আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) লিগ পর্বের শেষদিকে এসে এক হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings) ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians)। জয়ী দলের জন্য প্লে-অফ নিশ্চিত, এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচটি হয়ে উঠেছিল কার্যত ‘নকআউট’। জয়পুরের সওয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে পঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রথমে বল করার।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ১৮৪ রান সাত উইকেট হারিয়ে। এদিন মুম্বইয়ের হয়ে ফের একবার দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করেন সূর্যকুমার যাদব। ৫৭ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংস খেলে দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেন তিনি। তবে পঞ্জাবের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে বারবার মুম্বই ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলেন।
১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পঞ্জাব কিংসের দুই ওপেনার জশ ইংলিস ও প্রিয়ান্স আর্য শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নেন। দু’জনেই হাফ-সেঞ্চুরি করেন এবং একটি শক্ত ভিত গড়ে দেন দলের জয়ের জন্য। ইংলিস ৭৩ ও প্রিয়ান্স ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। দু’জনের জুটি ভেঙে যাওয়ার পরে চাপের মুখে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। একদিকে উইকেট ধরে রেখে অন্যদিকে স্কোরবোর্ড সচল রেখে ম্যাচ শেষ করে আসেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত ১৮.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পঞ্জাব কিংস। এই জয়ের ফলে তারা উঠে যায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে এবং নিশ্চিত করে আইপিএল ২০২৫-এর কোয়ালিফায়ার ১-এ নিজেদের স্থান। এই ম্যাচটি ছিল শুধুমাত্র একটি জয়ের লড়াই নয়, বরং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিও বটে। ২০১৪ সালে, শেষবার যখন পঞ্জাব কিংস শীর্ষ দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছিল, তখন তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জর্জ বেইলি এবং সেইবার ফাইনাল অবধি গিয়েও হার মানতে হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে।
১১ বছর পর আবারও সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনলো পঞ্জাব কিংস, এবার শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বে। দীর্ঘদিন পর এই দলটি যে স্থিরতা ও ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তরুণ খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এবং অভিজ্ঞদের নেতৃত্বে দলটি যেন এক নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে।
এই জয়ের ফলে কোয়ালিফায়ার ১-এর ম্যাচ তারা খেলবে নিজেদের হোম গ্রাউন্ড, মুল্লানপুরে। সেখানেই ঠিক হবে, তারা সরাসরি ফাইনালে উঠবে কি না। তবে এই মুহূর্তে দলের আত্মবিশ্বাস আকাশছোঁয়া এবং শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বে এই দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে অন্যতম দাবিদার বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই ম্যাচ শুধু একটি জয় নয়, বরং একটি বার্তা — পঞ্জাব কিংস আর আগের মতো দুর্বল দল নয়। তারা এখন ধারাবাহিক, সংগঠিত এবং ভয়ঙ্কর। শ্রেয়সের পঞ্জাব যেন নতুন করে শুরু করেছে তাদের ‘কিংস’-হওয়ার পথচলা।