শিবসেনা (shiv-sena) নেতা সঞ্জয় রাউত রবিবার অপারেশন সিঁদুর এবং ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা নিয়ে বিদেশে সাংসদদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি এই পদক্ষেপকে ‘বরযাত্রী’র সঙ্গে তুলনা করে কটাক্ষ করেছেন।
কেন্দ্রীয় সরকার এই মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন দলের সাংসদদের নিয়ে সাতটি প্রতিনিধি দল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই দলগুলো সাম্প্রতিক সংঘাতে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্ত-সংলগ্ন সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে।
রাউত বলেন (shiv-sena)
রাউত (shiv-sena) বলেন, “এই বরযাত্রী পাঠানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না। প্রধানমন্ত্রী দুর্বল। এত তাড়াহুড়োর দরকার ছিল না। উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র (shiv-sena) (এমপি শ্রীকান্ত শিন্ডে, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের পুত্র) বিদেশে গিয়ে কী প্রতিনিধিত্ব করবেন?” তিনি আরও বলেন, “বিজেপি এটাকে রাজনৈতিক রঙ দিয়েছে; তাদের সবকিছুতে রাজনীতি করার অভ্যাস আছে। ইন্ডিয়া ব্লকের উচিত এই বরযাত্রী বয়কট করা।”
প্রতিনিধি দলের গঠন
সরকারের এই কূটনৈতিক উদ্যোগে ৫১ জন রাজনৈতিক নেতা, সাংসদ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী বিভিন্ন দল থেকে অংশ নিচ্ছেন। এই সাতটি প্রতিনিধি দল বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানীতে গিয়ে অপারেশন সিন্দুরের প্রেক্ষাপটে ভারতের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার দৃঢ় সংকল্প তুলে ধরবে। উল্লেখযোগ্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের শশী থারুর, এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, এনসিপি (এসপি) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে এবং ডিএমকে’র কানিমোঝি।
সঞ্জয় রাউতের দলের সহকর্মী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও এই প্রতিনিধি দলের একটি অংশ। তিনি বিজেপি সাংসদ রবি শঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে একটি দলে যোগ দেবেন, যেখানে আরও রয়েছেন দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী (বিজেপি), গুলাম আলি খতানা, অমর সিং (কংগ্রেস), সমীক ভট্টাচার্য (বিজেপি), এমজে আকবর এবং পঙ্কজ সরন। এই দলটি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি এবং ডেনমার্ক সফর করতে পারে।
দলের সংমিশ্রণ
৫১ জন নেতার মধ্যে ৩১ জন ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের, বাকি ২০ জন এনডিএ-বহির্ভূত দলের। প্রতিটি প্রতিনিধি দলে অন্তত একজন মুসলিম প্রতিনিধি রয়েছেন, হয় রাজনীতিবিদ অথবা কূটনীতিক হিসেবে। কংগ্রেস থেকে শশী থারুর, মনীষ তিওয়ারি, অমর সিং এবং সালমান খুরশীদ এই দলে রয়েছেন। এছাড়াও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ, এমজে আকবর, আনন্দ শর্মা, ভি মুরালীধরন, খুরশীদ এবং এসএস আহলুওয়ালিয়াও দলে রয়েছেন, যদিও তারা বর্তমানে সাংসদ নন(shiv-sena) ।
এই ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারকে প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে মশাল ব্রিগেড
কংগ্রেসের অভিযোগ
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত চারজন নেতার মধ্যে কেবল একজন—আনন্দ শর্মা—প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যেখানে সরকার স্বাধীনভাবে শশী থারুরকে নির্বাচিত করেছে। এটি একটি রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেসের যোগাযোগ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, এই পদক্ষেপ নরেন্দ্র মোদী সরকারের “সম্পূর্ণ অসততা” প্রতিফলিত করে এবং জাতীয় গুরুত্বের বিষয়ে এটি “সস্তা রাজনৈতিক খেলা” প্রকাশ করে।
রাজনৈতিক বিতর্ক
কংগ্রেসের প্রস্তাবিত চার নেতার মধ্যে কেবল আনন্দ শর্মাকে প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে শশী থারুরকে সরকার স্বাধীনভাবে নির্বাচিত করেছে(shiv-sena) । এই ঘটনা রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেসের যোগাযোগ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক বিবৃতিতে বলেন, এই পদক্ষেপ নরেন্দ্র মোদী সরকারের “সম্পূর্ণ অসততা” প্রতিফলিত করে এবং জাতীয় গুরুত্বের বিষয়ে এটি “সস্তা রাজনৈতিক খেলা” প্রকাশ করে।
অপারেশন সিঁদুরের প্রেক্ষাপট
অপারেশন সিঁদুর গত ৭ মে পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার জবাবে শুরু হয়েছিল, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিল। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি শিবির লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার ফলে জৈশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি সংগঠনের ১০০ জনের বেশি জঙ্গি নিহত হয়। এই অপারেশন ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির প্রতিফলন।
কূটনৈতিক উদ্দেশ্য
প্রতিনিধি দলগুলোর লক্ষ্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের অবস্থান তুলে ধরা এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা। তবে, রাউতের মতে, এই উদ্যোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপ্রয়োজনীয়। তিনি এটিকে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ভবিষ্যৎ প্রভাব
এই প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত ভারতের কূটনৈতিক কৌশলের একটি অংশ হলেও, এটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেস এবং শিবসেনা (shiv-sena) সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, এই উদ্যোগ ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থানকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরার একটি সুযোগ হতে পারে। তবে, রাজনৈতিক ঐক্যের অভাব এই প্রচেষ্টার কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।