জার্মানিতে নতুন ইনিংস শুরু ম্যান ইউয়ের বিতাড়িত ডাচ কোচ টেন হ্যাগের

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে (Manchester United) ব্যর্থ অধ্যায়ের পর অবশেষে নতুন দিগন্তে পা রাখলেন ডাচ কোচ এরিক টেন হ্যাগ (Erik ten Hag)। জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের (Bayer…

Erik ten Hag take new responsibility as Bayer Leverkusen manager

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে (Manchester United) ব্যর্থ অধ্যায়ের পর অবশেষে নতুন দিগন্তে পা রাখলেন ডাচ কোচ এরিক টেন হ্যাগ (Erik ten Hag)। জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের (Bayer Leverkusen) নতুন কোচ হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে সোমবার, ২৬ মে। ২০২৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত লেভারকুসেনের সঙ্গে চুক্তি করেছেন ৫৫ বছর বয়সি এই কোচ। আগামী ১ জুলাই থেকে তিনি ক্লাবের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।

ম্যান ইউতে হতাশার গল্প

   

এরিক টেন হ্যাগ ২০২২ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাঁর কোচিংয়ে প্রথম মরশুমেই ইউনাইটেড জেতে লিগ কাপ এবং প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় স্থানে শেষ করে। সেসময় মনে করা হচ্ছিল, হয়তো বহু বছর পর ইউনাইটেড সঠিক কোচ পেয়েছে। তবে ২০২৩-২৪ মরসুমটা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। দল টেবিলের ১৪ নম্বরে নেমে যায়, মাঠের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ হতাশাজনক। যদিও শেষ মুহূর্তে এফএ কাপ জিতে কিছুটা সম্মান রক্ষা করে টেন হ্যাগের ইউনাইটেড, কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। অক্টোবর মাসেই ক্লাব সিদ্ধান্ত নেয় তাঁকে বরখাস্ত করার।

ম্যান ইউতে থাকাকালীন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর সঙ্গে বিরোধ, একাধিক ম্যাচে কৌশলের ব্যর্থতা, ও ড্রেসিং রুমে নিয়ন্ত্রণ হারানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এসব কারণেই টেন হ্যাগের চাকরি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

নতুন শুরু: বেয়ার লেভারকুসেন

ম্যান ইউ থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর টেন হ্যাগ বেশ কিছুদিন কোচিং থেকে দূরে ছিলেন। অবশেষে খাবি আলন্সোর জায়গায় বেয়ার লেভারকুসেনের দায়িত্ব পেলেন তিনি। আলন্সো সদ্যই রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছেন, ফলে লেভারকুসেনকে নতুন করে গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ পড়েছে টেন হ্যাগের কাঁধে।

লেভারকুসেনের স্পোর্টিং ডিরেক্টর সাইমন রলফেস বলেন, “এরিক টেন হ্যাগ একজন অভিজ্ঞ কোচ। তাঁর অ্যায়াক্স আমস্টারডামের সঙ্গে ছয়টি ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি লেভারকুসেনকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যেতে পারবেন।”

টেন হ্যাগ কী বললেন?

Advertisements

নতুন দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত টেন হ্যাগ বলেন, “বেয়ার লেভারকুসেন জার্মানির অন্যতম সেরা ক্লাব এবং ইউরোপিয়ান ফুটবলেও তারা এখন শক্তিশালী নাম। ক্লাবের অবকাঠামো এবং পরিচালনা আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। এই পরিবর্তনের সময়ে আমি ক্লাবের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই এবং একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী দল গড়ে তুলতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “আমি এখানে এসেছি ক্লাবের বড় স্বপ্নগুলোকে বাস্তব করে তুলতে। লেভারকুসেন গত কয়েক বছরে যেভাবে উন্নতি করেছে, তাতে আমি আত্মবিশ্বাসী যে সামনে আরও বড় কিছু অর্জন সম্ভব।”

লেভারকুসেনের সাম্প্রতিক ফর্ম

খাবি আলন্সোর কোচিংয়ে লেভারকুসেন বিগত তিন বছরে চোখে পড়ার মতো উন্নতি করেছে। এই সিজনে তারা বুন্দেসলিগায় দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছে, যা প্রমাণ করে দলের স্থিতি এবং ধারাবাহিকতা। আলন্সোর বিদায়ের পর টেন হ্যাগের সামনে রয়েছে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ক্লাবকে আরও এগিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ।

সামনে কী অপেক্ষা করছে?

টেন হ্যাগের জন্য লেভারকুসেন একটি নতুন অধ্যায়—একটি সুযোগ নিজেকে আবারও প্রমাণ করার। ম্যান ইউতে যে অসম্পূর্ণতা থেকে গিয়েছিল, তা মুছে নতুন করে ফিরতে চান তিনি। তার কোচিং স্টাইল, ট্যাকটিকাল চিন্তা এবং খেলোয়াড় উন্নয়নের দক্ষতা যদি সঠিকভাবে কাজে লাগে, তবে লেভারকুসেন হয়তো নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলেছে।

ডাচ কোচের হাতে এখন সময় আছে দল সাজানোর, খেলোয়াড়দের বোঝার, এবং আগামী মরসুমের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার। আগামী মাসগুলোতে বোঝা যাবে, টেন হ্যাগ তাঁর দ্বিতীয় বড় ইউরোপিয়ান ক্লাবের দায়িত্বে কতটা সফল হন। এখন সব নজর থাকবে ১ জুলাইয়ের দিকে, যখন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে টেন হ্যাগ-যুগ বেয়ার লেভারকুসেনে।