New Bengal Governor: বাংলার রাজভবনে এক সম্ভাব্য বড় পরিবর্তনের জল্পনা ঘনীভূত হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাজ্যের বর্তমান রাজ্যপাল ড. সি ভি আনন্দ বোস খুব শিগগিরই পদত্যাগ করতে চলেছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন সদ্যপ্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি বেলা মাধুর্য ত্রিবেদী। যদি শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না আসে, তবে বাংলার রাজভবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে।
আনন্দ বোসের বিদায়: কারণ অনিশ্চিত
রাজ্যপাল হিসেবে ড. সি ভি আনন্দ বোসের কার্যকাল ছিল বেশ আলোচিত ও ঘটনাবহুল। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে শিক্ষাক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ—সব ক্ষেত্রেই তাঁর ভূমিকা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তবে হঠাৎ করে তাঁর পদত্যাগের সম্ভাবনা ঘিরে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অসুস্থতার কারণেই তিনি সরে যাচ্ছেন, না কি এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক কৌশল, সে বিষয়ে এখনো কেন্দ্র বা রাজভবন থেকে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হয়নি।
বেলা ত্রিবেদী: অভিজ্ঞতা ও বিতর্কের যুগলবন্দি
নতুন সম্ভাব্য রাজ্যপাল হিসাবে উঠে আসা নামটি হল বিচারপতি বেলা মাধুর্য ত্রিবেদী। গুজরাতের বাসিন্দা এই আইনজ্ঞ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি গুজরাট সরকারের আইন সচিব ছিলেন, যখন নরেন্দ্র মোদি ছিলেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি গুজরাট হাইকোর্টে বিচারপতি নিযুক্ত হন এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত হন।
তবে তাঁর কেরিয়ার কেবল অভিজ্ঞতায় নয়, বিতর্কেও ভরপুর। বিলকিস বানো ধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় নিজেকে মামলার শুনানি থেকে সরিয়ে নেওয়া, বা অন্যান্য মামলায় তাঁর অবস্থান, তাঁকে বারবার বিতর্কের কেন্দ্রে এনেছে। দিল্লি ও গুজরাটের কিছু আইনজীবীর মতে, তিনি বিজেপি ঘনিষ্ঠ, যা তাঁর অবসর বিদায় অনুষ্ঠান ঘিরেও মতভেদ সৃষ্টি করেছে।
রাজনৈতিক কৌশলের অংশ?
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিবর্তন নিছক প্রশাসনিক নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে বড়সড় রাজনৈতিক কৌশল। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে রাজ্যপালের পদে এক নারী আইনজ্ঞকে বসিয়ে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইছে কেন্দ্র। বেলা ত্রিবেদীর মতো একজন বিতর্কিত অথচ অভিজ্ঞ বিচারপতিকে এই পদে বসানোর মাধ্যমে কেন্দ্রের বার্তা স্পষ্ট—রাজ্য প্রশাসনের উপর আরও সক্রিয় নজরদারি চালাতে প্রস্তুত তারা।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ
এই সম্ভাব্য রদবদল রাজ্য-পন্থী রাজনৈতিক মহলেও বেশ চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার ও রাজভবনের সম্পর্ক যেভাবে গত কয়েক বছরে টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে গেছে, তাতে নতুন রাজ্যপাল হিসেবে বেলা ত্রিবেদীর আগমন কতটা পরিবর্তন আনবে, তা সময়ই বলবে। তবে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই রদবদলের ফলে রাজনীতির মঞ্চে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হতে চলেছে।
শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে, রাজভবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে, যা রাজ্যের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রভাব ফেলবে। এখন দেখার, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কৌশল কতটা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে এবং রাজ্য তার সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করে।