7th Pay Commission DA Hike: বিহার সরকার তাদের রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে। ২০২৫ সালের ১৬ মে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএর ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে।
বিহারে ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা
বিহার সরকার জানিয়েছে, সপ্তম বেতন কমিশনের আওতাভুক্ত কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের ডিএ ও ডিআর ৫৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ শতাংশ করা হয়েছে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় থাকা কর্মীদের জন্য ৬ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ডিএ ও ডিআর ২৫২ শতাংশ করা হয়েছে। একইভাবে, পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় থাকা কর্মীদের ডিএ ১১ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪৬৬ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিহারে প্রায় ৫ লাখ সরকারি কর্মচারী ও ৬ লাখ পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। ডিএ বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
বিহার সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট) এস সিদ্ধার্থ বলেন, “এই বৃদ্ধি রাজ্যের কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের দীর্ঘদিনের দাবির বাস্তবায়ন। সরকারের এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে কর্মচারীদের স্বস্তি দেবে।”
পশ্চিমবঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্কে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্যালকাটা হাই কোর্টের নির্দেশনার বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং সন্দীপ মেহতা-র বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জমে থাকা ডিএ বকেয়ার ২৫ শতাংশ আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে পরিশোধ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই অন্তর্বর্তী নির্দেশনায় রাজ্যের প্রায় ৬ লাখ কর্মচারী উপকৃত হবেন বলে জানা গেছে।
‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “রাজ্য সরকার আমাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেছে বহু বছর ধরে। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের অধিকার রক্ষা করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আমরা পূর্ণভাবে মেনে চলব। তবে, কিছু বিরোধী দল এই বিষয়টি নিয়ে অকারণে সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার কর্মচারীদের প্রতি দায়বদ্ধ এবং তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই নির্দেশ কার্যকর করতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।”
রাজ্য কর্মীদের প্রতিক্রিয়া
সরকারি কর্মীদের মধ্যে এই ঘোষণার পরে স্বস্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। অনেক কর্মচারী বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ ছাড়া ডিএ পাওয়া সম্ভব হত না। আবার বিহারের কর্মচারীরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, কারণ দীর্ঘদিন পরে আবারও ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে।
ডিএ নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষের পরিবেশ বিরাজ করছিল। বিহার সরকারের ঘোষণা ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সেই অসন্তোষের অনেকটাই প্রশমন করতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারি কর্মীদের যথাযথ সম্মান ও প্রাপ্য সুবিধা দেওয়া কোনো সরকারের দায়িত্ব—এই পদক্ষেপ সেই দায়িত্ব পালনের দিকেই এক দৃঢ় পদক্ষেপ।
সরকারি স্তরে দ্রুত এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে কর্মচারীদের আস্থাও সরকারের প্রতি বাড়বে বলে আশা করা যায়।