২৫ লিটার দুধে ৪০ কেজি ‘পনির’! গ্রেফতার কোটিপতি খালিদ

Fake Paneer Racket Busted: উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর শহর গোরখপুরে এক চাঞ্চল্যকর ভুয়ো ছানা (পনির) কাণ্ডের পর্দাফাঁস করেছে খাদ্য দফতর। শহরের উপকণ্ঠে পিপরাইচের বরইপার গ্রামে একটি…

Fake Paneer Racket Busted in Gorakhpur, Khaleel Arrested for Using Chemicals

Fake Paneer Racket Busted: উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর শহর গোরখপুরে এক চাঞ্চল্যকর ভুয়ো ছানা (পনির) কাণ্ডের পর্দাফাঁস করেছে খাদ্য দফতর। শহরের উপকণ্ঠে পিপরাইচের বরইপার গ্রামে একটি কারখানায় বিপজ্জনক কেমিক্যাল, ডিটারজেন্ট, এবং বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহার করে ছানা তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে খালিদ নামের এক ব্যক্তিকে। খালিদের এই ভুয়ো পনির তৈরির কারবার থেকে প্রতি মাসে ৪২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।

খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের দল গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই কারখানায় হানা দেয়। সেখানে দেখা যায়, মাত্র ২৫ লিটার নষ্ট বা পচা দুধ ব্যবহার করে প্রায় ৪০ কেজি ছানা তৈরি করা হচ্ছে। অথচ প্রকৃত ছানা তৈরি করতে এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ দুধের প্রয়োজন হয়। তদন্তে আরও জানা গেছে, দুধের পরিমাণ বাড়াতে ও ছানাকে আকর্ষণীয় সাদা রঙ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল ডিটারজেন্ট, ফ্যাব্রিক হোয়াইটনার, রং (পোস্টার কালার), পাম অয়েল, স্যাবান বাদাম, সোয়াবিন, এমনকি সালফিউরিক অ্যাসিডের মতো প্রাণঘাতী রাসায়নিক।

   

ছানায় সুগন্ধ আনতে ব্যবহার করা হচ্ছিল কৃত্রিম এসেন্স ও গোলাপজল। এর ফলে সাধারণ মানুষ না বুঝে ভুয়ো ছানা কিনে তা খাচ্ছিলেন এবং ধীরে ধীরে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছিলেন।

এই কারখানাটি এর আগেও ২ মে সিল করে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই আবার চালু করে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনের বেলায় কারখানা বন্ধ থাকলেও রাতের অন্ধকারে ছানা তৈরি হতো। আশপাশের বাসিন্দারা দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণের অভিযোগও জানিয়েছিলেন।

এই ভুয়ো পনির শুধু গোরখপুরেই নয়, আশেপাশের জেলা এবং বিহারের কিছু অংশেও সরবরাহ করা হতো। তদন্তে জানা গেছে, খালিদ এক বছর আগে একটি ডেইরি শুরু করেছিলেন এবং প্রথমদিকে বিশুদ্ধ ছানা বাজারে বিক্রি করতেন। তবে লাভের আশায় ও চাহিদা বাড়তে থাকায় তিনি রাসায়নিক দিয়ে ছানা তৈরি করা শুরু করেন। এতে উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়লেও বাজারে তা চড়া দামে বিক্রি করা হতো।

Advertisements

ঘটনাস্থল থেকে ২৫০ কেজি ভুয়ো ছানা ও ৮০০ লিটার ভেজাল দুধ জব্দ করে তা ধ্বংস করে দিয়েছে প্রশাসন। কারখানাটি ফের সিল করে দেওয়া হয়েছে। কারখানায় কাজ করা অধিকাংশ শ্রমিক হরিয়ানার মেওয়াত জেলার নুহ অঞ্চল থেকে এসেছিলেন, যাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

খাদ্য দফতরের কর্মকর্তারা জানান, এই ধরনের কার্যকলাপ জনস্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। তদন্ত আরও বিস্তৃত করা হবে এবং যারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রশাসনের তরফে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে যেন তারা অস্বাভাবিক সাদা বা অতিরিক্ত নরম ছানা কিনতে সাবধান হন এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলেই স্থানীয় খাদ্য দফতরে জানান। এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে ভুয়ো দুগ্ধজাত পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।