বারাণসীতে এটিএসের জালে পাক গুপ্তচর তুফাইল

উত্তর প্রদেশের এন্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ইউপি এটিএস) বুধবার বারাণসীর নওয়াপুরা থেকে মোহাম্মদ তুফাইল নামে এক ব্যক্তিকে পাকিস্তানের (pakistani) পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তে জানা গেছে,…

pakistani spy in up

উত্তর প্রদেশের এন্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ইউপি এটিএস) বুধবার বারাণসীর নওয়াপুরা থেকে মোহাম্মদ তুফাইল নামে এক ব্যক্তিকে পাকিস্তানের (pakistani) পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তে জানা গেছে, তুফাইলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত পূর্বাঞ্চলের ৫০০টিরও বেশি মোবাইল নম্বর এখন নজরদারির আওতায় রয়েছে। এই ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইউপি এটিএস-এর তদন্তে উঠে এসেছে

ইউপি এটিএস-এর তদন্তে উঠে এসেছে যে, তুফাইল পাকিস্তান-সংশ্লিষ্ট (pakistani)একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দেওয়ার পর ফয়সালাবাদের নফিসা নামে এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ পায়। ধীরে ধীরে তিনি নফিসার হানি ট্র্যাপে পড়েন। তুফাইল নিয়মিত নফিসার সঙ্গে চ্যাট করতেন।

   

তিনি কেবল তথ্যই শেয়ার করেননি, বরং নফিসাকে উপহার হিসেবে শাড়ি এবং সালোয়ার স্যুট পাঠিয়েছিলেন, যা নেপাল এবং পাঞ্জাবের মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এটিএস বর্তমানে তুফাইলের ভ্রমণের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে, যেখানে তিনি নফিসার অনুরোধে বিভিন্ন শহরে গিয়েছিলেন এবং কী ধরনের সংবেদনশীল ছবি বা ভিডিও শেয়ার করেছিলেন।

ধর্মীয় সমাবেশ বা সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে

এছাড়াও, তার মুসলিম (pakistani)যুবকদের ধর্মীয় সমাবেশ বা সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেশীদের বক্তব্য অনুযায়ী, তুফাইলের বাড়িতে প্রায়ই জামাতের সঙ্গে যুক্ত ২০০ থেকে ২৫০ জনের বড় সমাবেশ হতো। তিনি উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহর এবং পাঞ্জাবের সিরহিন্দে ভ্রমণের পর প্রায় ২০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছিলেন।

অপারেশন সিঁদুরে ভারতের ‘আকাশতীর’ সিস্টেম উজ্জ্বল, আন্তর্জাতিক চাহিদা আশা করছেন ডিআরডিও প্রধান

তুফাইল এই গ্রুপগুলোর মাধ্যমে বারাণসী, মউ, আজমগড় এবং লখনউ-এর মতো শহরে শিক্ষিত মুসলিম যুবকদের মধ্যে আবেগপ্রবণ প্রভাব ফেলার চেষ্টা করতেন। তিনি প্রায়ই পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইকের নেতা মৌলানা সাদ রিজভির উত্তেজক ভিডিও শেয়ার করতেন এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে ইসলামের অপমান হিসেবে উল্লেখ করতেন।

তিনি ভারতে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনি ও রাজনৈতিক পন্থা অবলম্বনের পক্ষে বার্তা পাঠাতেন এবং দাবি করতেন যে ভারতের মুসলিম যুবকদের সঠিক পথে পরিচালনার জন্য মৌলানা সাদ রিজভির মতো ইসলামিক (pakistani)পণ্ডিতদের প্রয়োজন। ইউপি এটিএস তুফাইলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং তার পাকিস্তানি ও ভারতীয় যোগাযোগগুলোর তদন্ত করছে।

তার সমস্ত আর্থিক লেনদেন এবং সন্দেহজনক নম্বরগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এটিএস সূত্রে জানা গেছে, তুফাইল ফয়সালাবাদের নফিসার সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করতেন, যার স্বামী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা। তুফাইল প্রায় ৬০০টি পাকিস্তানি নম্বরের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন এবং সংবেদনশীল স্থান যেমন রাজঘাট, নমো ঘাট, গিয়ানবাপী, জামা মসজিদ, লাল কেল্লা এবং নিজামুদ্দিন দরগার ছবি ও তথ্য শেয়ার করেছিলেন।

Advertisements

একই সঙ্গে, এটিএস দিল্লি থেকে হারুন (pakistani)নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যিনি পাকিস্তানি হাইকমিশনের কর্মকর্তা মুজাম্মিল হুসেনের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। হারুন মুজাম্মিলের নির্দেশে ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে সহায়তা করতেন। পাকিস্তানি ভিসার জন্য প্রাপ্ত অর্থ এই অ্যাকাউন্টগুলোতে জমা হতো এবং পরে হারুন মুজাম্মিলের নির্দেশে তা বিতরণ করতেন।

এটিএস সন্দেহ করছে, মুজাম্মিল পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর এজেন্ট ছিলেন এবং হারুনের মাধ্যমে ভারতে তাদের অপারেটিভদের অর্থ সরবরাহ করতেন। হারুনের মোবাইল ডেটা এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলোর তদন্ত চলছে, যাতে গত তিন বছরের সমস্ত লেনদেন এবং প্রাপকদের চিহ্নিত করা যায়।

জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ (pakistani)

এই গ্রেপ্তারি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তুফাইলের (pakistani)গ্রেপ্তারি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উগ্রবাদী প্রচারণা এবং গুপ্তচরবৃত্তির ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকে ইঙ্গিত করে। তিনি শুধুমাত্র সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করেননি, বরং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে পাকিস্তানি নেটওয়ার্কের সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা মোবাইল ফোন এবং সিম কার্ড ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে।

তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে যে, তুফাইল(pakistani) পাঁচ বছর ধরে ধর্মীয় সমাবেশে অংশ নিচ্ছিলেন এবং হায়দরাবাদে পাকিস্তানি উলেমাদের সঙ্গে দেখা করার পর তাদের প্রভাবে পড়েন। এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর ’ চালায়, যা পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলার জন্য পরিচালিত হয়।

এই প্রেক্ষিতে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে যুক্ত গুপ্তচর নেটওয়ার্কের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তুফাইল এবং হারুনের গ্রেপ্তারি এই নেটওয়ার্কের একটি অংশ উন্মোচন করেছে। ইউপি এটিএস-এর এই অভিযান পাকিস্তান-সমর্থিত গুপ্তচরবৃত্তি এবং উগ্রবাদী প্রচারণার বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন।

তুফাইলের নেটওয়ার্কের পুরো পরিধি এবং তার স্থানীয় সহযোগীদের চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত চলমান রয়েছে। এই ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে উগ্রবাদী প্রচারণার হুমকির প্রতি নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।