প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (pm-modi) অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পর প্রথমবারের মতো তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাটে সফর করছেন। আগামী ২৬ ও ২৭ মে তিনি দাহোদ, কচ্ছ এবং গান্ধীনগর জেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। কচ্ছের ভুজে মির্জাপুর রোডে একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার পর তিনি প্রসিদ্ধ মাতা আশাপুরা মন্দিরে দর্শন করবেন।
এছাড়াও, তিনি (pm-modi) দাহোদে ২০,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে নির্মিত রেলওয়ে উৎপাদন ইউনিটে প্রথম ৯০০০ এইচপি লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের উদ্বোধন করবেন। এই রেলওয়ে কারখানা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের অধীনে স্থাপিত হয়েছে এবং আগামী ১০ বছরে ১,২০০টি ইঞ্জিন উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা হবে।
দাহোদে লোকোমোটিভ কারখানা: মেক ইন ইন্ডিয়ার মাইলফলক
দাহোদের এই রেলওয়ে কারখানা সম্পূর্ণভাবে ১০০% মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনে ইঞ্জিন উৎপাদন করবে। এই প্রকল্পটি গুজরাটের শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই ৯০০০ এইচপি লোকোমোটিভ ইঞ্জিনগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এগুলি ৪,৬০০ টন ওজনের পণ্য বহন করতে সক্ষম।
প্রথমবারের মতো এই ইঞ্জিনগুলিতে চালকের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং টয়লেট সুবিধা থাকবে। এছাড়াও, নিরাপত্তা বাড়াতে এবং দুর্ঘটনা রোধে উন্নত কভার সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এই কারখানায় চারটি ইঞ্জিন উৎপাদিত হচ্ছে, এবং সবগুলির গায়ে গর্বের সঙ্গে লেখা থাকবে “ম্যানুফ্যাকচারড ইন দাহোদ”।
২০,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে নির্মিত এই কারখানা দাহোদ এবং আশপাশের অঞ্চলে প্রায় ১০,০০০ মানুষের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটি স্থানীয় অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে চাঙ্গা করবে। এই প্রকল্পের জন্য দরপত্রে সর্বনিম্ন বিডার হিসেবে নির্বাচিত বহুজাতিক কোম্পানির প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ খাতের সরবরাহকারী এবং ছোট ও মাঝারি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মগুলির জন্য ব্যবসার নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য ও রক্ষণাবেক্ষণ
এই ৯০০০ এইচপি, ৬-অ্যাক্সল বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনের গড় গতি ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার। এই ইঞ্জিনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম, ছত্তিশগড়ের রায়পুর এবং মহারাষ্ট্রের পুনের ডিপোতে। এই উন্নত ইঞ্জিনগুলি ভারতীয় রেলের পণ্য পরিবহন ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
‘ওয়াকফ ইসলামের কোনো অপরিহার্য অঙ্গ নয়’, সুপ্রিম কোর্ট কে বিবৃতি কেন্দ্রের
প্রধানমন্ত্রীর গুজরাট সফরের তাৎপর্য (pm-modi)
প্রধানমন্ত্রী মোদীর (pm-modi) এই সফর অপারেশন সিঁদুরের পর তাঁর প্রথম গুজরাট সফর হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে, যা সীমান্ত পার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থানকে তুলে ধরেছে। এই প্রেক্ষাপটে, মোদীর (pm-modi) গুজরাট সফর কেবল উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধনই নয়, বরং জাতীয় ঐক্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বার্তাও বহন করে।
কচ্ছের ভুজে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবেন এবং মাতা আশাপুরা মন্দিরে দর্শনের মাধ্যমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এই মন্দির কচ্ছের জনগণের কাছে গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য বহন করে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব
দাহোদের লোকোমোটিভ কারখানা গুজরাটের অর্থনীতিতে একটি নতুন গতি সঞ্চার করবে। এই প্রকল্পের ফলে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে দাহোদের মতো তুলনামূলকভাবে অনুন্নত অঞ্চলে। প্রায় ১০,০০০ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে এই কারখানা স্থানীয় যুবকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। এছাড়াও, ছোট ও মাঝারি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মগুলির জন্য ব্যবসার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে, যা অঞ্চলের শিল্প বিকাশে সহায়ক হবে।
এই প্রকল্প ভারতের রেল পরিবহন ব্যবস্থাকেও আধুনিকীকরণ করবে। ৯০০০ এইচপি ইঞ্জিনগুলি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলের ক্ষমতা বাড়াবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ইঞ্জিনগুলির (pm-modi) রপ্তানি ভারতের শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ক্ষমতাকে তুলে ধরবে।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট
অপারেশন সিঁদুরের পর প্রধানমন্ত্রীর (pm-modi) এই সফর একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে। ভারত সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করে ভারতের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি তুলে ধরছে। এই প্রেক্ষাপটে, মোদীর গুজরাট সফর দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (pm-modi) গুজরাট সফর এবং দাহোদে ৯০০০ এইচপি লোকোমোটিভ ইঞ্জিনের উদ্বোধন ভারতের শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। এই প্রকল্প মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ এবং গুজরাটের অর্থনীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। স্থানীয় কর্মসংস্থান, শিল্প বিকাশ এবং রেল পরিবহনের আধুনিকীকরণের মাধ্যমে এই উদ্যোগ ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোকে শক্তিশালী করবে।