CBI Raid: কিডনি পাচারের অভিযোগ। সিবিআই হানা। শহর বর্ধমানের নামী চিকিৎসকের ঘরে সিবিআই। সিবিআই এর ৮ জনের প্রতিনিধি দল শহর বর্ধমানের মিঠাপুকুর হাতিশাল এলাকায় এই অভিযান চালায়। (CBI raids house of Bardhaman doctor on kidney smuggling charges)
এই ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর শহর বর্ধমানে চাঞ্চল্য। এক চিকিৎসকের সঙ্গে কিডনি পাচারের নাম জুড়ে যাওয়ায় চাঞ্চল্য বাড়ছে। মনে করা হচ্ছে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে রাজ্য ও আন্ত:রাজ্য কিডনি পাচারকারীদের সংযোগ আছে।
ওই চিকিৎসকের নাম তপনকান্তি জানা।বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর হাতিশাল এলাকায় ডাক্তার টি কে জানা’র বাড়ি। তিনি সম্ভবত পলাতক। কারণ সিবিআই অভিযান চলাকালীন তার নাগাল মেলেনি। তবে বর্ধমান থানার পুলিশ ওই চিকিৎসকের মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টা করেছে।
রবিবার সকাল ৭: ৩০মিনিট পর্যন্ত চলে এই অভিযান। চিকিৎসক বাড়িতে ছিলেন না তার স্ত্রী ছিলেন বাড়িতে। এদিন সকালে চিকিৎসকের বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা, হিরে, সোনার গহনা মূল্যবান রত্ন উদ্ধার করে সিবিআই। কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে যায় সিবিআই দল।
শনিবার রাতে বর্ধমান থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই অভিযান চালায় সিবিআই। রাতভর চলে অভিযান।জানা গেছে কিডনি পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই চিকিৎসক। আর সেজন্যই কলকাতা থেকে আগত হয় সিবিআই এর ৮ জনের প্রতিনিধি দল।
কিডনি পাচার একটি গুরুতর এবং বিস্তৃত সমস্যা যা দরিদ্রতা, দুর্বল আইন প্রয়োগ এবং সীমিত জনসচেতনতার কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিচে এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো:
বার্ষিক চাহিদা বনাম সরবরাহ: ভারতে প্রতি বছর প্রায় ২,০০,০০০ জন কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন, কিন্তু বাস্তবে প্রায় ৭,৫০০টি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়।
অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা: প্রতি বছর ভারতে আনুমানিক ২,০০০টি অবৈধ কিডনি প্রতিস্থাপন হয়।
অবৈধ কিডনি পাচারের বাজারমূল্য: বিশ্বব্যাপী অবৈধ কিডনি পাচারের বাজারের বার্ষিক আয় প্রায় $৬০০ মিলিয়ন থেকে $১ বিলিয়ন।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি: ২০২৫ সালের মার্চে কলকাতায় একটি কিডনি পাচার চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যেখানে ঋণের ফাঁদে পড়ে ১০ জনকে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
কিডনি পাচারের কারণসমূহ
আর্থিক চাপ: অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগণকে বড় অংকের অর্থের লোভ দেখিয়ে কিডনি বিক্রি করতে প্রলুব্ধ করা হয়।
দুর্বল আইন প্রয়োগ ও দুর্নীতি: স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি এবং নিয়মিত নজরদারির অভাবে অবৈধ কার্যক্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সীমিত জনসচেতনতা: অনেকে অবৈধ কিডনি দানে জড়িত হয়ে পড়েন, কারণ তারা জানেন না যে এটি আইনগতভাবে অপরাধ।
প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ
আইনগত সংস্কার: কিডনি প্রতিস্থাপন আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করা এবং অবৈধ চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি: মানুষকে অবৈধ কিডনি পাচারের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা।
স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতি: সরকারি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করা।
কিডনি পাচার একটি জটিল এবং বহুমুখী সমস্যা, যা সমাধান করতে হলে সরকারের, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন