গুজরাট অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (ATS) কচ্ছ সীমান্ত এলাকা থেকে আরেকজন সন্দেহভাজন গুপ্তচরকে (pak spy) গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি, সাহদেব সিং গোহিল, গুজরাটের বাসিন্দা এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন বলে অভিযোগ।
তিনি ভারতের সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানের কাছে পাঠাচ্ছিলেন(pak spy)। গুজরাট এটিএস-এর সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (SP) কে সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, গোহিল কচ্ছের একজন মাল্টিপারপাস হেলথ ওয়ার্কার এবং তিনি পাকিস্তানি এজেন্টের সঙ্গে সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করছিলেন। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আহমেদাবাদে আনা হয়েছে।
এটিএস-এর তদন্তে জানা গেছে
এটিএস-এর তদন্তে জানা গেছে, গোহিল (pak spy)২০২৩ সালের জুন-জুলাই মাসে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একজন মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যিনি নিজেকে অদিতি ভারদ্বাজ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন যে এই মহিলা একজন পাকিস্তানি এজেন্ট। তিনি গোহিলকে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) এবং আইএএফ (ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স)-এর নির্মাণাধীন বা নতুন নির্মিত স্থাপনার ছবি এবং ভিডিও পাঠাতে বলেন।
গোহিল (pak spy)এই নির্দেশ মেনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য পাঠাতে শুরু করেন। ২০২৫ সালের শুরুতে তিনি নিজের আধার কার্ড ব্যবহার করে একটি নতুন সিম কার্ড কিনে অদিতি ভারদ্বাজের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট সক্রিয় করেন। এই নম্বরের মাধ্যমে তিনি আরও তথ্য পাঠান। তিনি এই কাজের জন্য একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির কাছ থেকে ৪০,০০০ টাকা নগদ পেয়েছিলেন।
এটিএস-এর এসপি কে সিদ্ধার্থ জানান
এটিএস-এর এসপি কে সিদ্ধার্থ জানান, অদিতি ভারদ্বাজের নামে ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টগুলো পাকিস্তান থেকে পরিচালিত হচ্ছিল। গোহিলের ফোন ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (FSL) পাঠানো হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (BNS) ধারা ৬১ (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) এবং ১৪৮ (সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বা সহায়তা করা) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই গ্রেপ্তারি উল্লেখযোগ্য কারণ এটি গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারতে পাকিস্তানি গুপ্তচরবৃত্তির (pak spy)বিরুদ্ধে চলতে থাকা জাতীয় অভিযানের অংশ। এই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, এবং ভারত এর প্রতিক্রিয়ায় ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর ’ চালায়, যা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল।
এই ঘটনার পর ভারত জুড়ে গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে তীব্র অভিযান শুরু হয়, যার ফলে তিন দিনে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে হরিয়ানার ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতি মালহোত্রার নাম উল্লেখযোগ্য। তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগে থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
জ্যোতি মালহোত্রা
জ্যোতি মালহোত্রা, (pak spy)যিনি ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন, পাকিস্তানে একাধিকবার সফর করেছিলেন এবং পাকিস্তানি হাইকমিশনের একজন কর্মী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন।
তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র, নিরাপত্তারক্ষী, সাধারণ নাগরিক এবং একজন অ্যাপ ডেভেলপার, যারা হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে ধরা পড়েছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কী এমন ক্ষমতা যে তারা তাদের প্রধানকে আল্টিমেটাম দিয়েছে?
এক অভিযুক্তের জামিনের আবেদন খারিজ
এই ঘটনার পাশাপাশি, দিল্লি হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার মোহসিন খান নামে এক অভিযুক্তের (pak spy)জামিনের আবেদন খারিজ করে। মোহসিনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে মামলা দায়ের করে, যিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানের কাছে পাঠানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। আদালত জানায়, এই অপরাধ শুধুমাত্র কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। জাতীয় নিরাপত্তার কারণে জামিন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
এটিএস-এর তদন্তে আরও জানা গেছে, পাকিস্তানি (pak spy)গোয়েন্দারা প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলার পরিচয় গ্রহণ করে ভারতীয় নাগরিকদের ফাঁদে ফেলে। তারা আর্থিক প্রলোভন বা ব্যক্তিগত দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। গোহিলের ক্ষেত্রেও একই কৌশল ব্যবহৃত হয়েছে। তাঁর ফোন থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ডেটা মুছে ফেলা হয়েছে, যা ফরেনসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
গুজরাটে গত আট মাসে এটি তৃতীয় গুপ্তচরবৃত্তি (pak spy)মামলা। এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পোরবন্দর থেকে পঙ্কজ কোটিয়া এবং নভেম্বরে দেবভূমি দ্বারকা থেকে দীপেশ গোহেল গ্রেপ্তার হন। এই ঘটনাগুলো গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্ব এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি তুলে ধরে।
এই গ্রেপ্তারি এবং তদন্ত ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকির ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তানের আইএসআই সামাজিক মিডিয়া এবং আর্থিক প্রলোভনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের ব্যবহার করে সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করছে। এটিএস এবং অন্যান্য গোয়েন্দা (pak spy)সংস্থাগুলো এই নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলতে তৎপর রয়েছে। গোহিলের গ্রেপ্তারির মাধ্যমে এই জটিল গুপ্তচর নেটওয়ার্কের আরও তথ্য প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পহেলগাঁও হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। গোহিলের মতো ঘটনা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা শক্তিশালী করার জন্য আরও কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।