতার সুযোগ দেওয়া হবে। সময় খুব কম, আমাদের এখনই শুরু করতে হবে।”