নতুন করে বাড়ছে করোনা, রাজ্যের হাসপাতালে অক্সিজেন মজুতের নির্দেশ

COVID-19 India Update: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে ভারতে। দীর্ঘ কয়েক মাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ফের একবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভাইরাসটির প্রভাব।…

An Indian air hostess wearing a face mask and shield to protect against COVID-19

COVID-19 India Update: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে ভারতে। দীর্ঘ কয়েক মাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ফের একবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ভাইরাসটির প্রভাব। গত শুক্রবার গুজরাতের এক ২০ মাসের শিশুর দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই উদ্বেগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পাশাপাশি, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা এবং কর্নাটকের বেঙ্গালুরু শহরেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাম্প্রতিক সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে গোটা দেশে মোট ৩১২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে কম, তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই বৃদ্ধির হার উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যেই দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুজনের। ফলে করোনা সংক্রমণের এই নতুন তরঙ্গকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন করে ভয় এবং শঙ্কা।

   

এই পরিস্থিতিতে রাজধানী দিল্লিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। দিল্লির সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র এবং করোনা প্রতিরোধী টিকা মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় মেডিকেল স্টাফদের প্রস্তুত রাখা হচ্ছে এবং সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

তবে শুধুমাত্র চিকিৎসা ব্যবস্থাই নয়, দিল্লি সরকার করোনার নমুনা পরীক্ষার দিকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রত্যেকটি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নমুনাগুলি লোকনায়ক হাসপাতালে জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এর মাধ্যমে ভাইরাসের নতুন কোনো রূপ বা ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করেছে কি না, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। প্রতিটি নমুনার রিপোর্ট নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হবে, যাতে পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়েই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোভিড আবার ফিরে এলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই যদি প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে চলা যায়। যারা এখনো বুস্টার ডোজ নেননি, তাঁদের তা দ্রুত নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোওয়া এবং ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

Advertisements

এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারগুলি মিলিতভাবে কাজ করছে। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুসহ বড় শহরগুলিতে কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দর এবং রেলস্টেশনগুলিতেও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

করোনার এই নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককেই সচেতন থাকতে হবে। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সকলের উচিত আরও বেশি সতর্ক ও দায়িত্বশীল হয়ে ওঠা।

পরিস্থিতি যদি আরও জটিল হয়ে ওঠে, তবে ভবিষ্যতে নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে এখনই সেই পথে না হেঁটে সংক্রমণ রোধে কড়া নজরদারি ও চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে প্রশাসন।

সবমিলিয়ে, কোভিডের এই নতুন সংক্রমণ গোটা দেশে এক নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়েছে প্রশাসনকে। তবে সকলের সহযোগিতা এবং সচেতনতা থাকলে আগের মতো এবারও এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।