বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়ে দিয়েছেন দলটির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সেটিং চলেছে। এ যেন বঙ্গ বিজেপির সদর দফতরে একেবার্ হনুমানের মতো ঝাঁপ !
তথাগতর ‘সেটিং’ ঘোষণার পর এমনই চর্চা তুঙ্গে। দলীয় নেতৃত্ব নীরব। তবে সিপিআইএম সমর্থকরা বলতে শুরু করেছেন আমাদের দল তো আগে থেকেই তৃণমূল ও বিজেপি সেটিং দাবি করে এসেছে। তথাগত রায় সেই দাবি মেনে নিয়েছেন।
বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায় লিখেছেন, “২০২৬ সালে, একজন অর্ধেক সময়ের রাজ্য সভাপতির নেতৃত্বে, বিজেপির প্রায়-পঙ্গু অবস্থার জন্য অথবা ’সেটিং’ এর জন্য (এ সম্বন্ধে আমি এখনো নিশ্চিত নই) যদি তৃণমূল নির্বাচনে জিতে যায়, তাহলে তা হবে বাঙালি হিন্দুর বিলুপ্তির প্রথম ধাপ”
তথাগত রায়ের নজরে আগামী বিধানসভা। তিনি রাজ্যে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে ‘সেটিং’ প্রসঙ্গ টেনে হিন্দু বাঙালির বিলোপ নিয়ে চিন্তিত। উল্লেখ্য, তথাগতবাবু বরাবর রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে সরব। তিনি এর আগে নিজ দলে ‘কামিনী-কাঞ্চন’ অর্থাৎ অর্থ ও নারী প্রলোভনের বিষয়ে সরব হয়েছিলেন।
তথাগত রায় এমন সময় বিজেপির সঙ্গে তৃণমূল ‘সেটিং’ বিষয় এনেছেন যখন রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে নতুন কেউ আসতে চলেছেন। এক্ষেত্রে পূর্বতন রাজ্য স়ভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। তার ভূমিকা নিয়েও বরাবর সরব তথাগত রায়। ফলে বারবার দিলীপ ও তথাগত সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিতর্কগুলি প্রকাশ্যে এসেছে।
রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে সংঘ পরিবারের রমরমা বলে দাবি করে পূর্বতন শাসক দল সিপিআইএম। তাদের দাবি,খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরএসএসের গোপন সংযোগ আছে। এ রাজ্যে যখন বিজেপি ও তৃণমূল জোট ছিল তখন তথাগত রায় ছিলেন মমতার বিশেষ ঘনিষ্ঠ।
গত কয়েকটি নির্বাচনের অঙ্কে দেখা যাচ্ছে বামপক্ষের ভোটে পুষ্ট হয়েছে বিজেপি। নিজেদের ভোট হারিয়ে বাম শিবিরের বেহাল দশা। যদিও তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দেখে ইর্ষান্বিত হন বিজেপি ও তৃণমূল নেতৃত্ব। সিপিআইএমের দাবি, রাজ্যবাসী বুঝতে পারছেন বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সেটিং আছে। তেমন না হলে দুর্নীতির একাধিক মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়সহ মমতার পরিবারের কয়েকজন সদস্যের জেলে ঠাঁই হতো।
আর প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, জনসাধারণের মধ্যেই তৃণমূল ও বিজেপির সেটিং নিয়ে চর্চা চলছে। তিনি এই ‘সেটিং’ প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করেছেন যদি বিজেপি এবারও পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়তে না পারে তাহলে বাঙালি হিন্দুরা বিপন্ন হবে।
তথাগত রায় লিখেছেন, “যে জাতি রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, সুভাষচন্দ্র, সত্যেন বসু, শ্যামাপ্রসাদের মত মনীষীর জন্ম দিয়েছে, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরে তারা দিল্লি গুয়াহাটি ভুবনেশ্বরের মত জায়গায় একটি প্রান্তিক গোষ্ঠী হয়ে স্থানীয় মানুষের অনুকম্পায় টিকে থাকবে। শেষ সুযোগ ২০২৬। বাঙালি হিন্দু বাঁচবে না মরবে তা ঠিক করার জন্য এক বছরের কম সময় হাতে আছে।”