মেঘালয়ে অবৈধ কয়লা খননের বিরুদ্ধে সরব গগৈ, সমালোচনা মোদীর

জোড়হাটের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (gogoi) শনিবার অসম এবং মেঘালয়ে অবৈধ কয়লা খনন এবং এর সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। জোড়হাটের জেলা…

gogoi slams bjp

জোড়হাটের কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ (gogoi) শনিবার অসম এবং মেঘালয়ে অবৈধ কয়লা খনন এবং এর সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। জোড়হাটের জেলা কংগ্রেস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন যে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় “কয়লা মাফিয়া” সক্রিয় রয়েছে এবং এটি অসমের নেতৃত্ব পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত।

গগৈ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন (gogoi)

গগৈ (gogoi)সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “গতকাল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘রাইজিং নর্থ ইস্ট’ সম্মেলনে বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলেছেন। আমি সেই দিনই তাঁকে চিঠি লিখে অসম এবং মেঘালয়ের মাটির বাস্তবতা তুলে ধরেছি—অবৈধ কয়লা সিন্ডিকেটের কথা।” গৌরব গগৈ গত এপ্রিলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি তদন্তের উল্লেখ করেন।

   

তিনি (gogoi)দাবি করেন, এই তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে মেঘালয়ে অবৈধভাবে খনন করা কয়লা জাল নথি ব্যবহার করে অসমে পরিবহন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি ট্রাকের জন্য দেড় লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “এই টাকা গুয়াহাটির বিভিন্ন স্থানে জমা করা হয়।” তবে, অসম বা মেঘালয় সরকার এ বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

গগৈ উমরাংশুতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে অবৈধ র‍্যাট-হোল খনিতে নয়জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তী তদন্তে অসমে এমন ২৪৫টি অবৈধ খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তিনি বলেন, “এত বড় পরিসরে এই কার্যকলাপ রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সম্ভব নয়।”

তিনি (gogoi)আরও অভিযোগ করেন যে কয়লা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর তদন্ত হয়নি এবং কোনো উল্লেখযোগ্য গ্রেপ্তারও হয়নি। অসম সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই বিষয়ে নীরব রয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।

কংগ্রেস সাংসদ আরও অভিযোগ করেন যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন, যার জন্য তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গগৈ বলেন, “সর্বানন্দ সোনোয়াল কয়লা সিন্ডিকেট বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু সম্ভবত তাঁর এই পদক্ষেপ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং তাঁর সহযোগীদের পছন্দ হয়নি। ফলে দ্বিতীয়বার দলকে জয়ী করা সত্ত্বেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।”

এই তরুণ মিডফিল্ডারের সঙ্গে চুক্তি বাড়ানোর পথে বেঙ্গালুরু

Advertisements

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা

গৌরব গগৈ(gogoi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চে শেলিংয়ের শিকার মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে প্রধানমন্ত্রী যাননি। তিনি বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে প্রধানমন্ত্রী বিহারে নির্বাচনী সমাবেশে ব্যস্ত থাকলেও পুঞ্চের দুর্ভোগপীড়িত মানুষদের কথা ভাবেননি।” তিনি দাবি করেন যে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা উচিত।

গগৈয়ের এই অভিযোগ অসম এবং মেঘালয়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর নতুন আলোকপাত করেছে। অবৈধ কয়লা খনন এবং সিন্ডিকেটের কারণে এই অঞ্চলের পরিবেশ এবং অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব পড়ছে। র‍্যাট-হোল খননের মতো বিপজ্জনক পদ্ধতি শুধু শ্রমিকদের জীবনই বিপন্ন করছে না, বরং পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি করছে। এই অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ এই ইস্যুটিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

গৌরব গগৈয়ের দাবি অনুযায়ী

গৌরব গগৈয়ের দাবি (gogoi)অনুযায়ী, এই সিন্ডিকেটের কারণে স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, “এই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে হলে স্বচ্ছ তদন্ত এবং কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।” তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং স্থানীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন।

এই ঘটনা অসম এবং মেঘালয়ের রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। গগৈয়ের অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তবে এটি অঞ্চলের শাসনব্যবস্থা এবং স্বচ্ছতার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। তবে, এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন। স্থানীয় জনগণ এবং পরিবেশবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কয়লা খননের বিরুদ্ধে সোচ্চার। গৌরব গগৈয়ের এই বক্তব্য তাদের দাবিকে আরও জোরালো করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে সরকার এবং তদন্তকারী সংস্থাগুলোর উপর চাপ বাড়ছে। গৌরব গগৈয়ের চিঠি এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ইস্যু জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন দেখার বিষয়, সরকার এই অভিযোগের জবাবে কী পদক্ষেপ নেয় এবং অবৈধ কয়লা খননের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিনা।