রহস্যজনক ভাবে আহত হাফিজ সাঈদ ঘনিষ্ট আমির হামজা

পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লশ্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আমির হামজা (amir-hamza) লাহোরে রহস্যজনক ভাবে আহত হয়েছেন। ২০২৫ সালের ২০ মে মঙ্গলবার এই…

amir-hamza is injured

পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লশ্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আমির হামজা (amir-hamza) লাহোরে রহস্যজনক ভাবে আহত হয়েছেন। ২০২৫ সালের ২০ মে মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একাধিক পোস্টে জানানো হয়েছে। আমির হামজাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে এই হামলার পিছনে কারা রয়েছে এবং ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এখনও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনা পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ঘটনার বিবরণ (amir-hamza)

এক্স-এ প্রকাশিত পোস্ট অনুযায়ী, আমির হামজা, (amir-hamza)যিনি হাফিজ সাঈদ এবং আব্দুল রেহমান মাক্কির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত, লাহোরে তাঁর বাড়িতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় আহত হয়েছেন। তিনি লশ্কর-ই-তৈয়বার একজন প্রধান নেতা (amir-hamza)এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদের ডানহাত হিসেবে কাজ করেছেন। হামলার পর তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশিত হয়নি।

   

এই ঘটনাকে “রহস্যজনক” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, কারণ হামলাকারীদের পরিচয় এবং তাদের উদ্দেশ্য এখনও অজানা। কিছু পোস্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এই হামলা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোয়েন্দা ব্যর্থতা বা আন্তর্জাতিক চাপের ফল হতে পারে। তবে, এই তথ্যগুলি এখনও নিশ্চিত হয়নি।

আমির হামজা কে?

আমির হামজা (amir-hamza)লশ্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন এবং হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। লশ্কর-ই-তৈয়বা ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ইসলামি সালাফি জঙ্গি সংগঠন, যা ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই সংগঠনটি ২০০৮ সালের মুম্বই হামলাসহ ভারতের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী(amir-hamza) কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। আমির হামজা সংগঠনের প্রশিক্ষণ, তহবিল সংগ্রহ এবং ক্রস-বর্ডার অনুপ্রবেশের মতো কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানা যায়।

পাকিস্তানে সাম্প্রতিক জঙ্গিদেরদের হত্যাকাণ্ড

আমির হামজার (amir-hamza)আহত হওয়ার ঘটনা পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চ-প্রোফাইল সন্ত্রাসীদের রহস্যজনক মৃত্যু বা হামলার ধারাবাহিকতার অংশ। গত ১৮ মে, ২০২৫-এ, লশ্কর-ই-তৈয়বার আরেক কমান্ডার সাইফুল্লাহ খালিদ, যিনি ২০০৬ সালে আরএসএস সদর দফতরে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন,

পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হাতে নিহত হন(amir-hamza)। তিনি নেপাল মডিউলের প্রধান ছিলেন এবং ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই ঘটনাগুলি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক চাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এছাড়াও, ২০২৪ সালের মার্চে ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিলের স্বঘোষিত সেক্রেটারি জেনারেল শেখ জামিল-উর-রেহমান খাইবার পাখতুনখোয়ার আবোটাবাদে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যান। এই ধরনের ঘটনাগুলি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী নেতাদের উপর ক্রমবর্ধমান চাপের ইঙ্গিত দেয়, যা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা বাইরের হস্তক্ষেপের ফল হতে পারে।

Advertisements

HDFC স্মার্টওয়েলথ অ্যাপে নতুন ফিচার, মিউচুয়াল ফান্ড পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং আরও সহজ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষাপট

এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত উত্তপ্ত। গত ২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে লশ্কর-ই-তৈয়বার শাখা দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) দ্বারা সংঘটিত একটি জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন।

এর প্রতিশোধ হিসেবে ভারত ৭ মে অপারেশন সিঁদুর শুরু করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) লশ্কর-ই-তৈয়বা এবং জৈশ-ই-মোহাম্মদের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় মাউলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ জন সদস্য এবং চারজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হন।

অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত দাবি করে যে লশ্কর-ই-তৈয়বার মুরিদকে ঘাঁটি, যেখানে ২৬/১১-এর হামলাকারী আজমল কাসাব প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, তা ধ্বংস করা হয়েছে। এই ঘটনা পাকিস্তানের সামরিক ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

সম্ভাব্য কারণ ও প্রভাব

আমির হামজার উপর হামলার কারণ এখনও অস্পষ্ট। কিছু সূত্র মনে করে, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব বা আন্তর্জাতিক চাপের ফল হতে পারে। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের মৃত্যু এবং হামলাগুলি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের ফল হতে পারে, যারা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলছে।

এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর আরও প্রভাব ফেলতে পারে। ভারত বারবার অভিযোগ করেছে যে পাকিস্তান লশ্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আশ্রয় দেয়। আমির হামজার আহত হওয়ার ঘটনা এই অভিযোগকে আরও জোরদার করতে পারে।

আমির হামজার উপর হামলা পাকিস্তানে জঙ্গি নেতাদের উপর ক্রমবর্ধমান চাপের একটি ইঙ্গিত। এই ঘটনা লশ্কর-ই-তৈয়বার কার্যক্রম এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। তবে, হামলার পিছনের কারণ এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনও স্পষ্ট নয়। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বর্তমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা আঞ্চলিক নিরাপত্তার গতিশীলতাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।