Home loan approval tips: নিজের একটি বাড়ির মালিক হওয়া শুধুমাত্র জীবনের এক অন্যতম বড় আর্থিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একজন মানুষের সাফল্য এবং স্থায়িত্বের প্রতীকও বটে। ভারতের মতো দেশে আজও বহু মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে গৃহঋণ নেওয়াই একমাত্র উপায় স্বপ্নের বাড়ি কেনার। তবে প্রথমবারের ক্রেতাদের জন্য ঋণের অনুমোদন বা অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে দেরি হওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋণের দ্রুত অনুমোদনের জন্য শুধুমাত্র যোগ্যতা থাকলেই হবে না, পাশাপাশি প্রয়োজন পড়ে সঠিক প্রস্তুতি, নির্ভরযোগ্যতা এবং সময়জ্ঞান। “আমি বিশ্বাস করি, ছোট ছোট পদক্ষেপই বড় সাফল্যের পথে নিয়ে যায়। ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রেও তা সত্য,” বললেন রুপয়া পয়সা-র ডিরেক্টর মুকেশ পাণ্ডে।
তাঁর পরামর্শে রইল এমন ৭টি কার্যকরী উপায়, যা অনুসরণ করলে সহজেই গৃহঋণ পাওয়া সম্ভব হবে দ্রুত এবং জটিলতা ছাড়াই।
১. ভাল ক্রেডিট স্কোর বজায় রাখা
ঋণদাতারা সর্বপ্রথম দেখে থাকেন আবেদনকারীর ক্রেডিট স্কোর। ৭৫০-এর উপরে স্কোর থাকলে সেটি একটি ইতিবাচক সংকেত দেয়। এটি প্রমাণ করে যে আবেদনকারী সময়মতো ইএমআই ও ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করে থাকেন। তাই যেকোনো ঋণের আগে নিয়মিত ভাবে সমস্ত অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতা পালন করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞ মত: “আপনার বিল এবং ঋণ মাসে মাসে সময়মতো পরিশোধ করুন। তবেই ভবিষ্যতের গৃহঋণের জন্য আপনি এগিয়ে থাকবেন,” বললেন পাণ্ডে।
২. সমস্ত নথিপত্র প্রস্তুত ও আপডেটেড রাখুন
অর্ধেক দেরি হয় নথিপত্রের ঘাটতির কারণে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগেই কেওয়াইসি, বেতন স্লিপ, আয়কর রিটার্ন (ITR), ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও চাকরির প্রমাণাদি প্রস্তুত করে রাখুন।
এর ফলে প্রক্রিয়াটি দ্রুত ও বাধাহীন হবে।
৩. সঠিক ঋণদাতা নির্বাচন করুন
একাধিক স্থানে একসঙ্গে আবেদন না করে এমন ঋণদাতা বেছে নিন যারা আপনার অর্থনৈতিক অবস্থান ও প্রোফাইল অনুযায়ী ঋণ দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
বারবার আবেদন করলে আপনার ক্রেডিট স্কোরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
৪. ঋণ আবেদনের আগে চাকরি বদল না করাই ভালো
আপনার চাকরির ধারাবাহিকতা ঋণদাতাদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। যদি আপনি ৬ মাস থেকে ১ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকেন, তবে ঋণদাতারা আপনাকে কম ঝুঁকিপূর্ণ বলেই বিবেচনা করবেন।
চাকরি বদলের কারণে অনেক সময় আবেদন বাতিলও হয়ে যেতে পারে।
৫. সামর্থ্যের মধ্যে ঋণ নিন
অতিরিক্ত ঋণের জন্য আবেদন করলে তা লাল নিশান দেখাতে পারে। ঋণগ্রহণের আগে একটি loan eligibility calculator ব্যবহার করে জেনে নিন আপনি ঠিক কতটা ঋণ নিতে সক্ষম।
এর ফলে ঋণের পরিমাণ আপনার আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে এবং অনুমোদন সহজ হবে।
৬. অনলাইনে আবেদন করুন, সময় বাঁচান
বর্তমানে বেশিরভাগ ব্যাংক ও এনবিএফসি (NBFC)-রা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দ্রুত ঋণ অনুমোদন দিচ্ছে। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুধু সময়ই বাঁচায় না, বরং নথিপত্র যাচাই করাও হয় খুব দ্রুত।
অনলাইনের মাধ্যমে KYC ও অন্যান্য যাচাই প্রক্রিয়াও ডিজিটালি হয়ে যায়।
৭. ঋণ নেওয়ার আগে বকেয়া পরিশোধ করুন
ঋণের আগে আপনার আগের সমস্ত ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে আপনার ঋণ-আয় অনুপাত (Debt-to-Income Ratio) কমে যাবে এবং আপনি নতুন ঋণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
এটি ঋণের পরিমাণ নির্ধারণের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একটি বাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণে গৃহঋণ অনেকের জীবন বদলে দিতে পারে। তবে ঋণ পাওয়ার পথে দেরি বা বাধা এড়াতে হলে দরকার কিছু কৌশলী পদক্ষেপ ও আগাম প্রস্তুতি। উপরিউক্ত পরামর্শগুলি মেনে চললে আপনি যেমন দ্রুত ঋণ অনুমোদন পাবেন, তেমনি ভবিষ্যতের আর্থিক চাপ থেকেও মুক্ত থাকতে পারবেন। তাই আজ থেকেই শুরু করুন পরিকল্পনা, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা গড়ে তুলুন নিজের বাড়ির চাবিতে।