অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যে বিজেপির দেশব্যাপী ‘তিরঙ্গা যাত্রা’

ভারতীয় জনতা পার্টি (bjp) মঙ্গলবার একটি বৃহৎ জনসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ শুরু করেছে। এই যাত্রার লক্ষ্য ভারতীয় সেনাদের বীরত্বকে সম্মান জানানো এবং…

bjp starts tiranga

ভারতীয় জনতা পার্টি (bjp) মঙ্গলবার একটি বৃহৎ জনসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশব্যাপী ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ শুরু করেছে। এই যাত্রার লক্ষ্য ভারতীয় সেনাদের বীরত্বকে সম্মান জানানো এবং সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য সম্পর্কে নাগরিকদের অবহিত করা। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই যাত্রা আগামী ২৩ মে পর্যন্ত চলবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা, বিজেপির (bjp) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তারুণ চুঘ, দিল্লি বিজেপি সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবা এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতা ও কর্মীরা এই যাত্রায় অংশ নিয়েছেন।

একটি প্রতীকী শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয়েছে (bjp)

দিল্লিতে এই প্রচারণা একটি প্রতীকী শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয়েছে, যেখানে ১০৮ ফুট উঁচু জাতীয় পতাকা প্রদর্শিত হয়েছে। যাত্রাটি কর্তব্য পথ থেকে শুরু হয়ে জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধে শেষ হবে। এতে বিজেপি কর্মী, সাধারণ নাগরিক, এনজিও, আবাসিক কল্যাণ সমিতি (আরডব্লিউএ), ধর্মীয় নেতা এবং সামাজিক সংগঠনের

   

হাজার হাজার প্রতিনিধি অংশ নিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পার্টি সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন রাজ্যে প্রাক্তন সেনা সদস্য, সমাজকর্মী এবং বিশিষ্ট জনব্যক্তিত্বরা এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেবেন, যা ঐক্য, দেশপ্রেম এবং জাতীয় গর্বের বার্তাকে আরও জোরদার করবে।

বিজেপি (bjp) এই যাত্রাকে কেবল একটি দলীয় উদ্যোগ হিসেবে নয়, বরং একটি বৃহৎ জনআন্দোলনে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নিয়েছে। এই কর্মসূচির প্রস্তুতির জন্য বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডা গত ১২ মে দলের সদর দপ্তরে সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বৈঠক করেন।

প্রথম সারির নেতাদের এই প্রচারণা

সংবিত পাত্র, বিনোদ তাওড়ে এবং তরুণ চুঘের মতো প্রথম সারির নেতাদের এই প্রচারণার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে (bjp)। দলটি দেশব্যাপী সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছতে সামাজিক মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের (ইনফ্লুয়েন্সার) মাধ্যমে প্রচারণার বার্তাকে ডিজিটালভাবে প্রসারিত করবে।

বিরাট কোহলির গ্যারেজে থাকা ৫ বিলাসবহুল গাড়ি, জানুন বিস্তারিত

অপারেশন সিঁদুর

অপারেশন সিঁদুর গত ৭ মে শুরু হয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিল সংঘটিত একটি মারাত্মক জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে। এই হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। ভারতীয় বাহিনী দ্রুত এবং দৃঢ় প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়ে পাকিস্তানে সীমান্তের ওপারে ১০০-এর বেশি সন্ত্রাসীকে নিশ্চিহ্ন করে। পাকিস্তান এর পাল্টা আক্রমণ চালালেও, ভারত জোরালো প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, যার ফলে একটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয় এবং ভারত তার প্রতিরক্ষা অবস্থানকে পুনরায় শক্তিশালী করে।

Advertisements

তিরঙ্গা যাত্রার মাধ্যমে বিজেপি (bjp) নাগরিকদের মনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান এবং দেশে গভীর জাতীয়তাবাদ ও ঐক্যের বোধ জাগানোর লক্ষ্য নিয়েছে। দিল্লি বিজেপি সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে “সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।” তিনি আরও জানান, গোটা জাতি প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে।

পার্টি সূত্রে জানা গেছে, এই যাত্রায় বড় বড় জনসমাবেশ, বাইক র‍্যালি, পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যকে তুলে ধরবে। বিজেপি মনে করে, এই যাত্রা নাগরিক এবং সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে গভীর সংযোগ স্থাপন করবে এবং মোদী সরকারের দৃঢ় নেতৃত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার বার্তাকে আরও শক্তিশালী করবে।

২০২২ সালে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’

এই যাত্রা বিজেপির (bjp) প্রথম তিরঙ্গা-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ নয়। ২০২২ সালে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর অধীনে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ প্রচারণা শুরু হয়েছিল, যা স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীতে জনগণকে তিরঙ্গা পতাকা ঘরে ঘরে উত্তোলনের জন্য উৎসাহিত করেছিল। অপারেশন সিঁদুরের পর এই তিরঙ্গা যাত্রা হলো প্রথম সামরিক অভিযান-সংশ্লিষ্ট প্রচারণা, যা বিজেপি একটি জাতীয় গর্বের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করছে।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া 

সামাজিক মাধ্যমে এই যাত্রা ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। ‘এক্স’-এ বিজেপির অফিসিয়াল হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে, “অপারেশন সিঁদুর কোনও সাধারণ সামরিক অভিযান নয়। এটি ভারতের নীতি, নিয়ত এবং নির্ণায়ক ক্ষমতার ত্রিবেণী।” তবে, কিছু বিরোধী দল এবং নেটিজেন অভিযোগ করেছেন, বিজেপি এই সামরিক সাফল্যকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, তিরঙ্গা যাত্রা বিজেপির (bjp) জন্য জাতীয় নিরাপত্তা এবং দেশপ্রেমের বিষয়ে জনগণের সমর্থন জোরদার করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এটি পাকিস্তান থেকে আসা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং দলের সমর্থকদের উদ্বেগ দূর করারও লক্ষ্য রাখে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে এই যাত্রা ভারতের শর্তে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই যাত্রা ভারতের জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা ও সমর্থনকে আরও গভীর করবে। আগামী দিনে এই প্রচারণা কীভাবে জনমনে প্রভাব ফেলে, তা ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক গতিশীলতার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।