উত্তরবঙ্গে জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে নজরদারিতে জোর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সম্ভাব্য নিরাপত্তা হানির আশঙ্কা থেকে প্রশাসনিক তৎপরতা আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার উত্তরকন্যা প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত এক প্রশাসনিক…

Mamata Banerjee Boosts Border Security in North Bengal to Thwart Terror Threats

উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সম্ভাব্য নিরাপত্তা হানির আশঙ্কা থেকে প্রশাসনিক তৎপরতা আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার উত্তরকন্যা প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত এক প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, কোনওরকম জঙ্গি কার্যকলাপ বা জঙ্গি মনোভাবাপন্ন দুষ্কৃতীরা যাতে এই অঞ্চলে আশ্রয় না নিতে পারে, সেই বিষয়ে সর্বোচ্চ নজরদারি রাখতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা আন্তর্জাতিক সীমান্তঘেঁষা। ফলে এই অঞ্চলগুলোতে সব সময় নজরদারি বজায় রাখতে হবে। কোনওরকম সন্দেহজনক চলাফেরা, অচেনা ব্যক্তি বা অস্বাভাবিক আচরণ চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানাতে হবে।” তিনি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি), আইসি এবং ওসিদের নির্দেশ দেন যেন তারা গ্রাম এবং শহরের প্রতিটি স্তরে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে আরও তৎপর হন।

   

এছাড়াও, সাধারণ নাগরিকদের প্রতিও মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “নাগরিকদের সচেতনতা প্রশাসনের বড় শক্তি। আপনার চারপাশে যদি কিছু অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটা প্রশাসনকে জানান। এটা আপনার, আমার, সকলের দায়িত্ব।” তিনি আরও জানান, কোনওরকম গুজব ছড়িয়ে যাতে অশান্তি না তৈরি হয়, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে সংযোগ রাখাটাও জরুরি। মানুষ যেন পুলিশের ওপর ভরসা রাখতে পারেন, সেই বিশ্বাস তৈরি করুন।” তিনি প্রতিটি থানা এলাকায় বিট পুলিশিং, সাপ্তাহিক জনসংযোগ সভা এবং স্থানীয় ক্লাবগুলির সহযোগিতায় নিরাপত্তা সচেতনতা অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।

Advertisements

এই প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিজিপি), উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে তারা জানান, সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে আগেও নজরদারি ছিল, তবে এখন তা আরও জোরদার করা হবে। সীমান্ত চৌকিগুলিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ড্রোন নজরদারি, এবং স্থানীয় সূত্র মারফত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে জোর দেওয়া হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা রাজ্যবাসীর মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে আরও আশ্বাস তৈরি করেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলা যেমন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ— এই সব জায়গায় পুলিশের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সব মিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের ফলে উত্তরবঙ্গের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।