Gold price in Kolkata: ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনা ব্যবহারকারী দেশ, যেখানে চীন রয়েছে প্রথম স্থানে। সোনার প্রতি ভারতীয়দের আকর্ষণ বহু পুরনো ও গভীরভাবে সাংস্কৃতিকভাবে প্রোথিত। শুধুমাত্র অলংকার বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
ভারতে ব্যবহৃত সোনার বেশিরভাগ অংশই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করা হয়। এই কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের সামান্য পরিবর্তনও ভারতের বাজারে তার সরাসরি প্রভাব ফেলে। যেহেতু সোনা মূলত মার্কিন ডলারে লেনদেন হয়, তাই ডলারের মূল্য ওঠানামা ভারতীয় বাজারে সোনার দামে পরিবর্তন আনে। এছাড়াও ভারত সরকারের আরোপিত উচ্চ আমদানি শুল্ক ও বিভিন্ন কর সোনার দাম বাড়িয়ে তোলে, ফলে সাধারণ জনগণের কাছে সোনা আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে।
বর্তমানে ২২ ক্যারেট ও ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ভারতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর্থিক অনিশ্চয়তা ও বাজারের অস্থিরতার মধ্যে সোনাকে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল বিনিয়োগ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বহু মানুষ।
নিচে ভারতের ১০টি বড় শহরে সোনার সর্বশেষ মূল্য তালিকা তুলে ধরা হলো (প্রতি গ্রাম):
- দিল্লি:
২২ ক্যারেট: ৮,৭৩৫ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫২৮ টাকা - চেন্নাই:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - বেঙ্গালুরু:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - মুম্বই:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - পুনে:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - কলকাতা:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - আহমেদাবাদ:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২৫ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৮ টাকা - হায়দরাবাদ:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২০ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৩ টাকা - ইন্দোর:
২২ ক্যারেট: ৮,৭২৫ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫১৮ টাকা - লখনউ:
২২ ক্যারেট: ৮,৭৩৫ টাকা
২৪ ক্যারেট: ৯,৫২৮ টাকা
এই তথ্য থেকে বোঝা যায় যে দেশের বিভিন্ন শহরে সোনার দামের মাঝে অল্প কিছু পার্থক্য থাকলেও সামগ্রিকভাবে দাম ঊর্ধ্বমুখী। দিল্লি ও লখনউতে বর্তমানে সর্বোচ্চ দামে সোনা বিক্রি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থা, এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হারের পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সোনার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। পাশাপাশি ভারতীয় সরকারের নীতিও এই মূল্যবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।
ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের কাছে সোনা একটি দীর্ঘমেয়াদি নিরাপদ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। অনেকেই বর্তমান অর্থনৈতিক চাপে সোনা কেনার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। গ্রামীণ ভারতেও সোনার গুরুত্ব অপরিসীম — এটি আর্থিক নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা ও জরুরি প্রয়োজনে সাহায্যের প্রতীক।
বর্তমানে ডিজিটাল গোল্ড, গোল্ড ইটিএফ ও সোনার বন্ডের মতো বিনিয়োগের আধুনিক মাধ্যম জনপ্রিয়তা পেলেও শারীরিকভাবে সোনা কেনার প্রবণতা এখনও প্রবল। অনেকেই মনে করেন, হাতে থাকা সোনাই আসল নিরাপত্তা।
সোনার দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা আবার এই মূল্যবান ধাতুর দিকে ঝুঁকছেন। শুধু অলংকার নয়, বরং সোনা এখন সম্পদ সংরক্ষণের এক শক্তিশালী মাধ্যম। তাই যাঁরা আর্থিক নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা চান, তাঁদের জন্য সোনা হতে পারে একটি কার্যকর ও প্রমাণিত বিকল্প।