ইংল্যান্ড সফর হাতছাড়া হতেই প্রশ্ন উঠছে শামির টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে!

ভারতীয় ক্রিকেটের এক নির্ভরযোগ্য পেসার মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। কিন্তু আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের ভারতীয় দল (Indian Cricket Team) থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে…

Indian Cricket Team star bowler Mohammed Shami dropped from England Tour

ভারতীয় ক্রিকেটের এক নির্ভরযোগ্য পেসার মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। কিন্তু আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের ভারতীয় দল (Indian Cricket Team) থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্রিকেট মহলে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। দেশের মাটিতে কিংবা বিদেশে, গত এক দশকে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন শামি। ২০১৩ সালে টেস্টে অভিষেকের পর থেকে ৬৫ টেস্টে ২২৯টি উইকেট তুলে নেওয়া এক নজরকাড়া রেকর্ড। কিন্তু সাম্প্রতিক চোট, ফর্মে ভাটা এবং বয়স—সব মিলিয়ে কি তবে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে পৌঁছে গিয়েছেন এই পেসার?

২০২৩ সালের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে চোট পেয়েছিলেন শামি। ইঞ্জেকশন নিয়ে টানা খেলেছিলেন পুরো টুর্নামেন্ট। ভারত ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছলেও, পরে জানা যায় যে গোড়ালির চোট ছিল বেশ গুরুতর। চোট সারাতে অস্ত্রোপচার, লম্বা রিহ্যাবের পর মাঠে ফেরেন তিনি। তবে এখনো সম্পূর্ণ ফিট কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগরকার জানিয়েছেন, “শামির সাম্প্রতিক এমআরআই রিপোর্টে ইনজুরির নতুন সমস্যা ধরা পড়েছে। মেডিকেল টিম জানিয়েছে, সে ইংল্যান্ড সফরে অংশ নেওয়ার মতো ফিট নয়।”

   

শামির বাদ পড়া নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ে যখন দেখা যায়, রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি স্বেচ্ছায় টেস্ট দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও আগেই অবসর নিয়েছেন। কিন্তু বাদ পড়েছেন শামির মতো সিনিয়র একজন বোলার। ইংল্যান্ড সফরের কঠিন কন্ডিশনে, যেখানে অভিজ্ঞ পেসারদের প্রয়োজন, সেখানে শামির অভাব অনুভূত হবে বলেই মনে করছেন অনেকেই।

শামি নিজেও ইংল্যান্ড সফর নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ইংল্যান্ড সফরে আমি আর বুমরাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারি। আমি নিজেকে প্রস্তুত রাখছি। স্ট্রেনথ ট্রেনিং করছি, নেটেও নিয়মিত বোলিং করছি।” কিন্তু নির্বাচকদের যুক্তি ছিল স্পষ্ট—শুধু অভিজ্ঞতা নয়, সম্পূর্ণ ফিটনেসই মূল বিষয়।

এই মুহূর্তে শামি আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেললেও, বোর্ড তার পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নয়। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, পাঁচ দিনের ম্যাচে দিনে ১০ ওভার বল করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বিসিসিআই ঝুঁকি নিতে চাইছে না। বরং তরুণ ও ফিট পেসারদের সুযোগ দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য দল তৈরি করছে তারা।

Advertisements

তবে এটুকু নিশ্চিত, শামির অবদান ভারতীয় ক্রিকেটে অনস্বীকার্য। বিদেশের মাটিতে ভারতের বোলিং সাফল্যের পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে শামি অন্যতম। তিনি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন কন্ডিশনে ধারাবাহিক পারফর্ম করেছেন।

তবুও প্রশ্ন উঠছেই—শামির কি টেস্ট কেরিয়ারে ইতি টানার সময় এসে গিয়েছে? এই পরিস্থিতি যদি চলতেই থাকে, তাহলে আগামীতে দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন হবে। বিসিসিআই যে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দল তৈরি করছে, তা স্পষ্ট।

শামির মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের টেস্ট কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ এখন সময়ের অপেক্ষা। তিনি যদি ফিটনেস ফিরে পান ও ফর্মে ফেরেন, তবে আবারও দলে ফিরতে পারেন। তবে যদি তা না হয়, তাহলে হয়তো ২০২৩ বিশ্বকাপই হয়ে থাকবে তার আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ উজ্জ্বল অধ্যায়। ক্রিকেট ভক্তদের একটাই আশা, আরও একবার লাল বল হাতে মাঠে দেখা যাবে শামিকে—তার চেনা ছন্দে, আগের মতোই বিধ্বংসী ভঙ্গিতে।