পাকিস্তানের চিনা রাডার ধ্বংস, ভারতীয় প্রযুক্তির নজিরবিহীন সাফল্য

ভারত সরকার বুধবার একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) পাকিস্তানের সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর স্থাপিত চিন নির্মিত বিমান…

India carried out its mission in 23 minutes after IAF jammed China-made AD systems in Pakistan

ভারত সরকার বুধবার একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) পাকিস্তানের সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর স্থাপিত চিন নির্মিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সফলভাবে অকার্যকর করেছে। আরও একটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশে ভারত জানিয়েছে, মাত্র ২৩ মিনিটের মধ্যে এই অভিযান সম্পন্ন হয়েছে, যা সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া এই প্রতিবেশী দেশের উপর ভারতের প্রতিরক্ষা শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করেছে। এই অভিযান, যার নাম ‘অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor)’, জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে পাকিস্তান-সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে পরিচালিত হয়েছিল। ওই হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক, যাদের সবাই ছিলেন পর্যটক, ধর্মীয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণে নিহত হন।

অপারেশন সিঁদুরের বিশদ বিবরণ
ভারত সরকারের জারি করা একটি বিবৃতিতে অপারেশন সিঁদুরের কৌশলগত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সমস্ত আক্রমণ ভারতীয় সম্পদের কোনো ক্ষতি ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে, যা আমাদের নজরদারি, পরিকল্পনা এবং বিতরণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রমাণ করে। দীর্ঘ-পাল্লার ড্রোন থেকে গাইডেড মিসাইল পর্যন্ত আধুনিক দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার এই আক্রমণগুলোকে অত্যন্ত কার্যকর এবং রাজনৈতিকভাবে সুকৌশলী করে তুলেছে।”

   

অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের নূর খান এবং রহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটিগুলোতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানে। এই অভিযানে লোইটারিং মিউনিশন বা ‘কামিকাজে ড্রোন’ ব্যবহার করা হয়, যা উচ্চ-মূল্যের লক্ষ্যবস্তু যেমন শত্রুর রাডার এবং মিসাইল সিস্টেম ধ্বংস করতে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়। এই ড্রোনগুলো লক্ষ্যবস্তুর উপর চক্কর দিয়ে উপযুক্ত লক্ষ্য খুঁজে বের করে আক্রমণ করে।

চিন নির্মিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতা
অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় ড্রোন এবং মিসাইলের সাফল্যের পেছনে মূল কারণ ছিল পাকিস্তানের চিন সরবরাহিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন এইচকিউ-৯ এবং এলওয়াই-৮০ (এইচকিউ-১৬), সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়া। ভারতীয় বিমান বাহিনী উন্নত ইলেকট্রনিক যুদ্ধকৌশল, যেমন রাডার জ্যামিং, সিগন্যাল দমন এবং প্রতারণামূলক কৌশল ব্যবহার করে এই ব্যবস্থাগুলোকে পঙ্গু করে দেয়। ফলে, ভারতীয় মিসাইল, বিশেষ করে রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপিত ফরাসি উৎপত্তির স্কাল্প ক্রুজ মিসাইল, পাকিস্তানের আকাশসীমায় অবাধে প্রবেশ করে এবং বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, মুজাফফরাবাদ এবং কোটলির মতো গভীর অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানে।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের চিন-সরবরাহিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অতিক্রম করে এবং জ্যাম করে, মাত্র ২৩ মিনিটের মধ্যে অভিযান সম্পন্ন করে, যা ভারতের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।” এই ব্যর্থতা চিনের সামরিক প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে এইচকিউ-৯, যাকে রাশিয়ার এস-৩০০-এর সমতুল্য বলে প্রচার করা হয়।

ভারতীয় দেশীয় প্রযুক্তির উৎকর্ষ
অপারেশন সিঁদুরে ভারতের দেশীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অসাধারণ কার্যকারিতা প্রকাশ পেয়েছে। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের চিন-নির্মিত পিএল-১৫ মিসাইল, তুরস্ক-নির্মিত ‘ইয়াহা’ বা ‘ইয়িহা’ ড্রোন, দীর্ঘ-পাল্লার রকেট, কোয়াডকপ্টার এবং বাণিজ্যিক ড্রোন ধ্বংস করে। এই ধ্বংসাবশেষ ফরেনসিকভাবে পরীক্ষা করে প্রমাণিত হয়েছে যে, পাকিস্তানের উন্নত বিদেশী অস্ত্র ব্যবহারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতের দেশীয় বিমান প্রতিরক্ষা এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “অপারেশন সিঁদুর শুধু কৌশলগত সাফল্যের গল্প নয়, এটি ভারতের প্রতিরক্ষা স্বনির্ভরতা নীতির বৈধতা। ড্রোন যুদ্ধ, স্তরযুক্ত বিমান প্রতিরক্ষা এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধে দেশীয় প্রযুক্তির নির্বিঘ্ন সংহতি এই অভিযানকে একটি মাইলফলক করে তুলেছে।” ব্যবহৃত সরঞ্জামের মধ্যে ছিল পেচোরা, ওএসএ-একে এবং এলএলএডি গানের মতো যুদ্ধে প্রমাণিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং দেশীয় আকাশ মিসাইল সিস্টেম, যা একাধিক বায়বীয় হুমকি নির্মূল করতে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।

ইসরোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরো এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইসরোর চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন ১১ মে জানিয়েছিলেন, “কমপক্ষে ১০টি স্যাটেলাইট দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার কৌশলগত উদ্দেশ্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।” এই স্যাটেলাইটগুলো ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত এবং উপকূলরেখায় হুমকির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং আকাশসীমার তথ্য সরবরাহ করে অভিযানের সমন্বয়ে সহায়তা করেছে।

কৌশলগত ও রাজনৈতিক তাৎপর্য
অপারেশন সিঁদুর পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের “সুনির্দিষ্ট, নিখুঁত এবং কৌশলগত” প্রতিক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, ভারত এলওসি বা আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম না করেই এই অভিযান সম্পন্ন করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের দায়িত্বশীল সামরিক নীতি প্রদর্শন করে।

পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণের প্রচেষ্টা, যেমন ৭-৮ মে রাতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং মিসাইল হামলা, ভারতের ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা নির্মূল করা হয়। এই হামলার ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধারকৃত চিনা পিএল-১৫ মিসাইল এবং তুর্কি ইয়িহা ড্রোনের টুকরো ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।

চিনের জন্য শিক্ষা
এই অভিযান চিনের সামরিক প্রযুক্তির বিশ্বাসযোগ্যতার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। পাকিস্তানের এইচকিউ-৯ এবং এলওয়াই-৮০ ব্যবস্থা, যেগুলোকে চিন আধুনিক হুমকির বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রচার করে, ভারতীয় আক্রমণের মুখে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এটি ২০১৯ সালের বালাকোট হামলার পর দ্বিতীয়বার যখন চিনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতীয় অভিযানের কাছে পরাস্ত হল।

অপারেশন সিঁদুর ভারতের সামরিক ক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার একটি উজ্জ্বল প্রদর্শন। এটি শুধু পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি কঠোর জবাব নয়, বরং চিনা সামরিক প্রযুক্তির দুর্বলতা এবং ভারতের দেশীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করেছে। আইএএফ-এর নিখুঁত সমন্বয়, ইসরোর স্যাটেলাইট সহায়তা এবং দেশীয় অস্ত্রের অসাধারণ পারফরম্যান্স এই অভিযানকে ২১শ শতাব্দীতে ভারতের উচ্চ-প্রযুক্তির সামরিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।